আমরা একটা বিষয়ে অনেকেই অনেক সময় ভুল করে ফেলি। সেটা হলো সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস আর ধর্মে বিশ্বাস দুটো এক জিনিস না। কিন্তু আমরা অনেকেই দুটোকে অনেক সময় এক করে ফেলি। সুতরাং গোটা মানব প্রজাতিকে আমরা তিন ভাগে ভাগ করতে পারি- ঈশ্বর ও ধর্ম বিশ্বাসী আস্তিক, সোজা নাস্তিক যে কোন কিছুতেই বিশ্বাস করে না আর যে ঈশ্বরে বিশ্বাস করে তবে প্রচলিত কোন ধর্মে বিশ্বাস করে না। প্রথম শ্রেনীর আস্তিক যারা বিশ্বাস করে কোন এক অতি প্রাকৃত ঈশ্বর কোন এক সময় এ বিশ্ব জগৎ সৃষ্টি করেছে সৃষ্টি করেছে আমাদের এ পৃথিবী আর তার জীব জগৎ আর বলা বাহুল্য মানুষকে। সব কিছু সৃষ্টি করার পর তিনি খামোখা মানুষ সৃষ্টি করতে গেলেন কেন? তার উত্তর হলো- তার সৃষ্টি রহস্য বোঝার জন্য বুদ্ধিমান প্রানী দরকার আর সেকারনেই মানুষ সৃষ্টি করা হয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেনীর মানুষ যারা নাস্তিক তারা মনে করে না যে বিশ্বজগৎ কোন এক ঈশ্বর কর্তৃক সৃষ্টি হয়েছে, তারা মনে করে কোন এক তথাকথিত বিগ ব্যাং বা অতি সাম্প্রতিক অতি স্ফীতি এর মাধ্যমে বিশ্বজগতের পত্তন ঘটেছে, কাল ক্রমে সৃষ্টি হয়েছে কোটি কোটি নত্র. নিহারীকা. আমাদের সূর্য তার গ্রহ সমূহ , পৃথিবী, তারপর পৃথিবীতে নানা পরিঘটনার মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে জীবকনার যা থেকে বিবর্তিত হয়ে আজকের জটিল জীব জগত। যারা সৃষ্টি কর্তায় বিশ্বাসী কিন্তু কোন প্রচলিত ধর্মে আস্থা রাখে না তারা মনে করে সবকিছু সৃষ্টি কর্তা কোন এক তথাকথিত বিগ ব্যাং বা অতি স্ফীতির মাধ্যমে সৃষ্টিকার্য শুরু করে দিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন কিছু মৌলিক ভৌত বিধির আওতায় আর তার ফলে পরবর্তীতে নানা ঘাত প্রতিঘাত ও বিবর্তন প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়েছে আজকের বিশ্ব জগত।

