মোহাম্মদের কাছে সূরা আসে দুই জায়গাতে। প্রথমত: যখন তিনি মক্কায় ছিলেন তখন যেসব সুরা নাজিল হয় তাদেরকে মাক্কি সুরা বলে। এর পর মদিনাতে হিজরত করার পর সেখানে যে সুরা আসে সেগুলোকে বলে মাদানী সুরা। মুসলমান ভাইরা যদি মনোযোগ সহকারে কোরান পড়েন তাহলে দেখতে পাবেন যে শান্তি বা সহাবস্থানের সামান্য কথাবার্তা যা কোরানে বলা হয়েছে তার সব মাক্কি সুরাতে। হত্যা কর, আক্রমন কর, যুদ্ধ কর এসব কথা বার্তা মাক্কি সুরা গুলোতে ভুলেও উচ্চারন করা হয় নি।অমুসলিমদের প্রতি ঘৃণা, হত্যা, যুদ্ধ, লুঠ তরাজ ইত্যাদি কথাবার্তা সব মাদানী সুরাতে। তার কারনও সুষ্পষ্ট। ৪০ বছর বয়েসে মোহাম্মদ নিজেকে আল্লাহর নবী বলে দাবী করেন। তিনি দাবী করেন তার কাছে আল্লাহ জিব্রাইলের মাধ্যমে বার্তা পাঠাচ্ছেন।তিনি তার এ দাবী যখন কোরাইশদের কাছে প্রকাশ করেন তখন তাকে সবাই পাগল বা উন্মাদ বলে সাব্যাস্ত করে। কোরাইশ সর্দাররা তাকে এসব পাগলামী কথা বার্তা বলতে নিষেধ করে দেন। মোহাম্মদ তাদের কথায় কর্নপাত না করে তার কাজ চালিয়ে যান। এর ফলে কোরাইশ সর্দার সহ সব কোরাইশরা তার শত্রুতে পরিনত হয়, ও তারা মোহাম্মদকে হুশিয়ার করে দেয় বেশী বাড়াবাড়ি করলে তাকে মেরে ফেলাও হতে পারে। যাহোক, মক্কাতে মোহাম্মদের অবস্থা ছিল খুব সংগীন, অনেক চেষ্টা করেও সামান্য কয়জন হত দরিদ্র মানুষ আর দাস দাসী ছাড়া কেউ তার কাছে ইসলাম গ্রহন করে নি। যারা সেমসয় মোহাম্মদের কাছে ইসলাম গ্রহন করেছিল তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মানুষরা হলো – তার প্রথম বিবি ও আশ্রয়দাতা খাদিজা ও আবু বক্কর।অন্যদিকে নিজেকে নবী দাবী করায় মক্কায় বসবাসরত ইহুদী ও খৃষ্টানদেরও ধর্র্মীয় অনুভুতিতে তিনি আঘাত করা শুরু করেছিলেন, ফলে তারাও তার শত্রুতে পরিনত হয়ে পড়েছিল। সুতরাং চারিদিকে শত্রু পরিবেষ্টিত অবস্থায় তার পক্ষে শান্তির বানী ছড়ানো ছাড়া উপায় ছিল না। যা যে কোন গোষ্ঠিপতি করে থাকে। দুর্বল অবস্থায় কোন গোষ্ঠিপতি বা রাজা বিরোধী দের ব্যপারে হুংকার ছাড়ে না।তাই তার কন্ঠে কোরানের বানীর নামে ঝড়ে পড়ে –

দ্বীনের ব্যপারে জবর দস্তি বা বাধ্যবাধকতা নাই। মক্কায় অবতীর্ন, ০২: ২৫৬

তাই তার কন্ঠে ইহুদী ও খৃষ্টানদের প্রতি মহা শান্তির বানী ঝরে পড়ে-

তোমরা কিতাবধারীদের ( ইহুদি ও খৃষ্টান ) সাথে তর্ক বিতর্ক করবে না, কিন্তু উত্তম পন্থায়, তবে তাদের সাথে নয় যারা তোমাদের মধ্যে বে ইনসাফ। এবং বল আমাদের প্রতি ও তাদের প্রতি যা নাজিল করা হয়েছে, তাতে আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমাদের উপাস্য ও তোমাদের উপাস্য একই এবং আমরা তারই আজ্ঞাবহ। মক্কায় অবতীর্ন, ২৯: ৪৬

উপরের আয়াতে যে খালি শান্তির বানী ঝরে পড়ছে তাই নয়, বরং মুলত: ইসলামের সাথে ইহুদি ও খৃষ্টানদের ধর্মের মধ্যে যে আসলেই তেমন কোন তফাত নেই সেটাই খুব পরিস্কার ভাবে এখানে ফুটে উঠেছে। সোজা কথায় খৃষ্টান ও ইহুদিদেরকে তোয়াজ করা হচ্ছে। একারনে তোয়াজ করা হচ্ছে যেন ইহুদি খৃষ্টানরা অন্তত: মোহাম্মদের বিরোধিতা না করে। এটা ছিল একটা সূক্ষ্ম কৌশল।

