লেখকঃ মনওয়ার হোসেন
১
আপাতদৃষ্টিতে আমাদের বোঝার তেমন কোন উপায় নাই জীবন সিমুলেশন কিনা। ইনসেপশনে জীবনের সিমুলেশন নিয়ে কাহিনী দেখলাম, যদিও স্বপ্নজগৎ নিয়ে। এদিকে আয়ান ব্যাংকসের ‘সারফেস ডিটেইল’ সিমুলেশনের ভিতরে সিমুলেশনের ভিতরে সিমুলেশন নিয়েও কথা আসছে।
জীবন যদি সিমুলেশন হয়ই, আপনি কি করবেন? আজকে একজনকে এ কথা জিজ্ঞেস করেছিলাম। উনি বললেন, উনি চেষ্টা করবেন সচেতন হয়েই ‘রবোটগুলিকে’ মারতে।
আমি কি করবো? প্রথমে হয়তো একটু শ্রাগমতন করবো। তারপর বোঝার চেষ্টা করবো কোন আংকেল কেন আমাদের এমনভাবে খেলাচ্ছেন। তারপর বলবো ভুলায় দিতে। 😉 আর কি?
২
এখনকার ধারণার কথা যদি বলি, একেবারে মৌলিক পর্যায়ে জীবন আমার কাছে অর্থবহ মনে হয় না।
কেউ কেউ বলেন, জীবনে একটা লুকানো অর্থ আছে। অথবা, অর্থটা অনেক বেশি জ্ঞানের ব্যাপার। আমাদের সে জ্ঞান নাই। হয়তো একসময় আমরা বিবর্তনের একটা পর্যায়ে গিয়ে সেই জিনিসটা বুঝবো।
হতে পারে। ফেলে দিচ্ছি না। কিন্তু সমস্যা একটাই: সিমুলেশনই হোক, বা অধিক জ্ঞানই হোক, এটা তো এখনকার জীবনে কোন পরিবর্তন আনছে না।
আমি যে জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানি না, সেটা তো একটা ফ্যাক্ট। আমার জ্ঞানবুদ্ধি এবং এ পর্যন্ত অর্জিত সীমিত পর্যবেক্ষণ এবং দুনিয়াদারী বলে যে আমরা এমন কোন গূঢ় কারণে বেঁচে থাকি তা না। মৃত্যু এক নাম্বারে বেশ কষ্টকর, তাছাড়া অনেক অনিশ্চয়তার ব্যাপার। তারচে’ আসছি যখন, বাইচ্যা লই ধরণের মানসিকতাই বেঁচে থাকার জন্য অনেকের কারণ। একটু বেশি শিক্ষিত লোকেরা জিনিসটাকে নানাভাবে এবং সুন্দরভাবে প্রকাশ করে। ‘লাইফ ইজ হোয়াট হ্যাপেনস হোয়েন ইউ আর টু বিজি মেকিং প্ল্যানস’ ইত্যাদি। লাইফ ইজ এ সেট অফ বায়োকেমিক্যাল রিঅ্যাকশনস – এটা মোটামুটি মনে হয়। সিট অফ দ্য সোল নিয়ে জুকাভ থেকে কুহন নানাধরণের allusion দিয়ে গেছেন; এক বড়ভাইকে বেশ শ্রদ্ধা করি, ওনার নিজেরও এই ব্যাপারে কিছু হাইপোথিসিস আছে, কিন্তু, যা বললাম, ‘বর্তমান জ্ঞানের ভিত্তিতে’ জীবন অনেককোষের নানা জাতের অন্তঃক্রিয়া ছাড়া আমরা আর কি?! 🙂