মানুষের শ্রেনীবিভাগটা এত সরলীকরন করলে কিন্তু আসলে কোন সমস্যা ছিল না। সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে পরবর্তীতে শ্রেনী চরিত্রের বিকাশ ও তার বাস্তবায়নে। দুনিয়াতে মানব সমাজে নাস্তিক বা প্রায় নাস্তিক শ্রেনীর মানুষ নিয়ে তেমন কোন সমস্যা কখনো হয়নি। সমস্যা হয়েছে আস্তিক শ্রেনীর মানুষ কর্তৃক। আস্তিক শ্রেনীর মানুষগুলো তাদের স্ব স্ব ধর্ম ও বিশ্বাস অন্যের ওপর জোর করে চাপিয়ে দিতে গিয়েই সমস্যা গুলো সৃষ্টি করেছে। এজন্য গনহত্যা, লুঠ-তরাজ, ধর্ষণ কোন কিছুই তারা বাদ দেয়নি। আর তা করা হয়েছে ধর্মের নামে, ঈশ্বরের নামে। অথচ অদ্ভুদভাবে প্রতিটি ধর্মই দাবী করে তাদের বানী হলো শান্তির, সেখানে অশান্তির কোন স্থান নেই। বর্তমানে গোটা দুনিয়া জুড়ে ইসলাম ধর্ম নিয়ে সেরকমই একটা সংকটে পড়েছি। সুতরাং আলোচ্য নিবন্ধের মূল বক্তব্যই হবে ইসলামেকে কেন্দ্র করে। অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন অন্যান্য ধর্ম থাকতে কেন ইসলামকে নিয়ে পড়লাম। এর কারন হলো- বর্তমান দুনিয়ায় এখন অন্য ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি বা সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে দেশ বা সমাজকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা চলছে না যা চলছে ইসলামকে কেন্দ্র করে। আর তাই ইসলাম নিয়ে এত মাথা ব্যথা। একদল উগ্র ধর্মান্ধ মুসলমান কোরান হাদিস থেকে অনুপ্রানিত হয়ে নিরীহ জনপদে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে সাধারন মানুষ হত্যা করছে, তা করছে কিন্তু আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে, যেন মরার পর বেহেস্তে যাওয়া যায়। তারা শুধু সেটুকু করেই ান্ত হচ্ছে না, তারা স্বপ্ন দেখছে গোটা দুনিয়ায় ইসলামী ঝান্ডা উড়িয়ে মানব সভ্যতাকে মধ্যযুগে বা তারও আগের যুগে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে। আর তারা তা করতে এমন কোন কৌশল নেই যা অবলম্বন করছে না। মিথ্যা প্রচারনা, ভিত্তিহীন অযৌক্তিক দাবী, চির শান্তির বানী ইত্যাদি নামে তাদের এ প্রচারনা চলছে মহা বিক্রমে যাকে সহায়তা করছে মধ্যপ্রাচ্যের পেট্রোডলারের প্রবাহ, কোন কোন েেত্র পাশ্চাত্যদেশে বসবাসকারী কিছু উগ্র মানুষের অকাতর অনুদান। উদারহরন স্বরূপ বলা যেতে পারে- এক শ্রেনীর তথাকথিত ইসলামী পন্ডিতদের আগমন ঘটেছে যারা কোরানের মধ্যে বিজ্ঞানের যাবতীয় তত্ত্ব ও তথ্য পেয়ে যাচ্ছেন, আইনস্টাইনের আপেকি তত্ত্ব, আলোর গতি ইত্যাদিও তারা কোরানে পেয়ে গেছেন, যদিও ওসব পন্ডিত ব্যক্তিরা কোন বিষয়ে পন্ডিত তা কিন্তু এখনও জানা যায়নি। তারা প্রচার করে চলেছেন চন্দ্রে প্রথম পদপে প্রদানকারী নীল আর্মস্ট্রং চাদে নাকি আজানের ধ্বনি শুনেছিলেন আর তা শুনে পৃথিবীতে আসার সাথে সাথেই ইসলাম কবূল করে ফেলেছিলেন। যদিও যথেষ্ট সন্দেহ আছে যে , শব্দ তরঙ্গ চলাচলের জন্য যে মাধ্যম হিসাবে বায়ু লাগে একথা ওসব তথাকথিত পন্ডিতরা জানেন বলে মনে হয় না , তা না হলে বায়ুহীন চাদের বুকে কিভাবে আজানের ধ্বনি শোনা যেতে পারে তা ঠিক বোধগম্য না। আজানের ধ্বনি তো দুরের কথা, একটা পারমানবিক বোমার বিস্ফোরন নাকের ডগায় ঘটলেও কেউ তার শব্দ শুনতে পাবে না চাদের বুকে। তার চেয়ে আজব কথা হলো- এসব ভুয়া প্রচার প্রচারনা ও দাবীর কথা শুনে আমাদের মুসলমান ভাই বোনেরা শিতি অশিতি, জ্ঞানী মূর্খ নির্বিশেষে আনন্দের আতিশয্যে ডগ মগ হয়ে ঢেকুর তুলছেন আর আরও জোরে শোরে নামাজ রোজা আকড়ে ধরে পরকালে বেহেস্তে যাওয়ার কল্পনায় বিভোর হয়ে পড়ছে।

