টিভির প্যাকেটটি নিয়ে লিফটেই ছেলের সাথে দেখা হয়ে গেল। ছেলেকে সংক্ষেপে বলেও ফেলল তার টিভি কেনার উদ্দেশ্য। ছেলে খুশি সামলাতে পারছে না। বলল, এত দিনে মা আমার একটা নারীবাদী কাজ করল।
মাটি কপট রাগ করে উত্তর দেয়, ছয় ইঞ্চি টিভির সাথে নারীবাদের কি সম্পর্ক?
আছে আছে! এটা দেখেই বাবার মন্তব্য শুনে শক্ত থেকো।
যা ইচ্ছে বলুক। টিভিটি এখন খুলবে না। ফ্রেস হয়ে খাওয়া দাওয়া সেরে নেই।
আচ্ছা, তোমার যেভাবে ইচ্ছে। আমি কি লাগানোতে সহায়তা করতে পারি?
পার। পার। তবে গিয়েই হুলস্থূল করবে না। এখন আমার দেখার কোন প্রোগ্রাম নেই। রাতে খবর দেখব।

মাটির একটি ছয় ইঞ্চি টেলিভিশন প্রয়োজন ছিল। বিজয় সরণীর শো রুমগুলোতে কোন ছয় ইঞ্চি টেলিভিশন নেই। আজকে পায়নি। এপার্টমেন্টের দুই রুমে স্যাটেলাইটের ক্যাবল লাইন দেওয়া আছে। তার একটু লম্বা কিনবে। ছোট টিভি তার লাগিয়ে যেখানে ইচ্ছে বসিয়ে নেবে।

মার্কেটে বিভিন্ন দোকানে ছয় ইঞ্চি টিভি দেখা যায়। বিশেষ করে খেলা দেখে। এ খেলা দেখার কারণেই তো মাটিরও আরেকটা টিভি কেনার প্রয়োজনীয়তা। ঘরে বাইরে খেলা। খবরটা পর্যন্ত দেখার জো নেই। খবর দেখতে চাইলেই স্বামীটির উত্তর, খেলার এখন চরম মুহূর্ত। কী খবর দেখব? দুই মহিলার ব্যক্তিগত রেষারেষির খবর?
স্বামীর বাক্য শেষ না হতেই মাটির বলে, সাথে পুরুষ মোসাহেবদেরও তো কম দেখায় না? তোমাদের দুর্ভাগ্য খালেদা আর হাসিনা ছাড়া তোমাদের কোন নেতা নেই। নাকি সৌভাগ্য?

বিজয় সরণীতে না পেয়ে আজকে আর স্টেডিয়াম মার্কেটে যাবে না বলেই ভেবেছিল। তখন বিকেল সাড়ে ছয়টা। এ যানজট পেরিয়ে যেতে যেতে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাবে। তাছাড়া আটটার আগে পৌঁছলেও একটু ঘুরতে হবে। খুঁজতে হবে। যাচাই করতে হবে। এসব ইলেক্ট্রনিক জিনিস একা কখনো কিনেনি মাটি। স্বামীই কিনে। মাটি সাথে থাকে। তখন শোরুম থেকে কিনে। স্টেডিয়াম মার্কেটে খুব একটা যাওয়া পড়ে না। আবারও স্বামীর প্রসঙ্গটি মাথায় আসাতে মাটি একটা সিএনজিতে উঠে পড়ে। টেলিভিশন কিনেই বাসায় ফিরবে। সি এনজি সাধারণত এত সহজে পায় না। এটি যাত্রাবাড়ির দিকের। ট্রিপ নিয়ে এদিকে এসেছিল। একবারেই রাজি হয়ে গেল।