৩
আমার চারপাশের বেশিরভাগ লোকের যে জীবনরে বেশ ভাল লাগে, এইটা নিয়ে আসলে তেমন হিংসা করে লাভ নাই। বিবর্তনের উদ্দেশ্যই সেটা (যদিও বিবর্তনকে মাঝে-মধ্যে আমরা আবার একটু বেশি পাত্তা দিয়ে ফেলি, তাও, ‘সাধারণ মানুষ’-এর জন্য বেশিরভাগ বিবর্তনভিত্তিক ইমপালস দমন করাটা কঠিন, এবং মানুষ পারলে কঠিন কাজ করে না আর কি। 🙂 )
সমস্যা একটাই, যারা জীবনকে, বা বেঁচে থাকাকে খুব প্রচন্ডভাবে ভালবাসে, তাদের মধ্যে আবার নিরপেক্ষভাবে এই ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াকে পর্যবেক্ষণের প্রবনতা তেমন দেখি না। পুলকিত হই সেরকম মানুষ পেলে, যারা এইরকম প্যাসিভ পর্যবেক্ষণটাও করতে পারে, আবার জীবনকে সেভাবে উপভোগও করতে পারে। যদিও গায়ের জোরে জীবনকে উপভোগ করাটা আমার কাছে আপত্তিকর মনে হয়; আবার, একটু চেখে না দেখলেও তো মুশকিল।
একটু বেশি চিন্তাশীল লোকদের সমস্যা মনে হয় অন্য। চরম নায়ালিজমের (এইটা আমি মনে মনে উচ্চারণ করি নিহিলিজম; কিন্তু উচ্চারণ বলে নায়ালিজম?!) ধাক্কায় জীবনকে উপভোগ তারা সেকেন্ডহ্যান্ডে করে। অনেকক্ষেত্রেই। আসলে এই দুই দলের মাঝের ওভারল্যাপ এলাকাটাই বেশি ইন্টারেস্টিং। তবে সবাইকে সেখানে পড়তে হবে এমন কোন কথাও নেই।
৪
আমার নিজের মোটামুটি কড়া ডোসেজে নায়ালিজম আছে। এটা ইন্টারের পরে হইসে; এর আগ পর্যন্ত এসব বুঝার জ্ঞানবুদ্ধি/রসদ ছিল না। কি হইসে না করলে? শুনলাম না এই কথাটা। পড়লাম না এই জিনিসটা। দেখিই না কি হয়। স্বভাবগত আমি বেশ অলস (বা যাকে বলে লেথার্জিক) এবং ফাঁকিবাজও বটে। এখানেও একটা সেল্ফ-ফুলফিলিং প্রফেসির প্রবনতা কি দেখা যায়? 🙂 বই পড়তে বেশি হাত-পা নাড়াতে হয় না, গেম খেলতেও, বা মুভি দেখতেও। এখানে সমস্যা হল আমি হাঁটতে বা সাইক্লিং করতে বা হাইকিং করতেও (সুযোগ পেলে আরকি) বেশ পছন্দ করি। তো আমার এই স্বভাব-আলস্য কোত্থেকে আসলো? ‘কি হবে করে’ এই প্রশ্ন থেকে?