বিশ্বাসের জোর তাদের এত বেশী যে, তারা এ বিশ্বাসের বিপরীতে কোন তথ্য প্রমান হাজির করলেও তা পড়তে বা শুনতেও রাজী নয়। এ ধরনের কোন প্রসঙ্গের অবতারনা করলে সাথে সাথেই তারা আলোচনা বন্দ করে দেয় অথবা মাফ চেয়ে বিদায় নিতে চায়। মোট কথা তারা পণ করেছে কিছুই তারা শুনবে না । তারা সেই শৈশব থেকে কাঠ মোল্লাদের কাছ থেকে যা শুনে এসেছে বা তাদের লেখা ধর্মের বই পুস্তকে যা পড়ে এসেছে তার বাইরে আর কোন কিছু জানতে চায় না , শুনতে চায় না, জানাতে বা শুনাতে গেলে রেগে যায়। সম্প্রতি এধরনের কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে। যেমন- ইসলামে নারীদের জন্য প্রদত্ত তথাকথিত অধিকার ও স্বাধীনতার কথা কয়েক জন উচ্চ শিতি নারীর সাথে আলাপ করতে গিয়ে ভীষণ ভাবে অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিলাম। এসব নারীর মধ্যে কয়েকজন পোষ্ট গ্রাজুয়েশন করা ইঞ্জিনীয়ার ও ডাক্তারও আছে। তারা কেন ইসলাম ধর্ম পালন করে জানতে চাইলে তারা অকাতরে উত্তর দিয়েছিল- জান্নাত বাসী হওয়ার জন্যই তারা তা পালন করছে পরম বিশ্বাস সহকারে। তখন আমি বললাম- জান্নাত তো হলো শুধুমাত্র পুরুষদের জন্য কারন সেখানে যেসব আনন্দ ফুর্তির ব্যবস্থা তার সবই পুরুষ মানুষদের জন্য, যেমন- যৗবনবতী হুর, সুরা ইত্যাদি যে সমস্ত জিনিসের বর্ননা বেহেস্তে আছে তার কোনটাই মেয়েদের জন্য কাজে লাগে না, লাগে সব পুরুষদের জন্য। মেয়েদের আনন্দ ফুর্তির কোন ব্যবস্থা তো কোরানের কোথাও উল্লেখ নেই। আমি তাদেরকে আল্লাহ প্রেরিত কোরানে উল্লেখিত যাবতীয় ফুর্তির ব্যবস্থা যে শুধু পুরুষের জন্য তার কতিপয় উদাহরন নিম্নে উল্লেখ করে দেখালাম-

নিশ্চয়ই খোদাভীরুরা থাকবে জান্নাতে ও নেয়ামতে।তারা উপভোগ করবে যা পালনকর্তা তাদের দেবেন এবং তিনি জাহান্নামের আগুন থেকে তাদের রা করবেন।তাদেরকে বলা হবে, তোমরা যা করতে তার প্রতিফল স্বরূপ তোমরা তৃপ্ত হয়ে পানাহার কর। তারা শ্রেনীবদ্ধ সিংহাসনে হেলান দিয়ে বসবে। আমি তাদেরকে আয়ত লোচনা হুরদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে দেব। ৫২ঃ ১৭-২০