মাটি বরাবরই মাটির মত সর্বংসহা। সাধারণত স্বামী পুত্র পরিবারের সুখদুঃখকে গুরুত্বের সাথে বিবাচনা করে। না —বাক্যটি ঠিক হল না। স্বামী পুত্র পরিবারের সাথে কন্যাটির কথাও বলতে হবে। প্রচলিত প্রবাদে কন্যার অনুপস্থিতি মাটি চর্চা করে না। মূলত স্বামী আর ছেলেমেয়ে নিয়েই তার ঢাকার সংসার, কিন্তু পরিবার বলতে গ্রামের শ্বশুর শাশুড়ি, চাকরিসূত্রে কুমিল্লায় থাকা দেবরও একই খানার না হলেও একই পরিবারভুক্ত। পরিবারের এ সংজ্ঞা মাটির শ্বশুর বাড়ির চর্চায় বিরাজমান। মাটিও তা মেনে নিয়েছে। স্বামীকে কোন জমি কিনতে হলে শ্বশুরের নামেই কিনতে হয়। স্বামীটির রোজগার মানে তার পরিবারের রোজগার। এ নিয়ে মাটির কোন আপত্তি বা অনুযোগ নেই।

বাসার টিভি, ফ্রিজ বা ফার্ণিচার কেনার সময় কার নামে কিনল তা নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই। ভাউচার একজনের নামে হলেই হল। তবে মাটির নামেই হয়। এ সব অস্থাবর জিনিসপত্রের মালিকানা নিয়ে স্বামীর কোন আপত্তি নেই। মাটিরও আগ্রহ নেই। বরং ওয়ারেন্টি কার্ডে মাটির নাম থাকলে ঝামেলা। পরে খোঁটা দেয়, দায় চাপিয়ে দেয়। তোমার জিনিস তুমি সাথে না থাকলে কীভাবে যোগাযোগ করি?

মাটি তার চাকরির টাকা ঢাকার সংসারে লাগালেও স্বামীর পরিবারের স্থাবর সম্পত্তি কিনতে এখনও দেয়নি। দিবেও না বলেই সে মনস্থির করে রেখেছে। বিষয়টি স্বামীকে জানিয়েও রেখেছে। তাই ঢাকার ফ্ল্যাটটি নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন করেছে। তবে অন্যান্য দায়িত্ব পালন করে। শ্বশুর শাশুড়ির কাপড়, চিকিৎসা, পূজায় ননদদের উপহার সব সময়ই দেয়। দেবরের বিয়েতে আংশিক খরচ দিতেও কার্পণ্য করেনি। অবশ্য ফিক্সড ডিপোজিট মাটির নিজের নামেই করে।

তবে তা নিয়ে স্বামী অখুশি নয়। সে খুব ভাল করেই জানে মাটির টাকা মানেই তার পূঁজি। মূলধন। স্ত্রীধনে তো স্বামীর অধিকার আছেই। স্বামীর বোধে যে অভাব আছে তা স্বামীর ভাবনায় কাজ করে না। তার বোধ ও ভাবনা বড় গতানুগতিক। পিপিলিকার মত সঞ্চয়ী। নিজেই মাঝে মাঝে ছড়াটি আওড়ায় —-পিপিলিকা পিপিলিকা/ দলবল ছাড়ি একা / কোথা যাও বলে যাও শুনি।/ শীতের সঞ্চয় চাই/ খাদ্য খুঁজিতেছি তাই/ দুই পায়ে পিলপিল করি/ সাহিত্য চর্চা বলতেও ঐ পর্যন্তই।

স্বামীটি বরাবরই সব কিছু নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভালবাসে। তবে এটা যে নিয়ন্ত্রণ তা তার বোধে কাজ করে না। মনে করে এটাই সংসারের স্বাভাবিক নিয়ম। আর মাটি সব বুঝে শুনেও ঝামেলা এড়াতে নিয়ন্ত্রণকে নিয়তি হিসেবে না মানলেও নিয়ম রক্ষার্থে মেনে নেয়।
কিন্তু গত রাত থেকে এ মাটির ভিতও কেঁপে উঠেছে। ভেতরে ভেতরে ভূমিকম্প হচ্ছে। ধ্বস নামছে। রাতে বি বি সি সংলাপের পর থেকে।