এইখানে নিজের সাসপেনশন অফ ডিসবিলিফ-এর প্রশ্নটাও চলে আসে। একটা বয়সে গিয়ে আমার সমাজের প্রচলিত ধর্মবিশ্বাস আমার কাছে ঠিক অর্থবহ মনে হয়নি। হলে খারাপ তো হতোই না, প্রতিটা ব্যক্তির কাছে জিনিসটা আলাদাভাবে অর্থবহ হয়, সুতরাং ওভাবে কাউকে টিটকারি মারতেও চাই না। এগনস্টিক হিসেবে আমি মোটামুটি একটা সাসপেন্ডেড ধরণের অবস্থাতে জীবনাতিবাহন করি, ‘পাস্ট কেয়ারিং’ ধরনের। আমি জীবনে এখনো পর্যন্ত তেমন বিপ্লবী কিছু করিও নাই; ‘ভাল কিছু একটা করতে হবে যাতে মরলে আমার নাম টিকে থাকে’ ধরণের জিনিস আমার মত পাবলিককে দিয়ে কি হবে? ‘স্বপ্ন’ সম্পর্কে আমার ইল্যুশন বেশ আগেই চলে গেছে, তাছাড়া, ছোটবেলার স্বপ্ন আঁকড়ে ধরে থাকা সম্পর্কে কিছু বাস্তবসম্মত শিক্ষা ইতোমধ্যেও পেয়েছি, তাছাড়া ওটা আঁকড়ে ধরে থাকাও যে এক ধরণের ইনসিকিউরিটি না তাও তো না। আবার ওটা বাস্তবায়নের কিকটাও আছে।
থোরু, বা ভাল উদাহরণ ম্যাকক্যান্ডলেসের মত সব ছেড়ে চলে যাওয়ার মধ্যে তেমন কোন সমাধান দেখি না। সেখানেও আবার জীবনরসে অনেক আসক্ত হওয়া লাগে। এদিকে নিজে জীবনরসে আসক্ত একেবারে না তাও বলতে পারি না। 🙂
৫
এইটাই পয়েন্ট। ম্যাক্রোভাবনা যদি বাদ দেই, ক্ষুদ্রায়তনে দেখা যাবে গড়ে আমাদের প্রত্যেকেরই কিছু জৈবিক অনুঘটক ধরনের আছে। ওগুলিতে সুড়সুড়ি দিলে বেশ অকুপায়েড ভাবে জীবনটা কাটিয়ে দেয়া যায়। এ কারণেই ‘আরে পোলারে বিয়া দাও’ ধরনের কাজকারবার উপকারি – পাশে বাচ্চা কানতেসে, আপনি এই আর্টিকেল লিখবেন? হেহ হেহ! এটাও আবার এক ধরনের সিস্টেমিক, যান্ত্রিক সমাধানবিশেষ। কিন্তু খুবই কার্যকর। এভাবে কঠিন কোন কাজ করা, লেখাপড়া করা, ঘুরে বেড়ানো, সবই কার্যকর। টাইম পাস। তারপর মৃত্যু। জীবন হল বেশিরভাগ সময় নিজেকে এভাবে ঠকায় অকুপায়েড রাখা আরকি।
নাইলে আর কেমনে কি? আমরা সবাই জানি আমরা মারা যাচ্ছি, তাই না? আমরা না মরলেও পৃথিবী মরবে। মহাবিশ্বই মরবে। আগে হোক, পরে হোক। এটা তো আমরা জানি। নিজেদের এই মৃত্যুর কাহিনী জেনেও আমরা বেশ আনন্দের সাথে জীবন কাটিয়ে যাই, সেটা প্রাকৃতিক সৃষ্টি হিসেবে আমার বিবর্তনগত জন্মাধিকার। আবার আমাদের সীমাবদ্ধতার কারণও বটে। কিন্তু প্রকৃতির এই ফাঁদে খুশিমনে পা দিতেও আমাদের আপত্তি নাই; দুষিই বা কেমনে? যদিও মাঝে মধ্যে জিনিসটা বিপদজনক, বিরক্তিকর এবং কাম্য না।
সভ্যতা হিসেবে আমরা আস্তে আস্তে আদি-বিবর্তনীয় ইমপালসগুলো বেশি করে দমন করছি, নতুন বিবর্তনের ধারাও সৃষ্টি করছি। এখানে আমাদের এবং বিবর্তনীয় সময়ের পার্থক্য খুব বেশি হওয়াও যারা এ নতুন পথে চলছেন তাদের কষ্টটা বেশি। কিন্তু অপ্ট-আউটের তেমন সুযোগও তাদের নেই, সেখানে আবার প্রান্তিক কষ্ট আরো বেশি।
