আমি নারী বলছি-

আকাশ মালিক

(আপনারা আমার শত্রুকে চিনলেন না)

সম্প্রতি লেখিকা একা ‘নারীর শত্রু শুধু পুরুষ নয়’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ মুক্তমনায় প্রকাশ করার পর পাঠকবৃন্দের কাছ থেকে যে মন্তব্যগুলো এসেছে, তারই প্রত্যুত্তরে অথবা বলা যায়, তাদের মন্তব্যসমুহ সামনে রেখে আলোচনা করাই আমার এ ক্ষুদ্র লেখার প্রয়াস। জ্ঞানগর্ভ মন্তব্যগুলো পড়ে বারবার যেন মনে হলো, আলোচনার বিষয়বস্তু ‘ Gender inequality বা লিঙ্গ বৈষম্যবাদ’। এ নিয়ে পশ্চিমের সমাজ বিজ্ঞানী ও মনোবিজ্ঞানীগন প্রচুর রিসার্চ বা গবেষণা করেছেন এবং সীমাহীন পরস্পরবিরোধী মন্তব্যও করেছেন। সোসিয়লজির এই বিশাল এলাকা নিয়ে আলোচনা, যার অন্তর্ভুক্ত আছে Sex Discrimination/ Social status / Sexism / Masculism / Structural Marginalization / Cultural stereotypes / sexual jealousy ইত্যাদি, এত স্বল্পপরিসরে আলোচনা করে তার উপসংহার টানা যায়না। আপনাদের কিছু কিছু মন্তব্য আমার কাছে মনে হয়েছে নিদারুণভাবে লিঙ্গবৈষম্যবাদী চিন্তাধারা বা ভাবনাপ্রসুত। তাই মূল প্রবন্ধের উপর আলোচনা, সমালোচনা না করে, শুধু কিছু কিছু মন্তব্যের উপর আলোকপাত করবো। এর সাথে আপনি নারী বা পুরুষ সকলেই একমত হবেন এমনটা অবশ্যই আশা করিনা। আর হ্যাঁ এ লেখা কোন বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ নয়, শুধুই আমার মনের একান্ত ভাবনা।

না, আমার শত্রু নারী তো নয়ই কোন পুরুষও নয়, আদিকালে ছিলও না। আপনারা অনেকেই আমার শত্রুর নাম আংশিকভাবে উল্লেখ করেছেন। সে শত্রু কিন্তু শুধু আমার নয়, আপনাদেরও। আমি যদি তাকে আমার বশে আনতে পারি বা করায়ত্ব করে নিতে পারি, আমিও যে কোন শক্তিশালী পুরুষকে তর্জনীর ডগায় তুলে নাচাতে পারি। এর ভুরিভুরি প্রমাণ ইতিহাসে আছে। আপনারা আমার শত্রুকে চিনলেন না।

পুরুষ আমার শত্রু হবে কেন? আমরা দুজনে মিলে এই পৃথিবী আবাদ করেছি। আমরা পরস্পর শত্রু হলে পৃথিবী এ পর্যন্ত এগিয়ে আসতে পারতো না। পুরুষের জন্যে আমি আমার মাতা পিতা ভাই বোন জন্মস্থান আমার সবকিছু বিসর্জন দিয়ে, তার হাত ধরে ছুটে চলেছি সাগর নদী, পাহাড় পর্বত অতিক্রম করে দেশ হতে দেশ দেশান্তরে। পুরুষ আমার জন্যে পাহাড় কেটেছে, মজনু হয়ে জঙ্গলে ঘুরেছে, আমার দিকে চেয়ে চেয়ে তার আঙ্গুল কেটেছে টেরই পায় নাই, বারো বৎসর বড়শী বেয়েছে, বাদশাহী ত্যাগ করেছে। সে আমার শত্রু হবে কেন? যে অর্থে, যে অবস্থান থেকে, যে দৃষ্টিভিঙ্গী থেকে আমাকে নারীর শত্রু বলছেন, সেই অর্থে, সেই দৃষ্টিভিঙ্গী থেকে আমিও বলতে পারি, পুরুষ পুরুষের শত্রু। আর যদি ‘নারী কেন নারীর শত্রু’ এই বলে ‘সকল নারী কেন নারীবাদী হয়না’ বুঝাতে চান, তাহলে আরো বিস্তর আলোচনার প্রয়োজন, যা এখানে করা সম্ভব নয়। আপনারা আমার শত্রুকে চিনলেন না।