আর বলা বাহুল্য দুটি আয়াতই কিন্তু মাক্কি মানে মক্কাতে নাজিল হয়েছে।

আমি ব্যক্তিগত ভাবে অনেক বন্ধুবান্ধবদের সাথে আলাপ করেছি, কথাচ্চলে বেশ কিছু মোল্লা মৌলভীদের সাথে আলাপ করেছি, দেখেছি তারা প্রত্যেকেই ইসলাম যে মহা শান্তির ধর্ম তা প্রমান করতে উক্ত দুটি সুরা তোতা পাখির মত আউড়ে যায়। আর যারা কোরান তাফসির ও শানে নুযুল সহ পড়েনি, মোহাম্মদের জীবনের ইতিহাস জানে না, নবীর মক্কার জীবন ও মদিনার জীবনের পার্থক্য সম্পর্কে জানে না- তারা যদি এ আয়াত দুটো দেখে বা শোনে তারা কিন্তু সত্যি সত্যি বিশ্বাস করে বসে থাকবে যে ইসলাম সত্যি সত্যি বোধ হয় শান্তি ও মৈত্রীর ধর্ম। ইসলামের মত শান্তির ধর্ম দুনিয়ায় আর নেই।

কিন্তু মোহাম্মদ যেই মদিনায় গিয়ে শক্তিশালী গোষ্ঠী নেতা হয়ে গেলেন, যখন তার বেশ বড়সড় একটা লুটেরা বাহিনী গঠিত হয়ে গেছে আর তিনি আশে পাশের ছোট ছোট গোস্ঠীর ওপর আক্রমন চালিয়ে তাদের সম্পদ আর নারীদের লুটপাট করে ভোগ দখল করছেন আর তার লুটরা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে কিয়দংশ বন্টন করে দিয়ে তাদেরকে নিজের দলে রাখতে সক্ষম হয়ে পড়লেন তখন আল্লাহর বানীর পকৃতি পরিবর্তন হয়ে গেল। শান্তির বানীর পরিবর্তে সেখানে শুরু হলো- যুদ্ধ – বিগ্রহ, হত্যা, খুন, লুট তরাজ, উচ্ছেদ, ঘৃনা প্রকাশ ইত্যাদির বানী । মদিনাতে এসব সুরা নাজিল হয় বলে এদেরকে মাদানী সুরা বলা হয়। যেমন-

যুদ্ধ তোমাদের ওপর ফরজ করা হয়েছে, অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দ। পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়ত কোন একটা বিষয় পছন্দনীয় নয় অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যানকর। আর হয়ত বা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় কিন্তু তা তোমাদের জন্য অকল্যানকর। বস্তুত: আল্লাহই জানন, তোমরা জানো না।মদীনায় অবতীর্ন, ২: ২১৬

উক্ত আয়াত পড়ে বোঝা যায়, প্রথমদিকে মোহাম্মদ মদিনাবাসীকে যুদ্ধের জন্য উস্কানী দিত, লোকজন তা পছন্দ করত না। কারন অহেতুক যুদ্ধ তো কেউ পছন্দ করে না তা সে যতই অসভ্য আর বর্বর হোক না কেন। তারাও তো একটা নিয়মের অধীনে বাস করে। তাছাড়া মাদিনাবাসীরা মক্কাবাসীদের তুলনায় একটু নরম প্রকৃতির মানষ ছিল, মক্কার জলবায়ূ অতি রুক্ষ্ম প্রকৃতির হওয়ায় সেখানকার লোকজন ছিল খুবই রুক্ষ্ম ও কঠোর প্রকৃতির। পক্ষান্তরে মদিনার জলবায়ু একটু নরম ভাবাপন্ন হওযার সেখানকার লোকজনও ছিল একটু নরম প্রকৃতির আর তাই মোহাম্মদের অহেতুক যুদ্ধের প্রতি তাদের প্রথমদিকে তেমন সায় ছিল না। কিন্তু মোহাম্মদের দরকার একটা লুটেরা বাহিনী, সেকারনে আল্লাহর সূরা পাঠাতেও দেরী হয় না যা উপরে বর্ননা করা হলো। আর এ যুদ্ধের কল্যানকর বিষয়টা কি ? কল্যানকর বিষয় জানতে আল্লাহর সাহায্য দরকার নেই। যুদ্ধে জিতলে বিজিতদের যাবতীয় সম্পদ কুক্ষিগত করা যায়, কিছু মানুষকে জীবিত বন্দী করে তাদেরকে দাস হিসাবে ব্যবহার বা বিক্রি করা যায়, আর খুব আকর্ষনীয় উপহার হিসাবে পাওয়া যায় তর তাজা কিছু যুবতী নারী যাদের সাথে অবাধে য়ৌনফুর্তি করা যায়। সোজা হিসাব। তবে যুদ্ধের জয় পরাজয়ের নিষ্পত্তি যাই হোক, সবাই যে বেচে ফিরে আসবে তার নিশ্চয়তা তো নেই। যারা বেচে থাকবে তারা তো উপরোক্ত সুবিধাদি পাবেই, কিন্তু যারা মারা যাবে , তাদের জন্য কি ব্যবস্থা ?ব্যাস তাদের জন্য আল্লাহ ব্যবস্থা পত্র দিতে বিন্দুমাত্র দেরী করেন না। তারা সরাসরি বেহেস্তে চলে যাবে কেয়ামতের মাঠে বিচার আচার ছাড়াই, আর সেখানে যেয়ে পাবে অসংখ্য তরতাজা হুর, মদ এসব।আধা সভ্য অশিক্ষিত বর্বর আরবদেরকে প্রলুব্ধ করতে আর কিছু দরকার আছে ? ব্যস, বহু সংখ্যক লোক অতি সত্তর মোহাম্মদের লুটেরা বাহিনীতে ভিড়ে গেল। আর তারা শুরু করে দিল মদিনার পাশ দিয়ে সিরিয়ার দিকে যাওয়া বানিজ্য পথে বানিজ্য দলের ওপর আতর্কিত আক্রমন করে তাদের মাল জিনিস লুটপাট, মদিনার আশে পাশের ছোট ছোট গোষ্ঠির ওপর আতর্কিত আক্রমন ও তাদের ধন সম্পদ লুন্ঠন।