সুতরাং এই ঘরানার লোকজন হয়তো তাদের শক্তিশালী বিশ্লেষণ ক্ষমতা নিয়োগ করে বিবর্তনীয় কাম্য ধারাগুলোকেই অপটিমাইজডভাবে উপভোগ করতে পারেন। আর কি-ই বা করার আছে? আত্মহত্যা খুব একটা আকর্ষণীয় পছন্দ না, আবার (তাদের কাছে) মাইন্ডলেসভাবে বিবর্তনীয় ইমপালসে বেঁচে থাকাও না, যদিও সবখানেই উপযোগের হিসাব আছে। ব্যক্তির পছন্দ, জৈবিক এবং পারিপার্শ্বিক সীমাবদ্ধতার ভিত্তিতে।
সমস্যা যদিও সেখানেও সব সমাধাকৃত হয় না (অপটিমাইজেশনও বোরিং হয়ে যায়, তখন আবার গোলমাল করে হয়তো ফেরৎ আসতে হবে), তবুও, সেটা মন্দের ভাল।
আমি নিহিলিস্ট। কারন সত্যই জীবন অর্থহীন। যে কাজ করি না কেন, এক দিন সব কিছুর মৃত্যু হবেই। আমার সব চিহ্ন মুছে যাবে। প্রানের , মহাবিশ্বের সব চিহ্ন মুছে যাবে। তাই জীবনের উদ্দেশ্য বিজ্ঞানেই খুঁজি আর কোরানেই খুঁজি-দুটিই মিথ্যে আশা।
আর এই জন্যেই স্টিফেন হকিংস যখন লিখলেন দর্শনের মৃত্যু হয়েছে, আমি একমত হয় নি। বিজ্ঞান দিয়ে জীবনের উদ্দেশ্য খোঁজা কোন দিন সম্ভব না। জীবনের সব থেকে বড় প্রশ্নের উত্তর অভিজ্ঞতাবাদ দিয়ে দেওয়া সম্ভব না। তাহলে দর্শনের মৃত্যু হয় কি ভাবে? যদিও এটাও ঠিক, দর্শন দিয়েও এর উত্তর দেওয়া সম্ভব না-তবে সেই জন্যেই দর্শন বেঁচে থাকে। উত্তর খুঁজে পেলে সেটা আর দর্শন শাস্ত্র থাকে না।
আসলে ‘জীবনের অর্থ আছে কি নেই’ এই প্রশ্নটাই অর্থহীন।
আমি অভিজিৎ স্যারের সাথে একমত। আরো লিখুন। ধন্যবাদ।
ছোট একটা লেখার মধ্যে অনেক কিছু বুঝিয়ে ফেলেন। লেখাটা আমার কাছে যথেষ্ঠ অর্থবহ মনে হয়েছে। মনওয়ার হোসেনকে ধন্যবাদ লেখাটা উপহার দেওয়ার জন্য।
আপনাকে মুক্তমনায় স্বাগতম। সচলে আপনার লেখা পড়া হয়েছে মাঝে মাঝে।
আপনি বেশ মজা করে লিখেন, ভাল স্টাইল, মানে আমার ভাল লাগে।
আমার আস্তিক জীবনে কেন জানি বেহেস্তের ধারনা মনটাকে কখনই সুবাতাসে ভরে দেয়নি। বিশেষত অনন্ত জীবনের ধারনাটা ছিল ক্লান্তিকর। তাব্লিগের বড় ভাইরা বলতো আরে ঐ জীবন হবে ক্লান্তি বিহীন। ৭০ হুর তোমাকে ক্লান্ত করতে পারবেনা। আমার মনে হত, সেটাতো তবে আমি না। মুখে যদিও কিছু বলতাম না।
শুনেছি এলভিস প্রিসলি নাকি ৫০ হবার আগেই জীবনের প্রতি ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল। সেখানে অনন্তকাল এই করতে হলে, সত্যি খবর আছে।