শ্বাশুড়ী তার পুত্রবধুর চুল চিড়েছে বলে যদি নারী নারীর শত্রু হয়, তাহলে ছেলে যে বাবাকে খুন করলো, সেটাকে কী বলবেন? পুরুষ পুরুষের শত্রু? এই অগ্নিশর্মা শ্বাশুড়ীও একদিন কাতর, নিরীহ প্রাণী রূপী কারো পুত্রবধু ছিলেন। হঠাৎ করে তার এই মানসিকতার এমন পরিবর্তন হলো কেন? আপনারাই বলেছেন, গ্রামে পুত্রবধুর উপর শ্বাশুড়ীর কর্তৃত্ব আর শহরে শ্বাশুড়ীর উপর পুত্রবধুর। কারণটা বুঝেন না? যে অপরাধে পুত্রবধু দোষী, সেই একই অপরাধে শ্বাশুড়ীর মেয়ে আমার ননদ, দোষী হয়না কেন বুঝেন না? আপনারা আমার শত্রুকে চিনলেন না।
আপনি বললেন- ‘হিংসা ছাড়া নারীর নির্মানই সম্পূর্ন না। বিবর্তনের কারনে নারীর চাই উন্নততর পুরুষ, যাতে তার সন্তানদের রিপ্রোডাক্টিভ ফিটনেস আরো ভাল হয় ’। বস্ত্রহীন ন্যাংটা যুগে ফিরে গেলে হয়তো এর দেখা মিলতে পারে, আজিকার দিনে তা অর্থহীন। তবে হ্যাঁ, যে কারণে আমাকে হিংসুকের অপবাদ দিচ্ছেন, একই কারণে সেই পরিবেশ ও সেই অবস্থান থেকে পুরুষও হিংসুক। আমার স্বামীর সারা জীবনের পরম বন্ধুটিও যদি, গায়ে হাত দেয়া তো দূরের কথা, আমার দিকে চোখ তুলে তাকায়, সে তার বন্ধুকে খুন করে ফেলবে। তবে কি আমার স্বামী পুরুষ বিদ্বেষী না হিংসুক? আমিও চাইনা আমার স্বামীটি কোন নারীর সামনে তার শার্টের উপরের বোতামটি খোলে রাখুক, পাছে কোন নারী তার বুকের লোম দেখে ফেলে। আমি নারী বিদ্বেষী না হিংসুক? আমি অবশ্যই সুঠাম দেহের শক্তিশালী, বিত্তশালী সুদর্শন পুরুষ চাই, যদিও আমি সন্তান চাইনা। আর আপনি? আপনার আমার ভেতরে কে বাস করে তাকেও চিনলেন না।
আপনি বললেন- ‘সারভাইভাল গেমের জন্যে একাধিক সমর্থ পুরুষ থেকে সন্তান নেওয়াটাই বিবর্তনের জন্যে ভাল। এই জন্যে নারী বহুগামী। সেই একই কারনে পুরুষও বহুগামী ’। স্বীকার করি হাতে গোনা দু একটি ট্রাইব সমপ্রদায়ে এর প্রচলন এখনও আছে, কিন্তু সার্বিকভাবে তা আর গ্রহনযোগ্য নয়, প্রয়োজনও নেই। আজিকার সময়ে সারভাইভাল গেমের জন্যে নারী বা পুরুষের বহুগামীতা নয়, বরং বহুগামীতার কারণ অন্য কিছু। বিল ক্লিন্টন, ডায়েনা তারা কি বহুগামী ছিলেন? আরবের নবী মুহাম্মদ আর বাংলার হোমু এরশাদের সারভাইভাল গেমের রিপ্রডাকসনটা কেমন হলো? আপনার আমার ভেতরে কে বাস করে তাকেও চিনলেন না।