হে আসমানী কিতাবের অধিকারী বৃন্দ, যা আমি অবতীর্ন করেছি তার ওপর বিশ্বাস স্থাপন কর যা সে গ্রন্থের সত্যায়ন করে আর যা তোমাদের কাছে আগে থেকেই রয়েছে।(বিশ্বাস স্থাপন কর) এমন হওয়ার আগেই যে আমি মুছে দেব অনেক চেহারাকে অত:পর সেগুলিকে ঘুরিয়ে দেব পশ্চাতদিকে কিংবা অভিসম্পাত করব তাদের প্রতি যেমন করে অভিসম্পাত করেছি আছসাবে সাবতের ওপর। আর আল্লাহর নির্দেশ অবশ্যই কার্যকর হয়। মদীনায় অবতীর্ন, ৪: ৪৭

এ আয়াতে দেখা যাচ্ছে, ইহুদি ও খৃস্টানদের প্রতি হুমকি দেয়া হচ্ছে। আমি মুছে দেব অনেক চেহারাকে – মানে তাদেরকে হত্যা করা হবে যদি তারা মোহাম্মদের কথা না শোনে বা তার কাছে আত্মসমর্পন না করে। এখন মোহাম্মদের মূখ থেকে আর -দ্বীনের ব্যপারে জবর দস্তি বা বাধ্যবাধকতা নাই। (মক্কায় অবতীর্ন) ০২: ২৫৬ এ শান্তির বানী বেরোয় না। অথবা ২৯:৪৬ আয়াতের মত মৈত্রীর কথা নেই মোহাম্মদের মুখে। কারন মদিনায় মোহাম্মদ তখন আর মক্বার মোহাম্মদ নেই। মক্কায় মোহাম্মদ ছিলেন দীন হীন এক দুর্বল মানুষ, কিন্তু মদিনার মোহাম্মদ একজন শক্তিশালী গোষ্ঠি নেতা যার কথায় এক বিরাট লুটরা বাহিনী যে কোন সময় যে কোন গোষ্ঠির ওপর ঝাপিয়ে পড়তে উদ্যত। আর তাই রাতারাতি তার মুখ তথা আল্লাহর বানী থেকে শান্তির বানী উধাও হয়ে গেছে।

মোহাম্মদের এ ধরনের উল্টো যাত্রা নিয়ে যে তখন একেবারেই মানুষ মুখ খুলত না তা নয়, তার ঘনিষ্ঠ সাহাবীরাও মাঝে মাঝে মুখ খুলত।জানতে চাইত আল্লাহ কেন তার আগের কথা থেকে সরে গেলেন। এ ধরনের সন্দেহ নিরসনের ব্যপারে মোহাম্মদ ছিলেন অতিশয় চতুর। কারন তিনি ভাল করেই জানতেন মানুষের মনের মধ্যে কখনো সন্দেহ দানা বাধতে দিতে নেই তাহলে তা পরে বিশাল ক্ষতির কারন হয়ে দাড়াতে পারে। মানুষের মনস্তাত্বিক বিশ্লেষনে মোহাম্মদের এ গুন সত্যিই অসাধারন ছিল। সন্দেহ দুর করার জন্য তিনি মাঝে মাঝে দারুন সব ঝুকি নিতেন। তার একটা উদাহরন এ আয়াতগুলি:

যে কেউ আল্লাহ ও তার রসুলের অবাধ্যতা করে ও তার সীমা অতিক্রম করে তিনি তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন।সেখানে সে চিরকাল থাকবে। তার জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি।মদিনায় অবতীর্ন, ৪: ১৪
হে ইমানদারগন , আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, আর নির্দেশ মান্য কর রসুলের——। মদিনায় অবতীর্ন, ৪: ৫৯
আর যে কেউ আল্লাহর হুকুম ও তার রসুলের হুকুম পালন করবে তাহলে যাদের প্রতি আল্লাহ নেয়ামত দান করেছেন, তারা তাদের সঙ্গী হবে।তারা হলেন নবী , সিদ্দিক, সহীদ ও সতকর্মশীল ব্যক্তিবর্গ।আর তাদের সান্নিধ্যই উত্তম।মদিনায় অবতীর্ন, ৪: ৬৯
যে লোক রাসুলের হুকুম মান্য করল, সে আল্লাহর হুকুম মান্য করল। ৪: ৮০
যে কেউ রসুলর বিরুদ্ধাচরন করে তার কাছে সরল পথ প্রকাশিত হওয়ার পর এবং সব মুসলমানের অনুসৃত পথের বিপরীত দিকে চলে আমি তাকে ঐ দিকেই ফেরাব যে দিক সে অবলম্বন করেছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। আর তা নিকৃষ্টতর গন্তব্য স্থান। ৪: ১১৫

তার অর্থ, মোহাম্মদ যা বলবেন সে বিষয়ে তর্ক করা যাবে না , প্রশ্ন করা যাবে না , বিনা প্রশ্নে সব মেনে নিতে হবে। সুতরাং তিনি আজ একরকম আয়াত , কিছুদিন পর অন্য রকম আয়াত নাজিলের নামে নিজের কথা বললেও তাতে কোন আপত্তি তোলা যাবে না।কারন তার কথা আর আল্লাহর কথা সমার্থক। অন্য কথায় তিনিই আল্লাহর ভুমিকায় অবতীর্ন। তাই তার কথা অমান্য করলেই নিশ্চিত জাহান্নামের আগুনে পুড়তে হবে। মূর্খ আরবরা তো আর জাহান্নামের আগুনে পুড়তে চায় না। তারা চায় ইহ জগতে গনিমতের মাল আর গনিমতের নারীদের সাথে ফুর্তি করতে, আর মরার পর বেহেন্তে হুরদের সাথে অনন্তকাল যৌনলীলা উপভোগ করতে। তাই মোহাম্মদের কথার বরখেলাপ করার মত মূর্খতা কে করবে ?তার চেযে মোহাম্মদের কথা শুনলে ইহকাল ও পরকাল দু জগতেই লাভ। বলা বাহুল্য, ততদিনে মদিনায় তিনি নিরংকুশ আধিপত্য বিস্তার করে ফেলেছেন, সুতরাং এখন তিনি যা ইচ্ছা খুশী আয়াতের নামে বলতে পারেন, কারও কিছুই করার নেই এখানে। মদিনাতে এরকম একটা নিরংকুশ আধিপত্য স্থাপনের পর পরই তিনি শুরু করলেন তার আসল মিশন। আর শুরু করলেন অমুসলিমদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার। এরপর থেকে কোরানে আর একটাও আয়াত নেই যেখানে কোথাও ন্যুনতম শান্তি বা মৈত্রীর কথা বলা হয়েছে। বলা বাহুল্য এসবগুলো সুরা বা আয়াত মদিনায় অবতীর্ন। যেমন:

হে ইমানদারগন, নিজেদের অস্ত্র তুলে নাও এবং পৃথক পৃথক সৈন্যদলে কিংবা সমবেতভাবে বেরিয়ে পড়। ৪:৭১

আল্লাহর রাহে যুদ্ধ করতে থাকুন, আপনি নিজের সত্তা ব্যতিত অন্য কিছুর জিম্মাদার নন।৪: ৮৪

গৃহে উপবিষ্ট মুসলমান যাদের সঙ্গত কোন ওজর নেই এবং ঐ মুসলমান যে তার জান মাল দিয়ে আল্লাহর পথে জেহাদ করে- সমান নয়। যারা জান মাল দ্বারা জেহাদ করে আল্লাহ তাদের পদমর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন গৃহে উপবিষ্টদের তুলনায় এবং প্রত্যেকের সাথেই আল্লাহ কল্যানের ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ মুজাহেদীনকে উপবিষ্টদের উপরে মহান প্রতিদানে শ্রেষ্টত্ব প্রদান করেছেন। ৪: ৯৫

এবার বুঝুন কেন মুসলমান তরুনরা আত্মঘাতী বোমা হামলা চালাতে যায়। প্রতিটি মুসলমানের পবিত্র ইমানী দায়িত্ব তারা জেহাদে অংশ গ্রহন করবে। কারন বসে থাকা মুসলমানদের মর্যাদা খুব কম। কোরানের ছত্রে ছত্রে মুসলমানদেরকে জেহাদে অংশ গ্রহনের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।