যারা আল্লাহর বাছাই করা বান্দা। তাদের জন্য রয়েছে নির্ধারিত রুজি। ফল-মূল ও তারা সম্মানিত। নেয়মতের উদ্যানসমূহ। মুখোমুখি হয়ে আসনে আসীন। তাদেরকে ঘুরে ফিরে পরিবেশন করা হবে স্বচ্ছ পানপাত্র। সুশুভ্র যা পানকারীদের জন্য সুস্বাদু। তাতে মাথা ব্যথার উপাদান নেই ও তা পান করে মাতালও হবে না। তাদের কাছে থাকবে নত আয়তলোচনা তরুনীগন। যেন তারা সুরতি ডিম। ৩৭ঃ ৪০-৪৯

নিশ্চয়ই খোদাভীরুরা নিরাপদ স্থানে থাকবে। উদ্যানরাজি ও নির্ঝরিনী সমূহে। তারা পরিধান করবে চিকন ও পুরু রেশমীবস্ত্র, মুখোমুখি হয়ে বসবে। এবং আমি তাদের আয়তলোচনা স্ত্রী দেব। ৪৪ঃ ৫১-৫৪

তারা তথায় রেশমের আস্তর বিশিষ্ট আসনে হেলান দিয়ে বসবে। উভয় উদ্যনের ফল তাদের নিকট ঝুলবে।— তথায় থাকবে আয়তলোচনা স্ত্রীগন কোন মানব ও জীন তাদেরকে পূর্বে স্পর্শ করেনি। ৫৫ঃ ৫৪-৫৬

তাবুতে অবস্থানকারিনী হুরগন।—- কোন জীন বা মানুষ তাদেরকে পূর্বে স্পর্শ করেনি। ৫৫ঃ ৭২-৭৪

পরহেজগারদের জন্য রয়েছে সাফল্য। উদ্যান ও আঙ্গুর। সমবয়স্কা , পূর্ন যৌবনা তরুনী। এবং পূর্ণ পানপাত্র। ৭৮ঃ ৩১-৩৪

তারা তাতে বসবে হেলান দিয়ে মুখোমুখি হয়ে। তাদের কাছে ঘোরাঘুরি করবে চির কিশোরেরা। পানপাত্র কুজা ও সূরাপূর্ণ পেয়ালা হাতে নিয়ে। যা পান করলে তাদের শিরঃপীড়া হবে না বা বিকারগ্রস্থও হবে না।—- তথায় থাকবে আয়তলোচনা হুরগন। ৫৬ঃ ১৬-২২