‘একটি সুন্দর ষড়যন্ত্র হচ্ছে এক শ্রেনীর নারীকে অপর শ্রেণীর নারীর বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে। এইভাবে কর্মজীবি নারীর বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়া হয় গৃহিণীকে। পুরুষ বিচরণ করে ঘরে বাইরে—দু’জগতেই। আর নিজের ক্ষমতা দিয়ে নারীকে দু’দলে লিপ্ত রাখে চিরশত্রুতায়’।

আপনি কি বলতে চান, আমার নিজস্ব সিদ্ধান্তক্ষমতা বা বিচারবুদ্ধি নাই? আপনি কি বলতে চান, নারী রোবট জাতীয় কিছু, নাকি গৃহপালিত পশু? আমি যে কতো পুরুষকে পুরুষের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে জগতে কতো অঘটন ঘটিয়েছি তার খবর রাখেন। আমি যে বিশ্বের সর্ববৃহৎ রাস্ট্রের সম্রাজ্ঞী হতে পারি, আমি যে একই সময়ে ক্ষমতাসী্ন ও বিরোধী দলের নেতা হতে পারি তাকি দেখেছেন? অথচ আমি আমার নির্বাসিত নারীকে দেশে ফিরিয়ে আনি না। কারণ আমি আমার শত্রুর নিয়ন্ত্রনাধীন। আপনারা আমার শত্রুকে চিনলেন না।
‘অর্থনৈ্তিক স্বাধীনতা সব সময় যে ফলাফল ভালো কিছু বয়ে আনছে তা কিন্তু নয়। বিশেষ দরকার আমাদের সামাজিক দৃষ্টি ভঙ্গি বদল করা ’।
যুগ যুগান্তরের লালিত সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি কী ভাবে বদল করা যায়, তা তো কিছু বললেন না।
‘দেখা যাচ্ছে অর্থনৈ্তিক দিক দিয়ে স্বাধীন নারী ও কিন্তু সামাজিক পেষনে পিষ্ঠ। সুতরাং, আবার পরিস্থিতি যে তিমিরে সেই তিমিরেই থাকছে। প্রয়োজন ধর্মিয় বেড়াজাল থেকে মুক্তি, তাহলে ই দেখা যাবে অর্ধেক সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে ’।
ভুল মারাত্বক ভুল। আমি যে সমাজের ভিতরে বাস করি, এখানে ধর্মের নামগন্ধও নাই, অথচ এখানে নারীর জীবন অনেক ধর্মবাদী সমাজের চেয়েও নিকৃষ্ট নিম্নমানের। হাজার প্রকার পারিবারিক জঞ্ঝাল, নারী পুরুষের পরস্পরের প্রতি লিঙ্গবৈষম্যবাদী আচরণ, ধর্ষণ, ব্যভিচার, যৌননিপীড়ন, কী নাই এই সমাজে? ‘সিঙ্গল পেরেন্টস মাদার’ কাকে বলে দেখতে হলে আমার এলাকায় আসুন। অথচ এরা ধর্মের দ্বারা প্রলোভিত প্রতারিত নয়। আজ যদি সারা পৃথিবী থেকে সকল প্রকার ধর্ম উঠিয়ে দেয়া হয়, কাল কি নারী বৈষম্যবাদ জগত থেকে উঠে যাবে? আপনারা আমার শত্রুকে চিনলেন না।
‘ তবে আমার মনে হয় মেয়েদের অর্থনৈতিক মূক্তিই হচ্ছে সর্ব প্রকার অত্যাচার থেকে পরিত্রানের পথ’।
জ্বী না, সর্বপ্রকার নয়। উপরে আপনিই বলেছেন ‘অর্থনৈ্তিক দিক দিয়ে স্বাধীন নারী ও কিন্তু সামাজিক পেষনে পিষ্ঠ ’। ঐশ্বর্য্যশালী বিত্তশালী নারীও নির্যাতিত অপমানিত ধর্ষিতা হয়, মানসিকভাবে বিধস্ত হয়, আত্মহত্যা করে। আর যদি মেয়েদের অর্থনৈতিক মুক্তি পুরুষের অত্যাচার থেকে সাময়িক মুক্তি দিয়েই থাকে, আপনি যে বললেন ‘নারী নারীর শত্রু’ তার সমাধান কী হবে? আর্থিকভাবে সচ্ছল দুই নারী পরস্পরের শত্রু হতে পারেনা? আপনারা আমার শত্রুকে চিনলেন না।