হে ইমানদারগন, তোমরা কাফেরদের বন্ধু রূপে গ্রহন করিও না মুসলমানদের বাদ দিয়ে। ৪: ১৪৪

তোমরা যদি আল্লাহর পথে নিহত হও বা মৃত্যুবরন কর, তোমরা যা কিছু সংগ্রহ করে থাকো আল্লাহ তালার ক্ষমা ও করুনা তা থেকে উত্তম।মদিনায় অবতীর্ন. ৩: ১৫৭
যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তাদের মৃত মনে করো না। বরং তারা পালনকর্তার কাছে জীবিত ও জীবিকা প্রাপ্ত। ৩: ১৬৯
কাজেই যারা আল্লাহর কাছে পাথিব জীবনকে আখেরাতের পরিবর্তে বিক্রি করে দেয়, তাদের জেহাদ করাই কর্তব্য। বস্তুত যারা আল্রাহর রাহে লড়াই করে অত:পর মৃত্যুবরন করে অথবা বিজয় অর্জন করে, আমি তাদেরকে মহাপূন্য দান করব। ৪: ৭৪

তারা চায় যে তারা যেমন কাফের তোমরা তেমনি কাফের হয়ে যাও যাতে তোমরা ও তারা সমান হয়ে যাও। অতএব তাদের মধ্য থেকে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহন করো না, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে চলে না আসে। অত:পর তারা যদি বিমুখ হয় তাদেরকে পাকড়াও কর. এবং যেখানে পাও সেখানে হত্যা কর। তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরুপে গ্রহন করো না, এবং সাহায্যকারীও বানিও না। ৪:৮৯

এতক্ষনে মোহাম্মদের থলের বেড়াল বের হয়ে গেল। এখানে উল্লেখ্য মোহাম্মদ কাফের কাদেরকে বলছেন? ইহুদি আর খৃষ্টানদেরকে কাফের বলছেন। কুরাইশরা যারা পৌত্তলিক পুজা করত তাদেরকে বলা হতো মুশরিক মানে তারা আল্লাহর সাথে শরিক করত মানে অনেক দেব দেবীর পুজা করত, তাই তারা ছিল মুশরিক।কিন্তু কাফের তাদেরকে বলা হতো, যারা আল্লাহর রসুল তথা মোহাম্মদকে মানত না আর তার কিতাবকে আসমানী বলে মনে করত না। ইহুদি খৃষ্টানরা তো আল্লাহ তে বিশ্বাস করত।বর্তমানে কাফের বলতে সাধারনত বুঝায় যারা নাস্তিক কিন্তু ইসলামের কাফের মানে নাস্তিক না। কারন সেই আরব দেশে একটাও আজকের যুগের মত নাস্তিক ছিল না। নাস্তিক হতে গেলে যে পরিমান বিদ্যা বুদ্ধির আর জ্ঞান দরকার হয় সে আধাসভ্য আরবরা তার ধারে কাছেও ছিল না। কুরাইশরা তাদের দেব দেবীতে বিশ্বাস করত। ইহুদি খৃষ্টানরা তাদের ইশ্বর বা আল্লাহতে বিশ্বাস করত। সুতরাং তারা কোন ক্রমেই নাস্তিক ছিল না। তারা মোহাম্মদকে ভূয়া নবী আর কোরান কে ভুয়া আসমানী কিতাব মনে করত।আর সেকারনেই তাদের প্রতি ঘৃনা প্রকাশ করতে কাফের বলত। আর তাও কথন বলত যখন মোহাম্মদ মদিনায় ঘাটি গেড়ে শক্তিশালী নেতা হযে গেছেন তখন , তার আগে না। তার আগে মক্কায় থাকতে তো তিনি ইহুদি খৃস্টানদেরকে আহলে কিতাব বা কিতাবধারী বলে তাদের সাথে তর্ক বিতর্ক করতে নিষেধ করেছিলেন আর বলেছিলেন ধর্ম নিয়ে কোন জোর জবর দস্তি নেই।

