[প্রাককথনঃ সেপ্টেম্বর ২০০৫-এ অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় বছর পাঁচেক আগে নিবন্ধটা লেখা। সেসময় দু’একটা ফোরামে নিবন্ধটা প্রকাশিত হলেও এই ফোরামে আগে কখনও প্রকাশিত হয়নি। একজন লেখকের কোনো একটা লেখা সাধারনত কোনো একটা ‘টার্গেট অডিয়েন্স’ (target audience) কে উদ্দেশ্য করে লিখিত হয়। যেমন আমার সাম্প্রতিককালে লিখিত ‘মডারেট মুসলিম’ নিবন্ধটা ছিল মূলত ধর্মে সংশয়বাদী ও অবিশ্বাসীদের সুনির্দিষ্ট একটা অংশকে উদ্দেশ্য করে লেখা। আমার ‘মুসলিম সন্ত্রাসবাদ ও ইসলাম’ নিবন্ধটা ছিল মূলত বিশ্বাসী মুসলমানদেরকে উদ্দেশ্য করে লেখা। এছাড়া আমি যে আদর্শগত অবস্থান বা প্ল্যাটফর্ম থেকে লিখি, সেখানে ‘পলিটিকালি কারেক্ট’ হওয়ার একটা প্রচেষ্টা থাকতে হয়। সর্বোপরি, নিবন্ধটা প্রায় বছর পাঁচেকের পুরোনো যা তৎকালীন তথ্য ও প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গীর উপর ভিত্তি করে লিখিত। আমার মৌলিক অবস্থানের যদিও খুব একটা পরিবর্তন হয়নি, কিন্তু ২০১০ সালের আজকের এই দিনটাতে নিবন্ধটা লিখতে বসলে স্বভাবতই তথ্যের ও যুক্তির উপস্থাপনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসতো এবং লেখকের তুলনামূলক ম্যাচ্যুরিটির প্রতিফলন থাকতো নিবন্ধে। কাজেই এত পুরনো একটা লেখাকে পাঠকদেরকে প্রতিক্রিয়া জানানোর তথা মন্তব্যের জন্যে উন্মুক্ত করে দিলে আমার নিজের লেখকসত্ত্বার ওপর নীতিগতভাবে সেটা হবে একটা অবিচার। আর সে কারনেই লেখাটা শুধু পড়ার জন্যেই ফোরামে দেয়া হলো এবং মন্তব্য করার ‘check box’ কে ইচ্ছাকৃতভাবেই ‘disable’ করা হলো। তবে আপনার ধর্ম-বিষয়ক চিন্তা-ভাবনায় নিবন্ধটা বাড়তি কিছু চিন্তার খোরাক যোগাবে বলেই আমার বিশ্বাস]

আমেরিকান সিনেটের ডেমোক্র্যাট দলীয় সিনেটর ও প্রাক্তন ফার্ষ্টলেডী, হিলারী ক্লিনটনের একটা বিখ্যাত উক্তি হলো, “It needs a village to raise a child, not only parents”- যার কাছাকাছি বাংলা করলে দাঁড়ায়, “একটা শিশুকে বড় করতে প্রয়োজন পুরো একটা গ্রামের, কেবল মাত্র তার বাবা-মা নয়”।

২০০১-এর ১১ই সেপ্টেম্বরে (যা নাইন-ইলেভেন নামে বহুল পরিচিত) আমেরিকায় সন্ত্রাসী হামলা এবং খুব সম্প্রতি লন্ডনে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নিয়ে যেভাবে মাতামাতি শুরু হয়েছে এবং তারই ফলস্বরূপ ইসলাম ধর্মের সাথে সন্ত্রাসবাদকে পশ্চিমা প্রচার মাধ্যম ও এক শ্রেনীর কলামিষ্টরা যেভাবে জড়ানোর চেষ্টা করছে, তাতে অন্তত একটা বিষয় ক্রমে স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে, ইসলাম ধর্মের নামে এসব সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর বিষয়ে বিশ্বব্যাপী মুসলিম নেতৃবৃন্দ ও আলেম-ওলামাদের মনোভাব কি তা সুস্পষ্টভাবে মুসলিম, অমুসলিম তথা বিশ্ববাসীকে জানানোর সময় এসেছে। কেননা তারাই ইসলামের ধারক ও বাহক এবং তারাই হিলারী ক্লিনটনের সংগা অনুযায়ী মুসলিম কালচার, চিন্তা-চেতনা ও কার্যক্রমের “village”।

