আমার নিস্পাপ তুমি…
আব্দুল্লাহ-আল-মামুন

একবার তুমি নীল শাড়ী পরে,
মেঘ দেখতে এসেছিল।
আমি নীল পরী ভেবে ভুল করেছিলাম।
মুহুর্তেই আমার বুকে জমাট বাঁধা নীল কষ্টগুলো
উড়ে গিয়েছিল তোমার নীল আঁচলের
আবেগী বাতাসে।

নীলা তোমার মনে আছে? একদিন তুমি
সাদা শাড়ী পরে,
আমার সাথে পুর্ণিমা দেখতে বেরিয়েছিলে।
বিশ্বাস কর, আমি একটি বারের জন্যেও
ঐ চাঁদের দিকে
মুখ তুলে তাকায় নি,
আমার তাকানোর প্রয়োজন পড়েনি।
সেদিন আমি তোমায়
চাঁদ ভেবে ভুল করি নি নীলা,
কারণ আমি জানি চাঁদ কলংকিত
কিন্তু আমার তুমি, নিস্পাপ, মহা পবিত্র।

পহেলা ফাল্গুন। টি.এস.সি তে বসে কবিতা পড়ছি,
আর তোমার জন্যে অপেক্ষা করছি।
হঠাৎ হলুদ শাড়ী পরা তোমাকে দেখলাম,
শান্ত, নিশ্চিন্ত ভঙ্গিতে আমার দিকে আসছ।
মুহুর্তে আমি আমার হলুদ পাখিটিকে নিয়ে
হারিয়ে গিয়েছিলাম দূর অজানায়।
তুমি এসে গায়ে হাত দিয়ে ডাকলে,
আমি আবার ফিরে এলাম
আমার প্রাণপ্রিয়, আদুরে পাখিটির কাছে।
জানো নীলা, সেদিন আমি তোমায়
হলুদ পাখি ভেবে ভুল করি নি।
ঐ দিগন্ত বিস্তৃত খোলা আকাশ,
চিৎকার করে ডেকে বলেছিল,
আসো, আমার বুকে ডানা ঝাপটাও,
উড়ো, আমাকে ধন্য কর।
কিন্তু তুমি ঐ ঈর্ষাপরায়ণ আকাশকে নয়
আমাকে ধন্য করেছিলে।

“নীলা শোনো, লাল শাড়ীতে তোমাকে
দারুন মানায়, যেন এক
প্রস্ফুটিত নিস্পাপ গোলাপ।”-একবার তোমাকে
ডেকে বলেছিলাম। তুমি
শুধু হেসেছিলে কিন্তু অবাকও হয়েছিলে
যখন এক হাজার একটা তাজা গোলাপ,
আমার গোলাপের পায়ের নিচে সঁপে দিয়েছিলাম।

বিশ্ব বিধাতা নিজ হাতে তোমায় সূষ্টি করেছেন
প্রকূতির সমস্ত সৌন্দর্যকে লজ্জা দিতে,
আর তাইতো ঐ কলংকিত চাঁদ
আমার নিস্কলংক তোমাকে দেখে মেঘের আড়ালে লুকোয়,
বাগানের ঐ ফুল লজ্জায় ঝড়ে যায়।
বিধাতা আমায় করুণা করে তোমাকে দান করেছেন।
বিধাতার কাছে আমার জীবনের শেষ চাওয়া,
এ দান যেন আমার জীবন দিয়ে হলেও
অক্ষত রাখতে পারি।