কোথায় যেন ম্যাথিউ এর গল্প পড়েছিলাম, ডাকাত ছিল সে, পুলিশের গুলিতে মারা পড়ে। মৃত্যুর পরে ম্যাথিউ এর মনে হয়, সে আসলে আসুস্থ হয়ে পড়ে ছিল। এক শুভ্র কেশী, সৌ্ম্য দর্শণ বৃ্দধ তাকে সেবা করে সারিয়ে তোলে। এরপরে বলে, ম্যাথিউ তোমার কৃ্ত কর্মের জন্য তুমি কি অনুতপ্ত। ম্যাথিউ বলে, মোটেও না। আমি যে কদিন বেঁচে ছিলাম, মহা আনন্দে ছিলাম। বৃ্দধ বলে কেন তুমি এসব করেছ, ম্যাথিউ বলে, ধণ ও ক্ষমতার জন্য। এই সময়ে ম্যাথিউ এর চোখ আটকে গেল, একটা প্রসাদসম বাড়িতে। সে বৃ্দধ কে থামিয়ে বললো আশ্চর্য্য, ঠিক এই রকম একটা বাড়ির মালিক হতে চেয়েছিলাম আমি। বৃদ্ধ বলে, এটি তোমার জন্যই। ম্যাথিউ সেই বাড়িতে গিয়ে দেখে, সেই সব হুর টাইপ নারী, মদ, গাড়ি, অনন্দে তার পাগল হবার অবস্থা। সে ক্যাসিনোতে যায়, প্রতিবারই জেতে। ৬ মাস পরে সে সব হুর বদল করল এক ঘেয়েমী কাটাতে। বছর শেষে তাকে দেখা গেল ইচ্ছা করে জুয়াতে হারতে। পরের বছর তাকে দেখা গেল, সে আর ঘর ছেড়ে বের হচ্ছে না। আরো মাস ৬ পরে দেখা গেল, সে যাকেই সামনে পাচ্ছে মারছে। সে যখন অত্ম-হত্যার কথা ভাবছে তখন একদিন সেই বৃ্দধ এল। ম্যাথিউ দৌড়ে তার কাছে গিয়ে বলল, এ তুমি আমাকে কোথায় রেখে গেলে ? বৃ্দধ বললো, কেন কি হয়েছে? তুমিতো এমনটাই চেয়েছিলে। ম্যাথিউ বললো, আরে এটা কোন জীবন হল, এর চাইতে তুমি আমাকে জাহান্নামে রেখে আস।
বৃ্দধ বললো, ম্যাথিউ এই সেই জাহান্নাম। থাক এখানে অনন্ত কাল।
গল্পটা অনেক টা এরকমই।
আসলে আমার কি মনে হয় জানেন? আমরা সবচেয়ে বেশী উপভোগ করি প্রতিযোগীতা। মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক প্রতিযোগীতার সম্পর্ক।আমরা জীবনের বেশীর ভাগ সময় প্রতিযোগি করে বা দেখে কাটাই। সারাক্ষন টিভিতে আমরা যা দেখি, তা হল প্রতিযোগীতা। খেলা দেখি-প্রতিযোগীতা, নাটক-সিনেমা দেখি নায়ক আ্রর ভিলেনের প্রতিযোগীতা, অথবা নিয়তির সাথে স্বাধীন ইচ্ছার সংগ্রাম। ব্লগে এসে ভাল লেখার সংগ্রাম। কর্ম ক্ষেত্রে, ছাত্র জীবনে প্রতিযোগীতা, রাজনীতি- সেই প্রতিযোগীতা। এর বাইরে আমরা আসলে কিছুই করিনা। বেহেস্ত অর্থহীন কারণ সেখানে প্রতিযোগীতা নেই। থাকলেও তা সাজানো। সেখানে আপনার কিছুই হওয়ার নাই। যা হওয়ার তা হয়ে গেছেন। সবচেয়ে যা খারাপ তা হল, ইচ্ছা করলেও আপনি মৃত্যু বরন করতে পারবেন না। সব কিছু আপনার ইচ্ছা মত ঘটতে থাকবে। খেলায় হারলেও ইচ্ছা করেই আপনাকে সেটা করতে হবে। ফলে আপনার চার পাশের সবাইকে আপনার নির্বোধ মনে হবে। দুনিয়ায় আপনার চাকরদের তবু বিদ্রোহ করার একটা সম্ভাবনা থাকে, ওখানকার চাকরদের সেই ক্ষমতাও নেই। মানে আপনি যখন আবিস্কার করবেন ওরা আর আপনি সয়ং ;পুরোপুরি সম্ভাবনা রহিত, এর চেয়ে হতাশার আর কি হতে পারে?