মুসলিম নেতৃবৃন্দ ও আলেম-ওলামাদের প্রতি এই আহবান জানিয়ে আমার লেখাকে এখানেই কিন্তু শেষ করে দেয়া যেত। তবে আর দশজন শিক্ষিত, বিবেকবান এবং ধর্মভীরু মানুষের মত আমিও যেহেতু মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ইদানিং চিন্তা-ভাবনা করি এবং এ বিষয়ে নিজের মত করে একটা দৃষ্টিভঙ্গীও পোষন করি, সেটাকে এখানে উল্লেখ না করে লেখাটাকে শেষ করে দেয়া কেন জানি অনুচিত বলে মনে হচ্ছে এবং অনেকটা সেকারনেই আজকের এই লেখার অবতারনা।

তবে শুরুতেই একটা বিষয় পাঠকদেরকে জানাতে চাই; তা হলো, ব্যক্তিগত জীবনে আমি যদিও একজন ধর্মপরায়ন মানুষ, তবে আজকের এই লেখাটা লিখবো একজন ধর্ম নিরপেক্ষ মানুষ হিসেবে যে আস্তিক বা নাস্তিক কোনোটাই নয়। বরং ধরে নেয়া যাক, আমি একজন ইতিহাসবিদ কিম্বা দার্শনিক যারা ধর্মকে দেখেন মানব সভ্যতার অংশ হিসেবে, কোনো ঐশরিক বিষয় হিসেবে নয়।

শুরু করার আগে আরও একটা বিষয়ে না বললেই নয়। আমেরিকার নাইন-ইলেভেন কিম্বা বৃটেনের সেভেন-সেভেন (৭ই জুলাই) এর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় যে সমস্ত মুসলমানদের জড়িত থাকার কথা বলা হয়েছে এবং যারা নিজেরাও হামলাকালীন সময়ে নিহত হয়েছেন, এরা যে আর দশজন নিরীহ যাত্রীর মত সাধারন যাত্রী ছিলেন না, এরা যে আল-কায়েদারই সদস্য ছিলেন, তা কিন্তু সন্দেহাতীতভাবে আজও প্রমানিত হয়নি। আবার আল-কায়েদার পেছনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে স্বার্থান্বেষী কোনো দেশ বা কোনো মহল আছে কিনা যারা পেছনে বসে কলকাঠি নেড়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করছে, সেরকম সম্ভাবনার কথাও অনেকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না। তবে আমি আমার আজকের লেখায় সে প্রসঙ্গে যাবোনা। বরং সার্বিক পরিস্থিতি ও প্রচার মাধ্যমের তথ্যসমুহ যে দিক নির্দেশনা দিচ্ছে, তার উপর ভিত্তি করে এটাই ধরে নিচ্ছি যে, এসব সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে সত্যিই একদল মুসলমান এবং তারা তা করছে শান্তির ধর্ম ইসলামের নামে।