বলা হয়ে থাকে মোহাম্মদ যত প্রকার যুদ্ধ বা খুন করেছেন তার সব নাকি আত্মরক্ষার জন্য। ৪: ৮৯ আয়াতের বর্ননা দেখলে কি তাই মনে হয় নাকি ? হাদিসে তো অনেক ঘটনাই আছে যেখানে দেখা যায় মোহাম্মদ ও তার দল বল আগ বাড়িয়ে নিরীহ জনপদ বা বানিজ্য দলকে আক্রমন করে তাদেরকে হত্যা করেছে, সম্পদ লুঠ করেছেন, তাদের নারীদেরকে বন্দী করে যথেচ্চ ধর্ষন করেছেন। হাদিসের কথা বাদই দিলাম কারন ইদানিং কতিপয় মুসলমান হাদিসের এসব বর্ননাকে ইহুদি নাসারাদের বর্ননা বলে প্রমান করার আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ৪: ৮৯ এ আয়াতে দেখা যায়, পরিস্কার ভাবে বলছে- যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে চলে না আসে। অত:পর তারা যদি বিমুখ হয় তাদেরকে পাকড়াও কর. এবং যেখানে পাও সেখানে হত্যা কর।– এ তো কোন আত্মরক্ষার বানী নয়। এ তো দেখা যাচ্ছে একজন শক্তিশালী পরাক্রমশালী গোষ্ঠিনেতা বা এক নায়কের হুংকার। প্রতিশোধ নেবার হুংকার, আদেশ অমান্য করার হুংকার। যদি তারা বিমূখ হয়, তাদেরকে পাকড়াও কর, এবং যেখানে পাও সেখানে হত্যা কর- তার মানে তাদেরকে প্রথমে দাওয়াত দাও ইসলামের , যদি তারা ইসলাম কবুল না করে, তাহলে তাদেরকে পাকড়াও কর, অত:পর হত্যা কর নির্দয়ভাবে। যদি এটা আত্মরক্ষামূলক বানী হতো- তাহলে আয়াতটি হতে পারত এরকম- যদি তারা আক্রমন করে, প্রতি আক্রমন কর প্রচন্ডবেগে. তাদেরকে পাকড়াও কর , যেখানে পাও হত্যা কর। তাহলে কিন্তু মেনে নেয়া যেত যুক্তির খাতিরে। কেন তিনি প্রতিশোধ নেয়ার হুংকার দিচ্ছেন। কারন সুচতুর মোহাম্মদ খুব ভাল করেই জানতেন, একমাত্র ইহুদী আর খৃষ্টানরা হলো তখনকার আরবের মোটামুটি সভ্য মানুষ, আর যেহেতু তাদের নবী আছে মুসা ও ইসা , আর তাদের কিতাবে কোন শেষ নবী আসবে এরকম কথা লেখা নেই , তাই পৌত্তলিক আরবরা হয়ত একদিন ইসলাম কবুল করবে কিন্তু ইহুদি আর খৃষ্টানরা কোনদিনই ইসলাম কবুল করবে না। তাই তিনি সঠিকভাবেই তার শত্রুদের চিহ্নিত করতে পেরেছিলেন আর আমরা জানি তার এ দুর দৃষ্টি কতটা সত্য। কারন , শত বাধা বিপত্তির মুখেও ইহুদি ও খৃষ্টানদেরকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা যায় নি সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া আর যে সামান্য কিছু সংখ্যক ইসলাম কবুল করেছিল তা করেছিল মূলত মোহাম্মদের কোপানল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে ইসলামকে ভালবেসে নয়। মুহাম্মদ খুব ভালই জানতেন যে তার ইসলামের প্রধান শত্রু পৌত্তলিক কুরইশরা নয়, বরং ইহুদি আর খৃস্টানরা। ইহুদি আর খৃস্টানদেরকে পরাস্ত করতে বা তাদেরকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করতে না পারলে তার ইসলামের ভবিষ্যত অন্ধকার। যে কারনে দেখা যায় , কোরানে অধিকাংশ ঘৃনার , হত্যার , প্রতিশোধ স্পৃহার বানীগুলো মুলত তাদেরকেই লক্ষ্য করে। যখন এত কিছু করেও তাদেরকে মোহাম্মদের অনুসারী করা যাচ্ছিল না , তখন মাঝে মাঝে মোহাম্মদ বেশ কুটনীতির চালও চালেন। হালকা মিষ্টি সুরে তিনি বলেন-

হে আহলে কিতাবগন, এছাড়া আমাদের সাথে তোমাদের কি শত্রুতা যে আমরা বিশ্বাস করেছি আল্লাহর প্রতি , আমাদের ওপর অবতীর্ন গ্রন্থের প্রতি এবং পূর্বে অবতীর্ন গ্রন্থের প্রতি। আর তোমাদের অধিকাংশই নাফরমান।মদিনায় অবতীর্ন, ০৫: ৫৯

কি সুন্দর ভাবে মোহাম্মদ ইহুদি খৃস্টানদেরকে আহবান করছেন আর বলছেন- আমরা তো তোমাদের কিতাবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি তোমরা কেন আমাদের ওপর অবতীর্ন কিতাবের ওপর বিশ্বাস স্থাপন কর না ? এখানে তার একটা কুটনৈতিক সমঝোতার সুর লক্ষ্য করা যায়।