আমার আরো মনে হয়, জীবন স্বল্প সময়ের, তাই সে সুন্দর। মৃত্যু আছে বলেই বেঁচে থাকাটা অর্থবহ। আর প্রতিযোগীতা আছে বলেই জীবন টান টান।
@আতিক রাঢ়ী,
চমৎকার কথা। :yes: ।
@স্বাধীন,
আপনাকেতো আগেও বলছি………কারা এক রকম চিন্তা করে… 😀
@মনওয়ার হোসেন,
স্বাগতম জানাই। লেখাটা বেশ ভালো লেগেছে।
@আতিক রাঢ়ী,
এই গল্পডাকি বাইবেলের বুক অফ ম্যাথিউর নাকি? কি সমেস্যা, এরা দেহি ২ হাজার বছর আগেই আমার গল্প নকল কইরা ফেলিছে। :-Y :-Y
@সাইফুল ভাই, এমন হাতেনাতে ধরা খাইলেন? থাক ভূল হতেই পারে ১-২ বার,আর নকল কইরেননা 😀 ।
@আতিক রাঢ়ী:
পছন্দ হয়েছে কথাটি :rose:
@রামগড়ুড়ের ছানা,
😥 😥
বিশ্বাস করেন ভাইডু আমি নকল করি নাই। ওঁয়া……।। 😥 😥
@সাইফুল ইসলাম,
ধুর মেয়া, সমেস্যার কিছু নাই। গল্পটা পড়ছিলাম পত্রিকায়। আর কিছু মনে নাই। এক বিষয়ে অসংখ্য গল্প হইতে পারে। উপস্থাপনাই আসল ব্যাপার। আপনের গল্পটাও সুন্দর হইছে, মাথা টাহানি বন্ধ করেন। 😀
@রামগড়ুড়ের ছানা,
আপনার পছন্দের ঐ বাক্যটা মাথার মধ্য অনেক দিন থেকেই খচ খচ করছিল। সুযোগ পেলাম, ঝেড়ে দিলাম………আসলে অত বড় একটা মন্তব্য করলামই
মনে হয় ঐ বাক্যটা বলার জন্য। 🙂
@আতিক রাঢ়ী,
আহ, এই কতাডা হুইন্যা ভাল ঠ্যাকলে। তায় ভাই, আম্মেরে দি মোগো এলাকার লোক মনে অইতে আছে। ঘটনা ঝাতি ঝানতে ছায়। 😀 😀
@সাইফুল ইসলাম,
আমি হামনের নিকট পেরতিবেশি। নানা বাড়িতো হামনেগো এককালে দরজায়। গৌরনদি। দাদা বাড়ি আরেকটু দক্ষিণে। 😀
@আতিক রাঢ়ী,
যদিও প্রতিযোগী একটা মন আমাদের আছে, কারন সেটা বিবর্তন সূত্রে পাওয়া-তবে আমি এই ব্যাপারে একমত না। আমি সহ আরো অনেকেই সৃজনশীল কাজে আনন্দ পায়। সেটাই বেশী ঊপভোগ করে। সৃস্টি বনাম প্রতিযোগিতার আনন্দ-এই দ্বন্দ নিয়ে আমার লেখা একটা উপন্যাস আছে-পড়ে দেখতে পার।
:yes:
Nihilism নিয়ে বিভিন্ন দার্শনিকদের চিন্তা ভাবনাও নিশ্চিন্তে এখানে লিখতে পারো|
সেটা ইন্টারেস্টিং হবে। জীবনবোধের সাথে মিলায়, পার্সোনালাইজ করে হয়তো। 🙂
মুক্তমনায় স্বাগতম। ভালো লাগল লেখাটি,আশা করি আরো লিখবেন।