প্রথমে ইতিহাস দিয়েই শুরু করি। ইসলাম ধর্মের নবী, মুহাম্মাদ (সঃ) একাধারে একজন রাসুল এবং শাষক ছিলেন। তার নবুয়তের প্রারম্ভ পূর্ববর্তী নবী, রাসুলদের মত ধর্ম প্রচার দিয়ে শুরু হলেও পরবর্তীতে অত্যাচারী আরব শাষকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শোষিত মানুষদেরকে একত্রিত করে তিনি ‘জেহাদ’ বা সংগ্রাম করেন এবং যুদ্ধে জয়ী হয়ে আরবে তিনি সুশাষন প্রতিষ্ঠা করেন। খুব সংক্ষেপে এটাই হলো ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠার ইতিহাস। মজার ব্যাপার হলো, অত্যাচারী আরব শাষকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে গিয়ে এবং আরববিশ্বে সুশাষন প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে যে সমস্ত যুদ্ধ-বিগ্রহ বা রাজনীতি তাঁকে করতে হয়েছিল, তার সবকিছুই কিন্তু ‘ইসলাম’ নয়। ছোট্ট একটা উদাহরন দিলে বিষয়টা পরিস্কার হবে। আমরা আমাদের সময়ে খুব ছোটবেলায় ক্লাস টু-থ্রী তে থাকতে পাঠ্য পুস্তকে মুহাম্মাদ (সঃ) এর মহানুভবতার একটা কাহিনী পড়েছিলাম। এক অমুসলিম বৃদ্ধা কিভাবে মুহাম্মাদ (সঃ) এর চলার পথে প্রতিদিন কাঁটা বিছিয়ে রাখতো এবং তিনি প্রতিদিন সেই কাঁটায় কিভাবে আহত হতেন অথচ বৃদ্ধাকে কিছু বলতেননা। এবং পথে একদিন কাঁটা দেখতে না পেয়ে কিভাবে তিনি বৃদ্ধার খোঁজ-খবর নিতে যান, সেবা-সুশ্রষা করেন এবং তার এহেন মহানুভবতায় কিভাবে সেই বৃদ্ধা ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে ইত্যাদি। আমরা যারা মসজিদ, মাহফিলে ওয়াজ-নসিহত শুনি তারা হয়ত এই ঘটনাটাও শুনে থাকবো যে, মুহাম্মাদ (সঃ) তাঁর সাহাবাদেরকে (রাঃ) একবার এক ভ্রষ্টা মহিলার কাহিনী শোনান কিভাবে পিপাসার্ত একটা কুকুরকে পানি পান করিয়ে সে আল্লাহর অসীম অনুগ্রহ লাভ করেছিল। ইসলামের প্রথম যুদ্ধ, বদরের যুদ্ধে মুসলিম বাহিনী সে এলাকায় অবস্থিত একমাত্র পানির কূপগুলো অমুসলিম বাহিনীর আগেই দখল করে নেয় এবং নিজেরা পর্যাপ্ত পানি পান করে ও নিজেদের জন্যে পর্যাপ্ত পানি সংরক্ষণ করে কূপগুলোকে ধ্বংস করে দেয় যেন অমুসলিম বাহিনীর কেউ একফোঁটা পানি পান করতে না পারে। অথচ তিনি ছিলেন মুসলিম-অমুসলিম, অত্যাচারিত-অত্যাচারী সবার প্রতিই প্রেরিত নবী। এটার ব্যাখ্যা কিন্তু খুব সহজ। পিপাসার্তকে পানি পান করানোর বিষয়ে তিনি তাঁর সাহাবাদেরকে যে উপদেশ দিয়েছেন, তা একজন নবীর নবীসুলভ কার্যক্রম। আর বদরের যুদ্ধে অমুসলিম বাহিনীকে দূর্বল করার জন্যে তিনি তাঁর সাহাবাদেরকে পানির কূপগুলোকে ধ্বংস করার যে আদেশ দিয়েছেন, তা একজন বিচক্ষণ সেনাপতির কার্যক্রম কেননা কোনো যুদ্ধে জয়ী হওয়ার অন্যতম একটা কৌশল হলো প্রতিপক্ষের খাদ্য ও পানীয় সরবরাহকে ধ্বংস করা। উপরের ঘটনাগুলোর মধ্যে কোন্‌টা ইসলাম এবং কোন্‌টা ইসলাম নয়, তা বুঝার জন্যে কারো বোধহয় মুসলিম স্কলার হওয়ার প্রয়োজন নেই।

আরেকটা উদাহরন দিই। আমরা অনেকে মুহাম্মাদ (সঃ) এর মহানুভবতার এই ঘটনাটাও হয়ত শুনে থাকবো যে, মুহাম্মাদ (সঃ) একবার তাঁর সাহাবাদের মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, পার্শ্ববর্তী কোনো এক ইহুদী গোত্রের এক ইহুদী যুবক মৃত্যু শয্যাশায়ী এবং তিনি পায়ে হেঁটে সেই গোত্রের কাছে পৌঁছে মৃত্যুপথযাত্রী সেই যুবকের মায়ের অনুমতি নিয়ে যুবককে ইসলামের দাওয়াত দেন এবং ইসলাম গ্রহনের পর সেই যুবক মারা যান। মুহাম্মাদ (সঃ) এতে মহান আল্লাহর প্রতি অশেষ শোকরিয়া আদায় করেন এই বলে যে, মৃত্যু পথযাত্রী এক ইহুদী যুবককে এইমাত্র জাহান্নাম থেকে বাঁচিয়ে জান্নাতে পৌঁছে দিতে তিনি সমর্থ হয়েছেন। অথচ পরবর্তীতে কোনো এক যুদ্ধে মদিনায় বাসকারী বনু কোরাইজা ও বনু নাযির নামের দুটো ইহুদী গোত্র মুহাম্মাদ (সঃ) এর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলে তাঁর আদেশে (প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ) এই দুই গোত্রের সমস্ত পুরুষকে হত্যা করা হয় যদিও তিনি তাদের প্রতিও প্রেরিত নবী ছিলেন। মৃত্যুপথযাত্রী একজন ইহুদী যুবককে জাহান্নাম থেকে বাঁচিয়ে জান্নাতে পৌঁছে দিতে যে নবীর অন্তরে এতখানি আকুলতা ছিল, সেই নবীর আদেশেই প্রাণোচ্ছল, নিরীহ অসংখ্য ইহুদী যুবক ও পুরুষকে হত্যা করা হয় ইহুদী নেতৃত্বের বিশ্বাসঘাতকতার কারনে। মদিনাকে ঘরের শত্রুদের ষড়যন্ত্র থেকে মুক্ত রাখতে, ইহুদী নেতৃত্বের চক্রান্তে পুনরায় যুদ্ধে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাকে রোধ করতে এবং যুদ্ধ পরবর্তী সম্ভাব্য জাতিগত কোন্দল ও সহিংসতা রোধে যে নির্মম রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত মুহাম্মাদ (সঃ) কে নিতে হয়েছিল, তা ছিল একজন কঠোর ও দূরদর্শী শাষকের সিদ্ধান্ত, কোনো নবীর নবীসুলভ কার্যক্রম নয়।