আমি তাদেরকে বললাম- উপরোক্ত কোরানের আয়াতে ভুল করেও কোথাও নারীদের জন্য কি ব্যবস্থা বেহেস্তে আছে তার উল্লেখ করা হয় নি। তার মানে নারীদের জন্য মজাদার কোনকিছুই বেহেস্তে নেই। তাহলে তো তাদের বেহেস্তে যাওয়ার জন্য এত কষ্ট করার কোন মানে হয় না। আর পুরুষদের জন্য শুধুমাত্র আয়তলোচনা কুমারী যৌনাবেদনময়ী নারীই খালি নেই , যারা সমকামী পুরুষ তাদের কথাও এখানে ভুলে যাওয়া হয় নি। তাদের জন্য আছে চির কিশোররা। সমকামী নারী বা পুরুষ তো শুধু আজকে না , সেই চোদ্দ বছর আগেকার আরব দেশেও ছিল, গবেষণায় জানা গেছে যে এটা আসলে কোন বিকৃত রুচির ব্যপার না, জেনেটিক কিছু কারনে কিছু মানুষ সম লিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হয় ও তারা সমকামী হয়ে পড়ে। এখন সমকামী পুরুষ যৌন আচরনে সমকামী তাই বলে যুদ্ধেেত্র তো সে অস্ত্র ধরে লড়াই করতে পারে। সেখানে তো সে অম না। বিষয়টা আমাদের আল্লাহর নবীর নজর এড়ায় নি। তাই সেই সময় সৈন্যবল বৃদ্ধি করার জন্য কে বিপরীত কামী আর কে সমকামী তা বিচার করার সময় ছিল না। ফলে সমকামীদের জন্যও বেহেস্তে একটা ব্যবস্থা রাখা জরুরী হয়ে পড়াতেই আল্লাহর কাছ থেকে কোরানে এ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে ধরে নেয়া যায়। এ কিশোরগুলো যদি আমাদের পূন্যবতী মুসলিম রমনীগনের জন্য বরাদ্দ থাকত তাহলেও না হয় তারা ধর্ম কর্ম করতে উৎসাহিত হতে পারত, কিন্তু সে গুড়ে বালি। ঐ চির কিশোররাও পূন্যবান নারীর জন্য নয় বরং বেহেস্তবাসী সমকামী পুরুষদের জন্য। অনেকে আপত্তি তুলতে পারে তারা যে সমকামী পুরুষদের জন্য তার প্রমান কি? ঠিক কথা। উপরের আয়াতগুলোতে কিন্তু একবারও বলা হয়নি বেহেস্তবাসী পুরুষগুলো আয়তলোচনা রমনীদের সাথে কি করবে। অর্থাৎ প্রত্য ভাবে উল্লেখ করা হয়নি যে বেহেস্তবাসী পুরুষগন তাদের সাথে যৌন লীলা উপভোগ করবে। কিন্তু সাধারন বোধবুদ্ধির মানুষ মাত্রেই বুঝতে পারে ওসব উদ্ভিন্ন যৌবনা নারীদের ব্যবস্থা কি কারনে। এটা আর ব্যখ্যা করে বলার দরকার পড়ে না। ঠিক তেমনিভাবেই চির তরুন কিশোরদের ব্যবস্থা কি কারনে তা বুঝতেও কষ্ট হওয়ার কথা নয়, অন্ততঃ যারা সমকামী পুরুষ তাদের তো মোটেও কষ্ট হওয়ার কথা না। আমার এত সব যুক্তি প্রদর্শনও কোন কাজে আসেনি। তাদের সোজা বক্তব্য আল্লাহ যা ব্যবস্থা করেছেন তা চিন্তা ভাবনা করেই করেছেন। আর তাতেই তারা সন্তুষ্ট। তাই আমাকে অগত্যা আরও সামনে বাড়তে হলো।

অনেক ঘেটে ঘুটে অবশেষে নিচের আয়াতটি আবিষ্কার করা গেল-

যে ব্যক্তি ভাল কাজ করবে , হোক সে পুরুষ কিংবা নারী, এবং যে ইমানদার হবে , এরূপ লোক জান্নাতে দাখিল হবে আর তাদের প্রতি বিন্দুমাত্র অবিচার করা হবে না। ৪ঃ ১২৪

