আমার অপরাধ আমার বয়স আঠারো
– তুহিন তালুকদার

আমার অপরাধ আমার বয়স আঠারো,
তাই আমার মনে কেবল বিদ্রোহ জেগে ওঠে,
সমাজের শত অন্যায় দেখে মন কেঁদে ওঠে।
কিন্তু যারা প্রবীণ, যারা প্রৌঢ়,
সব কিছু দেখেও তারা কেমন স্থির, কেমন প্রতিক্রিয়াহীন!
শুধু আমার মনে যন্ত্রণা, ক্রোধের বহ্নিঃশিখা,
শুধু আমার প্রাণে জেগে ওঠার মন্ত্রণা।

আমার অপরাধ আমার বয়স আঠারো,
তাই কেউ আমায় করে না বিশ্বাস,
বক্ষে অবিরত কান্না আর বেদনার দীর্ঘশ্বাস।
আমার রক্তে বয়ে যায় ক্রোধের বন্যা,
সবকিছুকে ধ্বংস করার প্রবল ইচ্ছা।
আমি অশ্রান্ত, আমি উগ্র, আমি অস্থির,
কারণ, আমার বয়স যে আঠারো।
সমাজের যাবতীয় নিয়ম-কানুন
সব অর্থহীন আমার কাছে।
শ্রেষ্ঠ মোর প্রাণের সংবিধান।
হে সমাজ, হে প্রথা, হে ধর্ম,
আমায় শাস্তি দাও।
আমি যে তোমাদের বিরুদ্ধে দণ্ডায়মান
এক স্পর্ধিত সৈনিক।
হে বিধাতা, তুমি মোর কর প্রতিবিধান।
কিংবা নেভাও আমার প্রাণের অনল।

আমার অপরাধ আমার বয়স আঠারো,
তাই আমি অবাধ্য, বেয়াড়া, লক্ষ্মীছাড়া।
আমি মরুঝড়, আমি সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গ,
আমি কালবৈশাখী, আমি বায়ুসখা,
আমি ধ্বংসের বার্তা, আমি অভিশাপ,
আমি বিপ্লবী, আমি ছন্নছাড়া।

আঠারো? এ তো নষ্ট হওয়ার সময়,
পথভ্রষ্ট হওয়ার সময়,
এ যে অন্তর্দহনের সময়,
এ যে জাগার ও জাগানোর সময়,
এ যে ধ্বংস করার সময়,
আবার সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মেতে উঠার সময়,
দুর্মর প্রাণের আগুনে দগ্ধ হওয়ার সময়,
বহ্নিঃশিখায় জগৎকে পোড়ানোর সময়।

কিন্তু জগতের সব আশীর্বাদ তো
আঠারোই বয়ে আনে।
সংকটে করে তারা তাজা প্রাণ বলিদান।
আঠারোই পরে বিজয়মাল্য।

তবে কেন বয়স আঠারো হওয়া অপরাধ?