শাষক মুহাম্মাদ (সঃ) এর কার্যক্রম ও রাসুল মুহাম্মাদ (সঃ) এর কার্যক্রমের মধ্যে যে পৃথকীকরন সীমারেখা বিদ্যমান, সেটা হৃদয়ঙ্গম করতে না পারার কারনেই আজ মুসলমানদের একটা অংশ সন্ত্রাসকে যেমন ইসলাম প্রতিষ্ঠার পন্থা হিসেবে বেছে নিয়েছে, তেমনই করে অমুসলিমদের একটা অংশ ইসলামের নবীকে সন্ত্রাসী এবং ইসলাম ধর্মকে সন্ত্রাসবাদের ধর্ম হিসেবে পরিগনিত করে তা প্রচার ও প্রতিষ্ঠার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কিছুদিন আগে বাংলাদেশে ‘ধর্ম ও সন্ত্রাসবাদ’-এর উপরে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে জার্মানীর এক অধ্যাপকের বক্তব্যের বিষয়ে উল্লেখ করা যায়, যিনি তার বক্তৃতায় ইসলামের নবীকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। একজন নামী-দামী অধ্যাপকের এহেন অজ্ঞতা, এহেন প্রতিক্রিয়াশীলতা আমাকে স্তম্ভিত করেছে। যারা সত্যিকারের ধর্মনিরপেক্ষ ও বস্তুবাদে বিশ্বাসী এবং ধর্মকে যারা দেখেন মানব সভ্যতার অংশ হিসেবে, ইতিহাস হিসেবে, কোনো ঐশরিক বিষয় হিসেবে নয়, তাদের অনেকেই স্বীকার করেন- অত্যাচারী আরব শাষকগোষ্ঠী ও অত্যাচারী ধনাঢ্য ইহুদীদের বিরুদ্ধে শোষিত মানুষদেরকে ইসলামের পতাকাতলে একত্রিত করে মুহাম্মাদ (সঃ) যে ‘জেহাদ’ বা সংগ্রাম করেছিলেন, তা ছিল মূলত শোষিত মানুষের ‘শ্রেনী সংগ্রাম’ এবং সে যুগের দাবী। এবং পরবর্তীতে শাষক হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত সফল একজন শাষক। প্রখ্যাত মনীষী ও দার্শনিক জর্জ বার্নাড শ’ মুহাম্মাদ (সঃ) প্রসঙ্গে তাই যথার্থই বলেছেন- “If a man like Mohamed were to assume the dictatorship of the modern world, he would succeed in solving its problems that would bring it the much needed peace and happiness”।