আর যদি আহলে কিতাবরা বিশ্বাস স্থাপন করত আর খোদা ভীতি অবলম্বন করত তবে আমি তাদের মন্দ বিষয় সমূহ ক্ষমা করে দিতাম এবং তাদেরকে নেয়ামতের উদ্যনসমূহে প্রবেশ করাতাম। ০৫: ৫৬
উক্ত আয়াতে দেখা যায় ,মোহাম্মদ সুর আরও একটু নরম করে তাদেরকে বেহেস্তের লোভ দেখাচ্ছেন। এত কিছু করেও যখন কোন কাজ হচ্ছে না তখন মোহাম্মদ আরও কুটনৈতিক চাল চালছেন আধুনিক কালের মত। এবার তিনি ইহুদি আর খৃষ্টানদের মধ্যে বিবাদ বাধানোর পায়তারা করলেন। কারন এ পর্যন্ত ইহুদি ও খৃষ্টানরা মোহাম্মদকে ভূয়া নবী ও তার কিতাবকে ভূয়া কিতাব প্রমানের ব্যপারে ঐক্যবদ্ধ ছিল।মোহাম্মদ এবার চিন্তা করলেন এ দুই দলের মধ্যে বিবাদ তৈরী করলে মনে হয় একটা দল তার সাথে যোগ দেবে। আর সে চিন্তা থেকেই নিচের আয়াত প্রচার করে দিলেন –

আপনি সব মানুষের চাইতে ইহুদি ও মুশরেকদেরকে অধিক শত্রু পাবেন, আর আপনি সব চাইতে বন্ধুভাবাপন্ন পাবেন খৃস্টানদেরকে। এর কারন খৃষ্টানদের মধ্যে আলেম . দরবেশ আছেন আর তারা অহংকার করে না। ০৫ : ৮২

ইহুদিরা তাদের নিজেদেরকে আল্লাহর পছন্দের জাতি মনে করত আর তাই তারা ভাবত তারাই জ্ঞান ও গুনে অধিক পারদর্শী। কারন বাইবেলের পুরাতন নিয়মে বর্ননা করা আছে- মিশরে বন্দী ইসরাইল জাতিকে কিভাবে ঈশ্বর মুসা নবীর মাধ্যমে মুক্ত করে আনেন। সেখানে বার বার একথাও উল্লেখ আছে যে, ইসরাইল জাতি হলো ইশ্বরের বিশেষ পছন্দের জাতি। ইসরাইল জাতি বার বার ভূল কবার পরও বা বিপথে যাবার পরও ঈশ্বর তাদের ক্ষমা করে দেন আর তাদেরকে আশীর্বাদ করেন। আর তাদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেন যে, তিনি ইসরাইল জাতির জন্য এক বিশেষ দেশ উপহার দেবেন। এসব কারনে ইসরাইলীরা মানে ইহুদিরা নিজেদেরকে অন্যান্য জাতিগোষ্ঠির তুলনায় নিজেদেরকে উচ্চ শ্রেনীর ভাবত আর তাই মোহাম্মদকে তারা খৃষ্টানদের চাইতে বেশী উপহাস করত। আর মূলত ইহুদিরাই ভাল বুঝতে পারত যে মোহাম্মদ আসলেই কোন নবী না , সব হলো তার মিথ্যা জারি জুরি। ঠিক একারনে ইহুদিদের প্রতি মোহাম্মদের ঘৃণা ও ক্ষোভ সবচাইতে বেশী পরিলক্ষিত হয়। আর এ সুযোগে তিনি এক নতুন আয়াত দ্বারা ইহুদি আর খৃষ্টান দের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির এক দারুন কুটনৈতিক চাল চালেন।

এতেও যখন কাজ হলো না , মোহাম্মদ আবার স্বমূর্তি ধারন করলেন। ইহুদি ও খৃস্টানদের বিরুদ্ধে আবার যুদ্ধের হুমকি দেয়া শুরু করলেন আর তার বাহিনীকে উত্তেজিত করতে লাগলেন। সুতরাং তিনি নিচের আয়াত প্রচার করা শুরু করলেন-

তুমি বলে দাও যে যা কিছু ঘটে গেছে তা ক্ষমা করা হবে যদি তারা বিরত হয়ে যায়। পক্ষান্তরে আবারও যদি তাই করে, তবে পূর্ববর্তীদের পথ নির্ধারিত হয়ে গেছে। আর তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাক যতক্ষন না তাদের ভ্রান্তির শেষ হয় এবং আল্লাহর সমস্ত হুকুম প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। তার পর যদি তারা বিরত হয় , আল্লাহ তাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করেন্ । মদিনায় অবতীর্ন, ০৮ :৩৮-৩৯