স্বামীটি খেতে বসে প্রায়শঃই ঘ্যান ঘ্যান করে। চার পদের বেশি হলেই হিসাব রক্ষক হয়ে যায়। আগে তিন পদের বেশি হলেই করত। মাটি বুঝাতে সক্ষম হয়েছে যে এটা তোমার মেসের খাবার নয়। একটা শাক বা ভাজি, একটা মাছ বা মাংস আর সদর ঘাটের জল দিয়ে একটা মসুর ডাল। বেশ। সারাবছর ধরেই চলে এই পদ। পৃথিবীতে মসুর ডাল ছাড়াও যে আরও মুগ, মাসকলাই, মটর বা বুটের ডাল আছে তা মেসের জীবনে চেখে দেখতে পারোনি বলে এখনও কি এভাবেই চলবে? একটা শাক বা ভাজির সাথে আরেকটা ভর্তা হলে খরচ কত বাড়ে? আর বাড়লেই কি খাব না?

স্বামীটির জটপট উত্তর, খাও। খেয়ে তো মুটকি হচ্ছো। সে খেয়াল আছে?

মাটি নিজেরটা নিজে খায়। মানে এ সংসারে তার অবদান আছে। কাজেই হালকাভাবেই বিষয়টি নিয়ে বলে, মুটকি আর মটকি যা ই বলো তা খেলেও যা না খেলেও তা। আর না খেলে টায়ার্ড লাগে। আর প্রত্যেকদিন একটা মাছের ঝোল বা মাংস কেন? সাথে ছুটির দিন বাড়তি মাছ ভাজি খাওয়া কি খুব বেশি কিছু?

বাসা নেওয়ার পর স্বামীটি প্রথম প্রথম সব খরচের দাম লিখে রাখত। আলু, আটা, আখের গুড়, তেল, তেজপাতা, তেঁতুল, মাছ, মরিচ, মুগ। মাস শেষে সর্বমোট খরচ কত হল এ নিয়ে বিরোধীদলের রাজনৈতিক নেতাদের চেয়েও সাংসারিক বাজেট নিয়ে সমালোচনা চলত।

মাটি বুদ্ধি বাতলে দিত। একটা অংকের টাকা নিয়ে ওখান থেকে খরচ কর। যা থাকবে তা বিয়োগ করেই বুঝতে পারবে কত খরচ হল। প্রতিদিনের ক্যাশবই লেখার বিড়ম্বনা শুনতে হবে না।

কোন আইটেমে কত খরচ হল তা জানব কেমন করে? সয়াবিন তেল আরও কম খরচ করতে হবে। মাস শেষ না হতেই পাঁচ লিটার। আমার গ্যাস্ট্রিক বানিয়ে ফেললে। গ্যাস্ট্রিক, কৃপণতা, বদমেজাজের যুক্তি একাকার।

মাটি গ্যাস্ট্রিকর ধারে কাছে না গিয়ে উত্তর দেয়, রোজার মাস। চারদিকে ইফতার খাওয়ার ছড়াছড়ি। অফিসেও ইফতারের গল্প। বাইরের খাবার তো আবার খাও না। ছেলেমেয়েও ইফতার খেতে পছন্দ করে। রোজই তো প্রিয় একটা না একটা কিছু করেছি। কাজেই তেল লেগেছে।

স্বামীটি আর কথা বাড়ায় না। নিজেও রোজার মাসে ভাত খেয়ে অফিসে যায়। খাবার সাথে নেয় না। এসেই ইফতার খায়। মুড়ির সাথে ঘরে করা তেলে ভাজা একটা কিছু।
তবে রোজার মাস ছাড়াও আত্মীয় স্বজন আসলে সকালে লুচি বা বিকেলে জল খাবারের কোন পদ করতে গেলেই আর পাঁচ লিটারে মাস শেষ হয় না।