ইসলাম ধর্ম প্রচার ও প্রতিষ্ঠা এবং ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী ও ইসলামী মূল্যবোধে অনুপ্রানিত হয়ে শাষন ব্যবস্থা পরিচালনা- এই দুই বিষয়ের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান। শাষন ব্যবস্থা পার্থিব বিষয় যা যুগের সাথে, সভ্যতার পরিবর্তনের সাথে, রাষ্ট্রের ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার কাঠামোর সাথে ক্রমপরিবর্তনশীল। পক্ষান্তরে ধর্মবিশ্বাস হলো ঐশরিক বিষয় যার সাথে যুগ, সভ্যতা তথা রাষ্ট্র ও শাষন ব্যবস্থার কোনো সম্পর্ক নেই। মুহাম্মাদ (সঃ) এর ওফাতের (মৃত্যুর) পর পরবর্তীতে তার সবচেয়ে ঘনিষ্ট সহযোগীদের মধ্য থেকে যে চারজন খলিফা হিসেবে মুসলিম বিশ্বকে শাষন করেছেন, পার্থিব বিষয়ে বেশীরভাগ সময়ই তারা একমত হতে পারেননি যদিও একই ধর্মবিশ্বাস ও মূল্যবোধকে তারা যে তাদের অন্তরে ধারন ও লালন করতেন, সে বিষয়ে কারো কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু শাষন ব্যবস্থা পরিচালনায় তাদের প্রত্যেকের চিন্তা-চেতনা, দৃষ্টিভঙ্গী, কার্যক্রম ছিল পৃথক পৃথক এবং রাষ্ট্র শাষনে তাদের যেমন সফলতা ছিল, তেমন ছিল ব্যর্থতাও। মুসলিম শাষনের ইতিহাস বেশীরভাগই নিজেদের রক্তের ইতিহাস। যেকারনে ইসলামী খেলাফত থেকে শুরু করে ইসলামী শাষনের পরবর্তী ইতিহাস ঘাটলে পারষ্পরিক সংঘাতবিহীন বা রক্তপাতহীন মুসলিম শাষন তথা ‘ইসলামী সুশাষন’ বলে সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয় বা আইডিয়াল কোনো শাষন ব্যবস্থাকে খুঁজে পাওয়া কঠিন। ‘ইসলামী শাষন’ কনসেপ্ট-এর জন্ম হয়েছে মূলত অনেক পরে এসে এবং এর উৎপত্তি নিয়ে প্রচুর বিতর্কও আছে। তবে আমি আমার আলোচনাকে সেদিকে নেবোনা।

‘ইসলামী শাষন’ কনসেপ্ট-এর জন্ম যখনই হয়ে থাকুকনা কেন এ কথা সত্যি যে, বর্তমান বিশ্বে মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোতে ধর্মভিত্তিক যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে তাদের প্রায় সবারই লক্ষ্য হলো সেদেশের ক্ষমতা গ্রহন ও ইসলামী শাষন প্রতিষ্ঠা। এদের নিজেদের ভেতর মতাদর্শের বা ষ্ট্র্যাটেজিক পার্থক্য যাই থাকুকনা কেন, অন্তত একটা বিষয়ে এরা সবাই এক- তা হলো এরা সবাই প্রতিক্রিয়াশীল, কম আর বেশী। বেশ কিছুদিন আগে সাউথ জার্সিতে ‘মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকা’ আয়োজিত এক ধর্মীয় আলোচনা সভায় আমন্ত্রিত হয়ে ওয়াজ শুনতে গিয়েছিলাম। ‘মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকা’ মূলত জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের নর্থ আমেরিকা ভিত্তিক একটা অঙ্গ সংগঠন। বক্তা ‘মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকা’র উচ্চ পর্যায়ের একজন নেতা যিনি লটারী ভিসায় এদেশে এসে দীর্ঘদিন যাবৎ স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। বক্তব্যের এক পর্যায়ে ভদ্রলোক বর্তমান বাংলাদেশ সরকারে ইসলামপন্থী দলগুলোর অন্তর্ভূক্তির কথা বলে জোট সরকারের কার্যক্রম ও সফলতার অনেক প্রশংসা করলেন এবং এরপর বিরুদ্ধাচারীদের প্রসঙ্গে, এবং পাশাপাশি আমেরিকার প্রসঙ্গে কোর’আন ও হাদিসের রেফারেন্স টেনে এনে বললেন, “আমাদের নবী মু’মিনদের প্রতি যতখানি নরম ও সহমর্মী ছিলেন, অবিশ্বাসীদের প্রতি ছিলেন ততখানিই কঠোর ও নির্মম; বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে ইসলাম ধ্বংসের যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, তাতে বিশ্বব্যাপী ইসলামের শ্ত্রুদের বিরুদ্ধে আজ আমাদেরও সময় হয়েছে কঠোর ও নির্মম হওয়ার”। বলা বাহুল্য, কথাগুলো বলার সময় তার চোখেমুখে আলোর যে বিচ্ছুরণ, যে জোশ, যে হিংস্রতা আমি দেখেছি, তা ছিল রীতিমত ‘scary’ (ভীতিকর)। কে তার শত্রু? খৃষ্ট ধর্মাবলম্বী আমেরিকানরা, যারা দারিদ্রপীড়িত তাকে ও তার পরিবারকে বাংলাদেশ থেকে তুলে এনে সচ্ছল, স্বাধীন, ধর্মীয় জীবন-যাপনের সুযোগ করে দিয়েছে আমেরিকায়? নাকি আমি, যে সংগত কারনে বাংলাদেশের জোট সরকারের অসংখ্য কার্যক্রম ও নীতির বিরোধিতা করি? একজন মানুষ কিভাবে নিজেকে জীবন্ত একটা ডাইনামাইটে পরিনত করে অসংখ্য নিরীহ প্রাণকে ধ্বংস করতে প্রচোরিত হয়, তা বুঝতে এরপর আর বাকি থাকেনা।