খুব ভাল কথা। ভাল কাজ করলে তার পুরষ্কার স্বরূপ তাকে জান্নাতে দাখিল করা হবে , সেখানে নারী ও পুরুষে কোন বৈষম্য দেখানো হবে না। তা না হলে তো আল্লাহ পরম ন্যয় বিচারক হন না। কিন্তু সে জান্নাতে যেখানে বিভিন্ন সূরার অন্ততঃ ডজনখানেক আয়াতে পুরুষদের জন্য কি কি লোভনীয় ব্যবস্থা থাকবে তার আকর্ষণীয় বর্ননা দেয়া হয়েছে সেখানে কোরানে কোন সূরার একটি আয়াতেও কিন্তু সামান্যতম বর্ননা করা হয়নি যে সেখানে নারীর মজা ফুর্তি করার জন্য কি ব্যবস্থা থাকবে। অবশ্য সাধারন খাবার হিসাবে নানা রকম সুস্বাদু ফলের উল্লেখ আছে, কিন্তু আমার মনে হয় না শুধূমাত্র ফল খেয়েই নারীরা জান্নাতে মহা আনন্দে থাকবে। অথবা জান্নাতে শুধুমাত্র ফল খাওয়ার জন্য কোন নারী দুনিয়ার জীবনে এত কষ্ট দুঃখ ভোগ করবে। তার একটা কারন হলো- এ দুনিয়াতেই কিন্তু এখন ফলের তেমন অভাব নেই। টাকা পয়সা আয় করতে পারলে যে যত খুশী ফল খেতে পারে। তবে বাংলাদেশের হত দরিদ্র মুসলমান নারীদের কথা আলাদা। তারা সারা জীবনে খুব বেশী মন ভরে রকমারি ফল খেতে পারে না বলে , শুধু ফল খাওয়ার জন্য বেহেস্তে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা করতেই পারে। তবে উন্নত দেশ সমূহের নারীরা বা যে সব দেশে নানা রকম ফলের ব্যপক উৎপাদন হয় সেসব দেশের নারীরা গরিব হলেও ফল খাওয়াতে তাদের কোন সমস্যা নেই। সুতরাং তারা সেেেত্র কি করবে সেটা চিন্তার বিষয়। আশ্চর্য হলেও সত্যি আমার কথিক উচ্চ শিতিা নারীরা কিন্তু সোজা সাপ্টা বলে দিল যে – যৌন উপভোগ ছাড়াও যে সব আনন্দের ব্যবস্থা বেহেস্তে আছে তাতেই তারা খুশী, আর কিছুর দরকার নেই। তাদের আরও বক্তব্য- পুরুষদের জন্য সেখানে কি ব্যবস্থা আছে তাতে তাদের কোন আপত্তি নেই। আমি অতঃপর আর কি বলব ভেবে পাচ্ছিলাম না। অগত্যা সর্বশেষ হাতিয়ার হিসাবে হাদিসের একটা উদ্ধৃতি টেনে আনলাম-

আবু সাইদ খুদরি বর্নিত- এক ঈদ উল ফিতরের দিনে জামায়াতের নামাজ পড়ে ফেরার পথে নবীজি উপস্থিৎ লোকজনকে তাকে অর্থ দিয়ে সাহায্য করার জন্য আদেশ দিলেন। অতঃপর তিনি উপস্থিৎ মহিলাদের দিকে এগিয়ে গিয়ে তাদেরকে বললেন- হে নারী সকল, সাহায্য কর, কারন আমি দেখেছি আগুনে পুড়তে থাকা দোজখ বাসীদের অধিকাংশই হলো নারী । তখন একজন মহিলা জিজ্ঞেস করল- হে আল্লাহর নবী। এর কারন কি ? আল্লাহর নবী বললেন- হে নারী সকল, তোমরা সব সময় অভিশাপ দাও আর তোমাদের স্বামীদের প্রতি তোমরা অকৃতজ্ঞ। আমি আর কাউকে দেখি নাই যে বুদ্ধিমত্তা ও ধর্ম কর্মে তোমাদের চাইতে নিম্নমানের। হে নারী সকল, তোমাদের যে কেউ একজন সতর্ক জ্ঞানী ব্যক্তিকেও ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে পারে। সহি বুখারী, ভলুম-২, বই-২৪, হাদিস-৫৪১

তার সোজা অর্থ নারীরা যতই ধর্ম কর্ম করুক , নামাজ রোজা রাখূক, স্বামীর মনোরঞ্জনের জন্য যতই নিজেকে উজাড় করে দিক , কোনই লাভ নেই। তাদের অধিকাংশই দোজখে যাবে এটাই তাদের নিয়তি কারন তা মহানবী স্বয়ং বলে গেছেন। মহানবী কোন কথাই আল্লাহর ইঙ্গিত ছাড়া বলেন না , সুতরাং তার এ কথাগুলিও তিনি আল্লাহর ইশারা ছাড়া বলেন নি তার মানে এটা প্রকারান্তরে আল্লাহরই ইচ্ছা বা ব্যবস্থা। মনে হয় ঠিক এ কারনেই বেহেস্তে তাদের জন্য আনন্দ ফুর্তির কোন ব্যবস্থা নেই। যদি বেহেস্তেই তারা যেতে না পারে তাহলে তাদের জন্য ব্যবস্থা রাখা অর্থহীন।