‘বাংলাদেশ তথা কোন মুসলিম দেশের নারীদের ভাগ্যের বিন্দুমাত্র উন্নতি হবে না যতদিন না এইসব দেশের নারীরা তাদের জীবন থেকে ইসলাম (অথবা যে কোন ধর্ম) ত্যাগ না করা হয় ’।
বেঁচে থাকার নাম যদি জীবন হয়, তাহলে আমার তো মনে হয়, এরশাদের স্ত্রী বিদিশা, চার্লসের স্ত্রী ডায়েনার চেয়ে নিজামী ও সাঈদীর স্ত্রী মানসিকভাবে ভাগ্যবতীই। আর হ্যাঁ, আমি আলবৎ ধর্ম ছেড়ে দেবো, আপনি গ্যারান্টি দিন ধর্মহীনরা আমাকে সমান অধিকার দেবেন, প্রমাণ দিন ধর্মহীন সমাজে নারী বৈষম্যবাদ নাই। পারবেন না, কারণ আপনি আমার শত্রুকে চেনেন না।
‘ইসলাম ধর্মে বলা আছে কুরাণ ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অংশ, আর সর্বকালের সবসময়ের জন্য প্রযোজ্য। কুরাণে বা হাদীসে যা বর্ণিত আছে তার থেকে চুল পরিমাণ বিচ্যুত ঘটলে সে হবে “মুনাফিক”।
ধর্ম আমি আবিষ্কার করি নাই, আমার ধর্মের কোন প্রয়োজন কোনকালেই ছিলনা, আজও নাই। আমি কয়টা ধর্মগ্রন্থ লিখেছি? আমার ধর্মের নাম ভালবাসা, প্রেম, আমি শুধু তারই পূজারী। শুদ্ধ প্রেমের জন্যে আমি কাফির হতে রাজী। দেবীগণ, নবীর স্ত্রীগণ এমন কি মুহাম্মদও ধর্ম মানতেন না, আমিও মানিনা। আমি ধর্মকে ভয় করিনা। যে শত্রু আমাকে ধর্ম মানতে বাধ্য করেছে তাকে আপনারা চিনলেন না।
‘অফিস ফেরত স্ত্রীর যদি শারীরিক কারণে বা যে কোনো অফিসের ঝামেলায় মন ভালো না থাকে তথাপি তাকে স্বামীর আহবানে সাড়া দিতে হবে। প্রতিদিন কর্মজীবি নারী পুরুষ তাদের কর্ম স্থলে যায়। দেখা হয় প্রস্পরের সাথে । রাস্তায় যাতায়াত কালে নারী পুরুষের দেখা হয়। সুতরাং ধর্মীয় কারণ গুলো অনুসরণ করলে একজন পুরুষের যদি কোন নারীকে দেখে কামনার উদ্রেক হয় তাৎক্ষনিক তিনি কী করবেন? কর্ম স্থল ত্যাগ করে তাড়াতাড়ি বাড়ি যাবেন তার ইচ্ছে পুরণ করতে? অনুরুপ ভাবে একজন কর্মজীবি নারী কর্ম স্থলে থাকা অবস্থায় তার কর্মজীবি স্বামীর ডাকে সাড়া দিয়ে কর্ম স্থল ত্যাগ করবেন?
না, কোরান হাদীস দেখায়ে, আল্লাহর দোহাই দিয়ে কেউ আমাকে বিছানায় শুইতে বাধ্য করেনা, আমিও বাধ্য হইনা। এতোই যদি প্রয়োজন পড়ে আমরা উভয়েই অফিসের পেছনের কামরা ব্যবহার করতে পারি, কোনদিন কেউ হাদিস হাতে নিয়ে, অফিস ফেলে বাড়ি দৌড়া‌য় নাই। ধর্মের দোহাই দিয়ে শিশু আয়েশা কিংবা পুত্রবধু জয়নাব কয়জন ধার্মিক বিয়ে করেছেন?