অথচ ভদ্রলোক আমার মতই একজন নিরীহ ছাপোষা মানুষ। জীবিকার প্রয়োজনে প্রিয় দেশ ছেড়ে আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছেন এবং এখানে ও দেশে পরিবারের জন্যে আর্থিক সচ্ছলতা নিশ্চিত করতে প্রাণান্তর সংগ্রাম করছেন। ভাবতে অবাক লাগে, কেবলমাত্র ধর্ম অনুভূতিকে ব্যবহার করে তার মত একজন নিরীহ ছাপোষা মানুষের মগজকে এমনই ধোলাই করা হয়েছে যে, ঘৃনার সেই বিষবাষ্পকে তিনি আমেরিকা অবধি বয়ে এনেছেন এবং আমেরিকার উদার, উন্মুক্ত সমাজে দীর্ঘদিন বাস করেও ধর্মীয় উদারতা ও সহনশীলতার ছোঁয়া আজ অবধি তার গায়ে লাগেনি। মুসলিমবিশ্বসহ পশ্চিমাবিশ্বে তার মত অসংখ্য মুসলমান আছেন যারা ধর্মের নামে বিদ্বেষ ও হিংস্রতার বিষবাষ্পকে সচেতন বা অবচেতনভাবে অন্তরে লাল করছেন এবং এটা একটা কালচার, একটা শিক্ষা যা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে তাদের হাইকমান্ড থেকে তাদের ব্রেইনে ধীরে ধীরে পুশ করা হয়েছে এবং দুঃখজনকভাবে যার তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিকার নেই। এই বিষবাষ্প দূর করার জন্যে প্রয়োজন হিলারী ক্লিনটনের সেই “village”- আমাদের মুসলিম নেতৃবৃন্দ ও আলেম-ওলামাদের সম্বিলিত সেই শিক্ষা যা তাদের অন্তর থেকে ধর্মীয় বিদ্বেষ ও হিংস্রতার বিষবাষ্পকে দূরীভূত করে ধর্মীয় উদারতা ও সহনশীলতাকে প্রতিষ্ঠিত করবে, যা ছিল শান্তির ধর্ম ইসলামের মূল শিক্ষা এবং ইসলামের নবীর প্রচারিত শান্তি ও সাম্যের বাণী।

লেখাটাকে এখানে শেষ করে দিতে পারলে মন্দ হতোনা। কেননা সমাপ্তিটা বেশ নাটকীয় নাটকীয় লাগছিল। কিন্তু লেখার শেষভাগে ঐ যে ‘হাইকমান্ড’ এর কথাটা বললাম, সেটা আরেকটু পরিষ্কার করে না বললে লেখাটা বোধহয় একটু অপূর্ণ থেকে যায়।

শুরু থেকে এ পর্যন্ত আমি যা যা বললাম, কোনো কোনো পাঠক তার সাথে একমত নাও হতে পারেন; সেটাই স্বাভাবিক। তবে একটা বিষয়ে আশা করি সবাই আমার সাথে একমত হবেন তা হলো, কোনো সমস্যাকে আপনি যতবেশী বিস্তৃত করে দিতে পারবেন, যত বেশী সংখ্যক মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারবেন, সেই সমস্যা নিরূপন ততবেশী কঠিন হবে এবং তার সমাধানও ততধিক কঠিন হবে।