আমি যখন উপরিউক্ত মহিলাদের এ হাদিস পাঠ করে শুনালাম, তখনও তাদের কোন ভাবান্তর দেখা গেল না। একজন বলল- হাদিসে বলা আছে পূন্যবতী রমনী বেহেস্তে গিয়ে হুরদের সর্দারনী হবে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম হুরদের সর্দারনী হয়ে কি লাভ? যে সব হুররা পুরুষের সঙ্গীনি হবে তাদের তো আল্লাহ সম্পূর্ন নতুন করে তৈরী করবে, আর তাদের সাথেই তো পুরুষরা আনন্দ ফুর্তি করবে, তাহলে কি পূন্যবতী রমনীরা তাদের পৃথিবীর স্বামীদের রঙ্গলীলা বসে বসে দেখবে আর আঙ্গুল চুষবে ? তখন দেখলাম মহিলাটি রেগে গিয়ে এ বিষয়ে আর কথা বাড়াতে না করল। আমিও রীতি মতো তখন েেপ গেছি মহিলাগুলোর এ ধরনের মানসিকতা দেখে। তখন আমি একের পর এক কোরানের নানা সূরার আয়াত উল্লেখ করে গেলাম যাতে নারীদেরকে কিভাবে কত প্রকারে অপমান করা হয়েছে তা প্রমান করতে যে বিষয়ে মুক্ত-মনা সাইটে আগেই লেখা হয়েছেhttps://blog.mukto-mona.com/?p=7113,https://blog.mukto-mona.com/?p=7168, https://blog.mukto-mona.com/?p=7376 । দেখলাম- ওরা অকাতরে বলল- আসলেই তো নারীরা পুরুষের সমক নয়, না বিদ্যায় না বুদ্ধিতে। ওরা বলল- মহিলারা ব্যবস্থাপনায় ভাল না, কোন কিছু ঠিক মতো মনে রাখতে পারে না, কোন বিষয়ে তড়িৎ সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। তাই তাদের ভাষায় নারীদের পুরুষদের সমান অধিকার ও স্বাধীনতা দেয়া ঠিক না। যদি তা দেয়া হতো- তাহলে নাকি সমাজ টিকত না। অনেক আগেই ধ্বংস হয়ে যেত। সুতরাং তারা বরং আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে বলল- যে টুকু অধিকার আল্লাহ কোরানে নারীদেরকে দিয়েছে তাই যথেষ্ট আর তাতেই তারা খুশী। স্বামী যদি মাঝে মাঝে মার ধর করে তাদেরকে তাতে তাদের কোন আপত্তি নেই, তাদের যুক্তি হলো- মার খাওয়ার মত কাজ করলে মার খেতে তো অসুবিধা নেই। সুতরাং তারা বোরখা মুড়ি দিয়ে নাক মুখ ঢেকে যেভাবে পর্দা করে চলে তা তাদের জন্য মোটেও কোন অসম্মানের ব্যপার নয়, তেমনি তাদের কাছে অসম্মানের ব্যপার না যদি তাদের স্বামী যথেষ্ট সম হয়ে দ্বিতীয় বা তৃতীয় বিয়ে করে। মোট কথা সমাজের অধিকাংশ অনাচারের কারন যে নারী তা তারা অকপটে স্বীকার করে , তা নিরসনে কোরানে আল্লাহ যে নিদান দিয়েছেন তাতে তারা যার পর নাই খুশী । আর সে কারনেই তারা কোরান ও আল্লাহর নবী মোহাম্মদের ব্যপারে ন্যুনতম সমালোচনা সহ্য করতে রাজী নয়। আর বলা বাহুল্য এ হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রী ধারী কতিপয় মুসলিম রমনীর মানস পটের ছবি। এখন পাঠক পাঠিকা বৃন্দ আপনারা কি বলেন ?