উপরের আয়াতটি মোহাম্মদ নাজিল করেন তার বদর যুদ্ধে বিজয়ের পর। এ যুদ্ধে বিজযের পর মোহাম্মদের আত্মবিশ্বাস ও সাহস বহুগুনে বেড়ে যায়। এর ফলে তার লুটেরা বাহিনীকে আরও বেশী উদ্বুদ্ধ করার জন্য তিনি এ আয়াত নাজিল করেন। অথচ বদর যুদ্ধ ছিল সম্পুর্ন অনৈতিক এক যুদ্ধ মোহাম্মদের জন্য। যারা ইসলামের ইতিহাস ভাল জানেন , তারা জানেন যে , কোরাইশদের একটি বানিজ্য কাফেলা সিরিয়া থেকে মালামাল নিয়ে মক্কায় ফিরছিল যার নেতৃত্বে ছিল আবু সুফিয়ান। বানিজ্য পথ টি মদিনার পাশ দিয়ে চলে গেছে। মোহাম্মদ একটা লুটেরা বহিনী গঠন করে উক্ত বানিজ্য কাফেলায় আকস্মিক আক্রমন করে তাদের যাবতীয় মালামাল লুটে নেয়ার পায়তারা করেন। মদিনার লোকরা তার এ ধরনের অনৈতিক কাজে প্রথমে সায় দেয়নি। কিন্তু পরে তাদেরকে লুটের মালের লোভ দেখিয়ে দলে ভেড়ানো হয়। অথচ এ ধরনের অনৈতিক লুটপাটেও তাদের সায় ছিল না। পরে তাদেরকে বোঝানো হয়, এটা আল্লাহর থেকে আদেশ। এভাবে নানা ছলা কলা করে মোহাম্মদ এ ধরনের একটা অনৈতিক ডাকাতি করার উদ্যেশ্যে প্রায় তিনশ জনের একটা দল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। এ খবর পরে মক্কায় চলে যাওয়ার পর মক্কা থেকে কুরাইশরা প্রায় একহাজার জন বানিজ্য কাফেলাকে রক্ষা করার জন্য ছুটে মদিনার দিকে আসে। তারা কিন্তু মদিনা আক্রমন করার জন্যে আসেনি। এসেছিল তাদের বানিজ্যের মালামাল মোহাম্মদের লুটেরা বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য। কারন উক্ত মালামালর ওপর পুরো মক্কাবাসীদের জীবন ও জীবিকা নির্ভর করছিল। অনেক দুর থেকে তারা অতি দ্রুত ছুটে এসেছিল বলে স্বাভাবিকভাবেই তারা ছিল ভীষণ পরিশ্রান্ত ও ক্লান্ত। অন্যদিকে মোহাম্মদের দলবল ছিল সতেজ কারন যায়গাটি ছিল মদিনার সন্নিকটে। তাছাড়া কুরাইসদের মধ্যে বেশ কিছু মুসলমানও ছিল যারা মদিনাতে হিজরত করে চলে যেতে না পেরে মক্কায় বাস করছিল অনেকটা বাধ্য হয়ে। প্রকৃত যুদ্ধের সময় তারা কুরাইশদের সাথে সহযোগীতা না করে মোহাম্মদের দলের সাথে যোগ দেয় বা তাদেরকে সাহায্য করে। তাই মোহাম্মদ মাত্র তিনশ এর মত মানুষ নিয়েও দীর্ঘ পথ ভ্রমনে ক্লান্ত প্রায় এক হাজার মক্কাবাসীদেরকে অনেক কষ্টে হারিয়ে দেয়। যা মূলত মোহাম্মদের ভাগ্যকে খুলে দেয় ও ইসলাম প্রচারের জন্য এক যুগান্তকারী পরিবর্তন সূচিত করে। বদর যুদ্ধ নিয়ে মুসলিম পন্ডিতরা নানা রকম গর্ব করে , একে অলৌকিকতার এক উজ্জ্বল নমুনা হিসাবে তুলে ধরে, ইসলামের গৌরব গাথা প্রচার করে, কিন্তু একবারও তারা ভুলেও বলে না যে ওটা ছিল মোহাম্মদের একটা চাপিয়ে দেয়া অনৈতিক যুদ্ধ, আর সেটা ঘটেছিল মূলত মোহাম্মদের একটা ডাকাতি করার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই। এ ধরনের একজন মানুষ যিনি অন্যের সম্পদ লুঠ করার জন্য নিরীহ মানুষদেরকে প্রলুব্ধ করেন, তিনি কিভাবে আল্লাহর নবী হন আর তার কাছে কিভাবে আল্লাহর বানী আসতে পারে তা সত্যি বোধের অগম্য। আর এ ধরনের একজন মানুষের কাছ থেকে যে সব ঘৃনা প্রকাশ , হত্যা, লুট তরাজ ইত্যাদি সম্বলিত বানী আমরা আল্লাহর বানীর নামে কোরানে পাই তা কি করে আল্লাহর বানী হতে পারে তাও আমাদের বুদ্ধির অগম্য। বরং তাকে একজন সফল গোষ্ঠি নেতা হিসাবেই বেশী মানায় , কোনক্রমেই আল্লাহ প্রেরিত নবী রূপে নয়্ পাঠকরা আপনারাই বিবেচনা করুন।