একটা সময়ে দৈনিক ক্যাশ বই লেখা বাদ দেয়। এমন খটোমটোর মধ্যেই কেটেছে মাটির দাম্পত্য জীবনের আটাশটি বছর। এখন আর ভাল লাগে না। সারাদিন কর্মব্যস্ততায় কাটে। বাসায় ফিরে টিভি দেখার নেশা না থাকলেও টিভির সামনে বসে রিমোট দিয়ে একটু সার্চ করে কোন পছন্দের কিছু আছে কিনা। থাকলে দেখে, না থাকলে বই নিয়ে বসে। বিশেষ করে টক শো তার পছন্দ যদি তা হয় কোন নারী ইস্যু নিয়ে। কিন্তু সাধারণত রিমোটটি তার কন্ট্রোলে থাকে না। স্বামী খেলা দেখে। আজ টুয়েন্টি টুয়েন্টি তো কাল ওয়ান ডে। ভেন্যুর ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে টেষ্ট ম্যাচও রাতে হয়। সূচি মুখস্থ। ক্রিকেট সরাসরি না হলে পুরানো খেলা। সাথে ফুটবল। হকি। তা না হলে ডিসকভারি বা ন্যাশনাল জিওগ্রাফি। বাসায় থাকা মানেই টিভির সামনে। বাবার কাছ থেকে ফাঁক পেলে না ছেলেমেয়ের পছন্দ হিন্দি চ্যানেল। মাটির সুযোগ কই? তার পছন্দ বলার কোন সুযোগ নেই।

হঠাৎ করেই মাটির এক বন্ধু ফোন করে জানাল বিবিসি সংলাপে সে বক্তা হিসেবে থাকছে। সরাসরি সম্প্রচার। প্রোগামের পরপরই মাটিকে আবার ফোন করবে ফিডব্যাক নেওয়ার জন্য।
এদিকে স্বামীটি কী এক ক্রিকেট খেলা নিয়ে ব্যস্ত। কয়েকবার বলার পরও রিমোটটি ছাড়ছে না। ড্রয়িং রুমে বসে বসেই রাতের খাবার খেল, যা মাটির খুবই অপছন্দ। প্রায়শঃই সোফার কাপড়ে খাবার ফেলে দাগ লাগায়। বন্ধুটিকে কি বলা সঙ্গত হবে যে স্বামীটি তাকে টিভি দেখতে দেয়নি!

এখন ইলেক্টিসিটি চলে গেলেও একটা অজুহাত পেত। তা ও যাচ্ছে না। একে তো অনুষ্ঠান দেখতে পারছে না তার উপর সোফায় বসে রাতের খাবার খাওয়া। এ সবে মাটির মেজাজ তখন তিরিক্ষে।
মেয়ে পরীক্ষার পড়া নিয়ে ব্যস্ত। ছেলে বাসায় নেই। থাকলে চুপ করে বাবার পাশে বসে রিমোটি হাতে নিয়ে চ্যানেল পাল্টিয়ে দেখা শুরু করত। মেয়েটি তা করে না। হয়তো পারেও না। বাবার পছন্দের গুরুত্ব দেয়।

রিমোট কন্ট্রোলের ব্যাটারি প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। রিমোটটি ভালভাবে কাজ করছে না। বিজ্ঞাপন আসলে চ্যানেল আই এর বি বি সি সংলাপ দিচ্ছে। আর মাটিকে ডাকছে দেখতে আসতে। প্রতিবারই চ্যানেল বদলানোর সময় রিমোটে ঠাস ঠাস করে থাপ্পর লাগাতে হচ্ছে। এতে মাটি আরও বিরক্ত হচ্ছে।
ব্যাটারি কিনে আনতে প্রায়শঃই দেরি হয়। মনে থাকে না। সময় হয়নি ইত্যাদি। একসাথে বাজারে গিয়ে ব্যাটারি কিনতে মনে না থাকলে অনুযোগটা আসে মাটির বিরুদ্ধে। আজও তাই করল, সব কিছুর তালিকা লিখে বাজারে যাও। সে তালিকায় ব্যাটারি লিখা হয় না কেন ?