শ্রীলঙ্কার তামিল সমস্যা শ্রীলঙ্কা ও ভারতের রাজনৈতিক সমস্যা, শ্রীলঙ্কায় তামিলদের জাতিগত সমস্যা; কোনো ধর্মীয় সমস্যা নয়। তেমনি করে তিব্বত, আয়ারল্যান্ডে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ে সৃষ্ট যে সমস্যা, তাও রাজনৈতিক ও জাতিগত সমস্যা। ইসরায়েলের ফিলিস্তিন দখল করে নিজভূমিতে ফিলিস্তিনীদেরকে উদ্বাস্তু বানানো মানবতা লংঘনের চুড়ান্ত সীমা অতিক্রম এবং বিশ্বের প্রতিটা বিবেকবান মানুষ সেকারনে আজ ইসরায়েল বিরোধী। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সমস্যা মূলত ইসরায়েল, ফিলিস্তিন, মিশর, সৌদি আরব তথা আরববিশ্বের রাজনৈতিক ও ভৌগলিক সমস্যা; স্বার্থ ও কৌশলগত কারনে যার সাথে আমেরিকাও জড়িত; এটা কোনো মুসলিম সমস্যা নয়। অথচ মজার ব্যাপার হলো, সিরিয়া, মিশর, সৌদি আরব তাদের নিজ নিজ স্বার্থে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সমস্যাকে এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা ও অষ্ট্রেলিয়ার প্রতিটা মুসলমানের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে সমর্থ হয়েছে এবং আমি-আপনি ইসরায়েল ও আমেরিকাকে আজ যে নিদারুন ঘৃনা করি তার পেছনে যা কাজ করে তার নাম যতখানি না মানবতা, তার চেয়ে অনেক বেশী হলো ধর্ম। আমেরিকার ইরাক আক্রমনের ক্ষেত্রেও তাই। আমেরিকায় স্বল্প মূল্যে তেলের সরবরাহকে অবিরাম ও সুনিশ্চিত রাখতে এবং মধ্যপ্রাচ্যে ইউরোপের তেলের ব্যবসা ও উপস্থিতিকে সংযত করতে, আমেরিকা ও আরব রাজা-বাদশাদের সম্বিলিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ‘গণতন্ত্র’ ফেরি করার নামে আমেরিকা কর্তৃক ইরাক আক্রমনকে ঘৃনার চোখে দেখেননা এমন বিবেকবান মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। তবে পার্থক্য হলো, একজন অমুসলিম ইউরোপীয়ান বা আমেরিকান মানুষ আমেরিকার ইরাক আক্রমনকে ঘৃনা করেন মানবিক কারনে; আর আমি-আপনি ঘৃনা করি অনেকখানিই ধর্মীয় কারনে। এখানেই সেই ‘হাইকমান্ড’ওয়ালাদের সফলতা যারা পরিকল্পিতভাবে ভৌগলিক, রাজনৈতিক, জাতিগত ও ব্যক্তিস্বার্থের সমস্যাগুলোকে যুগে যুগে ইসলাম ও মুসলিম সমস্যা হিসেবে পরিনত করতে সমর্থ হয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী প্রতিটা মানুষের ঘরে ঘরে সে সমস্যাকে পৌঁছে দিতে সমর্থ হয়েছে যার প্রমান বৃটেনের সেভেন-সেভেন, যেখানে চারজন সুইসাইড বম্বারের মধ্যে একজনও আরব নেই এবং ইরাক, আমেরিকা, বৃটেন, ইসরায়েল বা ফিলিস্থিনের সাথে তাদের পিতৃভূমির কোনো সম্পৃক্ততা বা বিরোধ নেই।

বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে ধনাঢ্য দেশ, আমেরিকার সুবিশাল ইকোনোমি’র ৮% হলো এককভাবে সৌদি আরবের রাজ পরিবারের টাকা। এরপর আছে কুয়েত, কাতার, বাহরেইনের…… রাজপরিবারগুলো। পৃথিবীর যে কোনো শর্তে, যে কোনো উপায়ে আরববিশ্বের এসব রাজপরিবারগুলো আমেরিকার সাথে তাদের পারষ্পরিক অর্থনৈতিক নির্ভরতা ও লেন-দেন কে বাঁধাহীন, সুনিশ্চিত ও ঝুঁকিমুক্ত রাখতে চায়। ঝুঁকিমুক্ত রাখতে চায় সেসব দেশের রাজতন্ত্রকে যেন গণতন্ত্রকামী মানুষ সেসব দেশে কোনোদিন গণতন্ত্রের মুখ দেখতে না পারে যা তাদেরকে করবে ক্ষমতাচ্যূত। আর তাই, সৌদি আরবসহ আরববিশ্বের পেট্রো-ডলারে বাংলাদেশসহ মুসলিম অধ্যুষিত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার মাদ্রাসা যেখানে ইহুদীবিদ্বেষসহ যাবতীয় মৌলবাদকে ‘breed’ (চাষ) করা হয় যেন একেকজন মাদ্রাসা ছাত্র পরিনত হয় একেকটা জঙ্গী, জেহাদী সৈনিকে। এরপর বাকি কাজটা তো সহজ। হাইকমান্ড-এর প্ররোচনায়, পরকালীন সফলতার নেশায় এসব জেহাদী সৈনিকরা সুইসাইড বম্বিং করে, নিরীহ মানুষকে হত্যা করে, বর্বরভাবে মানুষের শিরচ্ছেদ করে। আর মধ্যপ্রাচ্যের আল-জাজিরা কিম্বা আমেরিকার ফক্স নিউজ, সিএনএন, সিবিএস-এর মত তল্পীবাহক প্রচার মাধ্যমগুলো ঢালাওভাবে মূহুর্মূহু তা প্রচার করে। তাতে ইসলাম পরিনত হয় সন্ত্রাসবাদের ধর্মে, মুসলমানরা পরিনত হয় সন্ত্রাসীতে, ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ে পূর্ব থেকে পশ্চিমে, ধর্মীয় বিদ্বেষ ও ডিস্‌ক্রিমিনেইশনের ঘাত-প্রতিঘাতের শিকার হয়ে সংবেদনশীল আধূনিক শিক্ষায় শিক্ষিত অসংখ্য মুসলিম যুবক ক্রমে পরিনত হয় প্রতিক্রিয়াশীল মুসলিম যুবকে, নিজেদেরকে সমর্পন করে পর্দার আড়ালে লুকিয়ে থাকা হাইকমান্ডের অশুভ ইচ্ছের কাছে। বৃদ্ধি পায় ইসলামী সন্ত্রাস; তার সাথে পাল্ল দিয়ে বৃদ্ধি পায় সেসবের পরিকল্পিত প্রচার এবং বিশ্বব্যাপী ততধিক বৃদ্ধি পায় ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষ যা আরও বেশী মধ্যপন্থী মুসলিম যুবককে পরিনত করে চরমপন্থী মুসলিম যুবকে। এ যেন এক চক্র। এতে সমস্যার ব্যাপকতা ক্রমে বড় থেকে আরও বড় হতে থাকে। মুসলিমবিশ্বসহ সারা বিশ্বের চোখ পড়ে থাকে ইসলামী সন্ত্রাসের দিকে যা তাদের অর্থাৎ আরব রাজা-বাদশাদের ক্ষমতার মসনদকে এবং আমেরিকার সাথে তাদের পারষ্পরিক অর্থনৈতিক নির্ভরতা ও লেন-দেনকে রাখে বাঁধাহীন, রাখে ঝুঁকিমুক্ত।

ধর্ম মানব সভ্যতার অংশ। কোনো ধর্মবিশ্বাসই কারো জন্যে কখনও সমস্যা ছিলনা। তবে সমস্যা সেটা, যখন ধর্মকে পুঁজি করে রাজনীতি করা হয়, মানুষের ধর্মানুভূতিকে ব্যবহার করে ক্ষমতার মসনদে যাওয়ার নীলনক্সা করা হয়, ব্যক্তিস্বার্থ ও ক্ষমতার মসনদকে ঝুঁকিহীন রাখতে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বা ভৌগলিক সমস্যাকে কৃত্রিমভাবে ধর্মীয় সমস্যায় পরিনত করা হয়। আজকের ইসলামী সন্ত্রাসবাদ মূলত কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট একটা সমস্যা, যার আর দশটা সমস্যার মত সমাধানও আছে। কিন্তু ম্যাক্রো (macro) লেভেলে (হাইকমান্ড লেভেলে) এর যে সুপরিকল্পিত সেট-আপ (set up) তাকে একদিনে ভেঙ্গে ফেলা সম্ভব নয়। তবে মাইক্রো (micro) লেভেলে আমাকে-আপনাকে এ বিষয়ে educate করে, সাথে সাথে আমাদের “village” কে (আলেম-ওলামাদেরকে) educate করে এবং ধর্ম ও ধর্মীয় রাজনীতির বিষয়ে আমাদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করে ধীরে ধীরে ম্যাক্রো লেভেলে ভাঙ্গন ধরানো সম্ভব; সম্ভব পরিবর্তন আনা। সেটাই আমাদের যুদ্ধ; ইসলামের সুনাম রক্ষার্থে শান্তিকামী প্রতিটা মুসলমানের জন্যে আজ সেটাই আমৃত্যু ‘জেহাদ’, আজীবন সংগ্রাম।।

আব্দুর রহমান আবিদ
রচনাকালঃ সেপ্টেম্বর ২০০৫