স্মরণ সভায়

 

হঠাৎ বছর তিরিশ পরে দেখা হলে তোমার সাথে…

কোনো এক স্মরণ সভায় সারম্বড়ে

যেখানে সকল আলোচনার মধ্যমণি তুমি

তোমাকে ঘিরে সব আয়োজন

আলোকসজ্জা, পুষ্পমঞ্চ, কত শত ঢঙে তোমায় অঞ্জলি

মহত্ব তোমার দাড়িপাল্লা– বাটখারায়

ভালবাসার প্লাবনে জনতার ঢল

তোমায় একনজর দেখার সুখে আর অটোগ্রাফ নিতে

 

এমনাই উচ্ছ্বসিত জনতার ভিড় ঠেলে যেতে যেতে হঠাৎ যদি দেখো

জীবন প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা বয়সের ভারে নুহ্য এক নারী –

আনন্দে হতাশায় নাকি বিহ্বলতায় ভাবলেশহীন তাকিয়ে আছে

এই বিশাল কর্মযজ্ঞের দিকে

আঙুল তুলে পরিহাস করছে

হাসছে তাচ্ছিল্যের হাসি সকলের স্তুতিবাক্য শুনে…

 

তখনও কি ফিরে যাবে স্মৃতি ধূসর ফেলে আসা দিনের কাছে?

পড়বে মনে তিরিশ বছর আগে দেখা পুরোনো সেই মুখের কথা?

 

তোমার মহত্বকে আরো বড় আয়তন দিতে

জীবনটাকে করেছে রেললাইনের পাত

চালিয়েছে স্টিম রোলার

জীবনের রেসে হেরে গিয়ে জিতিয়েছে  চিরকাল তোমায়

মেঘ বৃষ্টি ঝড়ের তান্ডব থেকে আড়ালে রাখতে

আকাশের মাপে মাপে আরেকটি আকাশ হয়ে ছিল যে

মাথার ওপড়ে;

ইচ্ছে করেই আর কোনোদিন খোঁজোনি যাকে, রাখোনি মনে …

 

সেই অস্বীকৃতি অবহেলা আর অসম্মানের ইতিহাস কেউ জানেনা

লিখেনি কেউ কখনো;

আয়োজন করেনি কোনো আলোচনা কিম্বা স্মরণ সভার…..

দেয়নি  পুষ্পার্ঘ, পায়নি কোনো স্তুতিগান

 

এত্তোসব আয়োজনে নয়-

অকাতরে ভালবেসে তোমায়

ঘৃণাটুকুও যত্নে রেখেছে হৃদয়ের মণিকোঠায়

কতটা ম্লান হতে পারে এই স্মরণ সভা আজ তাঁর পায়ের  ছোঁয়ায়?