মাটির সাফ উত্তর, যার যা দরকার সেভাবেই যার যার তালিকা তৈরি করে গেলেই হয়। আমার তো শাক, সবজি, সুজি, সাবান, সুঁই, সূতা লিখতেই তালিকা ভরে যায়। তাও তো আজ তেলেপোকার চক আনা হয়নি। মধ্যরাতে তো সারা ঘরে মনে হয় তেলেপোকার ফুটবল খেলা।

স্বামীটিও তেরছা কাটে, ফুটবল খেলা না বলে বল তেলেপোকাদের বিক্ষোভ অবস্থান।
এর পরে কেউই আর কথা বাড়ায় না। খাওয়া সেরে এক ঘরে শোয়।

দাম্পত্য সম্পর্ক নিয়ে মাটির বোঝাপড়া চমৎকার। সে মনে করে খুশকি হলে অথবা চুলে কমদামী কলপ ব্যবহারের ফলে মাথা আঁচড়ালে চিরুণীর দাঁতে ময়লা জমে। সে ময়লা কাঠি দিয়ে বা সেপ্টিপিনের আগা দিয়ে পরিষ্কার করে তা দিয়ে আবার চুল পরিপাটি করা হয়। এমনিভাবে নৈমিত্তিক চাল চলনে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে চিরুণীটির মত অনিবার্য কিছু ময়লা পরিষ্কার করেই নিতে হয়। এ দাম্পত্য সম্পর্কেও মাঝে মাঝে খুঁচিয়ে খাঁচিয়ে সামাজিক পরিপাট্যের জন্য ব্যবহার করতে হয়। এ অমোঘ সত্যকে মেনে নিয়েই বিয়ের গর্তে ঢুকতে হবে। মাটিও ঢুকেছে।

কাজেই মাঝে মাঝে দাম্পত্য সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে সে হতাশ নয়। হা পিত্যেশ নেই। ক্ষোভও নেই। আহামরি ধরনের কোন পরিকল্পনাও নেই। জীবন যাপন চলছে এবং চলতেই থাকবে।

চাঁদ উঠা আর সূর্য ডোবার প্রাকৃতিক নিয়মের মত চলতেই আছে। জৈবিক জীবনের জন্য যে কোন একজন পুরুষ প্রয়োজন। কাজেই এ টানাপোড়েনকে কেন্দ্র করে ছাড়াছাড়ি পর্যায়ে যাওয়া বোকামি। স্বামী নামক এক ব্যক্তিকে বর্জন করা যাবে। ডিভোর্স দেওয়া যাবে। কিন্তু অন্য ব্যক্তি স্বামী হলেও ব্র্যান্ড তো একই। আচরণের গুণগত মান একই। স্বামী নামক মানুষটির বাইরের আদল বদলাবে, ঘর বদলানো হবে। বিছানার চাদর বদলাবে কিন্তু স্বামীর ভেতরের স্বামীত্ব বদলাবে না। কাজেই ব্যক্তি বদলিয়ে লাভ নেই। এ মন্ত্রটি মাটি নিজে মানে ও অন্য অনেককে মানতে বলে।

কিন্তু আজ নিজেকে মানাতে পারছে না কিছুতেই। রোজদিন এত লোডশেডিং,অথচ আজ একবারও ইলেক্ট্রিসিটি গেল না। বন্ধুকে কি উত্তর দিবে?
মিথ্যা বলায় মাটি অভ্যস্ত নয়। ফোন আসতেই বন্ধুকে বলে দিয়েছে, দুঃখিত, টিভির চ্যানেল ভাগে পাইনি। রিমোট কন্ট্রোল আমার নিয়ন্ত্রণে ছিল না। তবে কাল থেকে হবে।

তখনই সিদ্ধান্ত নেয় ছয় ইঞ্চি একটি টেলিভিশন কিনে ফেলার। আর আজ তা কিনেই অফিস থেকে ফিরল।
গৃহকর্মী সঞ্জু ঢাকায় এসে প্রথম প্রথম রিমোট কন্ট্রোলের কারিসমা দেখে এতই অবাক হয়েছিল যে রিমোটের নাম দিয়েছে ভগবান। আজ সঞ্জুর ভগবানের মালিক মাটি।

খাওয়ার পর যথারীতি সব গুছানোর পর টিভি খুলে ফিট করার সময় স্বামী অবাক। মন্তব্য করল, মেয়েলোকের টাকা এভাবেই খরচ হয়। এক ঘরে দুই টিভি।
মাটিও তাৎক্ষণিক উত্তর দেয়, হ্যাঁ, নারীরা এভাবেই সংসারে শান্তি বজায় রাখে।