ছোট লেখার ব্যপারে অভিদার সাথে একমত। কাজের ফাকে চট করে পড়ে ফেলা যায় আবার লেখক যা বলতে চাচ্ছেন তাও বোঝা যায় সহজে।
মুক্তমনায় স্বাগতম মনওয়ার হোসেন ওরফে সিরাত। মাঝে মধ্যে প্রায়ই ভাবি যে, মুক্তমনায় অনেক ভারী ভারী বড় বড় লেখা প্রকাশিত হয়, কিন্তু আসল বক্তব্য হয়তো চাপা পড়ে যায়। এরকম ছোট ছোট কিন্তু চিন্তাশীল লেখা লিখলে নিঃসন্দেহে পাঠকদের কাছে তাড়াতাড়ি পৌঁছানো যায়। আমিও শব্দটা নিহিলিজমই জানতাম। সঠিক উচ্চারণ কি সত্যই নায়ালিজম নাকি?
আর আপনি কি মনওয়ার হোসেন নামেই মুক্তমনায় লিখতে চান, নাকি সিরাত নামে? এই তথ্যটা মডারেটররা যখন ইউজার আইডি তৈরি করবেন তখন কাজে লাগবে।
@অভিজিৎ,আমার তো মনে হয় লেখক ফকফকারেই নাই-ইজম বানিয়ে দিয়েছেন।
আপনারা যেটা চান, শেষ! 🙂
“জেনেও” কেন? মানে শেষের “ও” টি কেন? ওর মধ্যে তো মনে হচ্ছে “জীবন অর্থবহ” এই অনুমান আগেই বিদ্যমান :D। কারণ “জীবন অর্থবহ” এই সিদ্ধান্ত যদি নাই থাকে আমার, তাহলে তার অন্তে আমি বিমর্ষই বা হব কেন, বা জীবনান্তের তথ্য আমার আনন্দ লাভে বাধাই বা হবে কেন?
নিজেদের মৃত্যুর ফ্যাক্টটা জীবনের অর্থবহতা বিষয়ক উপসংহারের জন্য যথেষ্ট মনে হয় না। এখানে পরকাল এবং আগেরকাল বিষয়ক উত্তরও দরকার খুবসম্ভবত। 🙂
মুক্তমনায় স্বাগতম সিরাত 😀 ।
আমার কাছে জীবনের একটিই উদ্দেশ্য যখন যে অবস্থায় থাকি না কেন প্রতিটা মুহুর্তকে উপভোগ করা। এখন সেটা আমার গবেষণার কাজ করেও হতে পারে অথবা শুধু মুভি দেখা বা বই পড়া, বা ব্লগ পড়া, বা তাস খেলা বা ঘুম দেওয়া বা বাচ্চাদের সময় দেওয়া, যে কোন ভাবেই হতে পারে।
হুম! ভাবনায় পড়লেন ও আর সকলকে ফেল্লেন। দেখি আর কেউ কিছু বলে কিনা। তবে ‘আরে পোলারে বিয়া দাও’ উপদেশটা কিন্তু খারাপ না , যদি এখনো বিয়ে বা লিভিং টুগেদার না করে থাকেন।
বিয়ে নিয়ে অভিজিৎদার বিখ্যাত লেখাটা পড়ে ইচ্ছা গেছেগা।
ইচ্ছা আসলে ছিলও না কখনো সেভাবে। ‘বিয়ে’ মনে হয় করবো না, তবে ১০০% ছেড়েও দিতে পারছে না। স্মিটেন হইসি। 😉
মনওয়ার হোসেন কে মুক্ত-মনায় স্বাগতম।
nihilism তো? ইংলিসে বললে একেবারে ফকফকা। 🙂