‘মহিলারা কি অনেক সময় নিজেদের পণ্য করে খেলো করেন না ’?

উফ, কি নিদারুণ লিংগবাদী ধারণা! কোন্ দৃষ্টিকোণ থেকে পণ্য বলা হচ্ছে? পণ্যের কোন স্বাধীনতা থাকতে পারেনা, বিক্রীর পর সে হাত বদল হয় সে স্থানান্তরিত হয়। আমি কি সেই পণ্য? পরাধীন পরাগাছার মত ধুকেধুকে মরার চেয়ে, বেঁচে থাকার জন্যে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি, আপনি আমার সেই অধিকারটুকুও কেড়ে নিতে চান? কয়েক যুগ আগেও আমি যখন চিত্র শিল্পী, কণ্ঠশিল্পী, নৃত্যশিল্পী ছিলাম, আপনারা আমাকে শুধু পণ্য নয়, বেশ্যা মনে করতেন। আপনারা বলতেন, এই নারী দিয়ে মঞ্চের শোভা বর্ধন করা যায়, তাকে গৃহের বধু বানানো যায়না। আর আজ? আমার নামে পশ্চিমা দেশে এই শব্দের প্রচলন আর নাই, একদিন পূর্বেও থাকবেনা। ‘আমি নিজেকে পণ্য করি’ আমাকে এই অপবাদ দেয়ার আগে আমার চার পাশের শত্রুকে চেনার চেষ্টা করুন।

‘অন্তত উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে নারীদের সম-অধিকারের বিষয়ে কতজন নারী সোচ্ছার?
ইদানিং আপনারা আমার উপর বেশ ক্ষেপেছেন, আমি নাকি অতিমাত্রায় ধর্মান্ধ, ধর্মভীরু হয়ে গেছি। কথাটা সত্য নয়। আমি জন্মেছি এই পরিবেশে, আমি বড় হয়েছি এই শিক্ষায়, আমার ভেতরের ভালমন্দ যাচাই করার যন্ত্রপাতি বিকল করে দিয়েছে আমার সেই শত্রু, যাকে আপনি চেনেন না। আপনি বলছেন আমি কেন ধর্মের বিরুদ্ধে, উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে, পর্দার বিরুদ্ধে সোচ্ছার হইনা, নারীবাদী মিছিলে মিছিলে রাজপথ উত্তপ্ত করিনা। আমি কেন হিজাব, নেকাব, বোরকা পরি? আমি ধর্মকে ভয় করিনা গো, ভয় করি হাজার বছরে গড়া সেই শত্রুকে। আমি জানি অফিসের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমে আমার ঠাই হবেনা। তাই আমার শ্রমের ন্যায্যমূল্য পাবোনা জেনেও গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে যোগদান করেছি। আপনার অবস্থান থেকে প্রতিবাদী কথাগুলো বলা যত সহজ মনে করছেন, আমার অবস্থান থেকে ততো সহজ নয়।
চিনতে পেরেছেন, কে আমার শত্রু? বুঝতে পেরেছেন, আমি কী চাই?
প্রথমটির উত্তর- অর্থ আর ক্ষমতা। দ্বিতীয়টির উত্তর- কর্মস্থানে ও শিক্ষাঙ্গনে আমার সম-অধিকার।
হ্যাঁ, এটাই আমার সকল সমস্যার সমাধান? এটাই নারী মুক্তির একমাত্র শ্লোগান।