এই নিবন্ধটি ১৯৯৮ সনে লিখেছিলাম ও সে বছরের এপ্রিল মাসে ওয়াশিংটন ডিসি এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাইদের সম্মিলনে আমারই সম্পাদিত স্মারণিকায় প্রকাশ করেছিলাম একই নামে। ঐ বছরের মাঝামাঝি দেশে গিয়ে নিবন্ধের অন্যতম চরিত্র আনোয়ার ভাইকে একটি কপি দিয়ে অনুরোধ করেছিলাম এর তথ্যগুলোয় গড়মিল থাকলে তা শুধরে আমাকে জানাতে। পরের বছর আবার ঢাকায় গেলে তিনি বলেছিলেন যে, এই নিবন্ধের অন্যান্য যেসব চরিত্র ঢাকায় আছেন তিনি তাঁদের একত্র করে এটি সবাইকে পড়তে দিয়েছিলেন; কেউ কোন ত্রুটি পান নাই। এক যুগের ব্যাবধানে এর অনেক পাত্র-পাত্রীরই বর্তমান কর্মস্থল বদলেছে, আমি আর কষ্ট করে সেগুলো শুধরানোর চেষ্টা করলাম না। নতুন করে আবার টাইপ করতে গেলে দুয়েকটি যায়গায় হোঁচট খাওয়ায় দুটো কমা ও তিনটি শব্দ যোগ করেছি মাত্র। পুরনো মাল চালাচ্ছি মনে না করে বেশির ভাগ পাঠকের কাছেই এটি নতুন হবে বলে আমার বিশ্বাস।

:line:

জনাব আলী যাকের বললেন, আপনার সাথে আগে নিশ্চয়ই আমার দেখা হয়েছে, কোথায় বলুন তো? ঠাট্টা করে বললাম, আমার তো খুবই সাধারণ চেহারা – সর্বত্রই দেখা যায়, তাই হয়তো আপনার এমন মনে হচ্ছে। পরে বললাম আপনার স্ত্রী (সারা যাকের) আমার ছাত্রী (বায়োকেমিষ্ট্রিতে) থাকাকালীন হয়তো দেখে থাকবেন। বললেন, এ ছাড়াও আমি অন্য প্রেক্ষিতের কথা ভাবছি। কথায় কথায় ৭১ এর ঘটণা প্রবাহে চলে আসি। তিনি ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের একজন ট্রাষ্টি। আমি বললাম, পাকসেনা বা রাজাকার বধ করার মত সৌভাগ্য আমার হয় নাই কিন্তু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একজন প্রথম সৈনিক হিসাবে গর্ববোধ করি। মার্চের প্রথম সপ্তাহে নড়াইলের এসডিও জনাব কামাল সিদ্দিকীর সাথে মগবাজারে একটি আধা-তৈরী ইঁটের বাড়িতে যাই। সেখানে ডান হাতের তিন আঙ্গুল বিহীন এক ভদ্রলোক বোমা বানালেন। বোমাটি নিয়ে দূরে রেললাইনের পাশে আমরা ফাটানোর চেষ্টা করি। আলী যাকের আমাকে থামিয়ে নাটকের সংলাপ বলার ভঙ্গিতে বলে উঠলেন, কিন্তু বোমাটি ফাটলো না। অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি করে জানলেন? বললেন, সেদিন আমিও সাথে ছিলাম, আধা-তৈরী বাসাটি ছিল আমার……।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে অগ্রনী ভুমিকা পালন করে। মার্চের এক তারিখ দুপুরের খবরের পর নিশ্চিত হ’লাম, বাংলাকে স্বাধীন হতেই হবে আর অস্ত্র দিয়েই দেশকে স্বাধীন করতে হবে। সহপাঠী আনোয়ার হোসেনের উদ্যোগে ফজলুল হক হলে দুজন মিলে “সূর্যসেন স্কোয়াড” নামে একটি সশস্ত্র দল গঠন করি। উদ্দেশ্য, অস্ত্র সংগ্রহ, বানানো ও ব্যাবহার শিখে শত্রু মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত হওয়া। আমার বয়স তখন ১৯ বছর। স্বাধীনতা সংগ্রমের ঊষালগ্নে আমাদের এই প্রচেষ্টা পরবর্তিতে যুদ্ধের প্রচণ্ড ভয়াবহতার কাছে অতি নগন্য বলে বিবেচিত হবে। তা সত্ত্বেও সম্ভবতঃ সেটিই ছিল স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম সশস্ত্র প্রস্তুতি। লিখিত আকারে বা প্রচার মাধ্যমে এর বিবরণ আজও প্রকাশিত হয় নাই। বছর দুয়েক আগে সাপ্তাহিক ‘প্রবাসী’তে ডঃ নুরন্নবী তার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণে আমাদের প্রস্তুতির একাংশ উল্লেখ করেছিলেন মাত্র। সম্পুর্ণ স্মৃতির উপর নির্ভর করেই লিখছি বলে সময়, সংখ্যা ও পাত্রপাত্রীর উল্লেখে ত্রূটি থাকতে পারে।

বিকেলে হলের হাউজ টিউটর ও আমাদের শিক্ষক ডঃ আশরাফুল আলমের বাসায় যাই। তাঁর সবুজ রঙের একটা টয়োটা গাড়ী ছিল। স্যারকে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের করণীয় বুঝিয়ে বললাম, অস্ত্র বানাতে পেট্রোলের প্রয়োজন, আপনার গাড়ী থেকে তা পেতে চাই। তিনি একমত হয়েও শিক্ষক হিসাবে আমাদের এই বিপজ্জনক প্রস্তাবে সাথে সাথে রাজী হতে পারলেন না। বললাম, স্যার যদি জোর করে নেই? প্রিয় ছাত্র থেকে তিনি এমন দূর্বচন আশা করেন নাই। সদাহাস্য চেহারার মুখটা মলিন করে বললেন, আমার কিছু করার থাকবে না। খালি হাতেই ফিরে এলাম।

সন্ধ্যায় খেয়ে ডাইনিং হল থেকে বেরুচ্ছি, দেখলাম ছাত্রলীগ নেতা আব্দুর রশীদ কেরোশিনের টিন (রান্না ঘরের) নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন। থামিয়ে জিজ্ঞেস করে জানলাম, বিভিন্ন যায়গায় বিহারী ও পাকসেনারা বাংগালি নিধনে মত্ত হয়েছে, তাই তাঁর মাথায় প্রতিশোধের আগুন জ্বলছে। বললাম, প্রতিশোধে শুধু নিরীহ লোকজনই কষ্ট পাবে, আপনি বিশ্রাম নিয়ে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করুন। এবার কেরোশিনের টিনটা আমার হাতে দিন। হলের এক্সটেন্সন বিল্ডিং এর চার নম্বর রুমে আনোয়ার ভাইয়ের রুমে গেলাম। ইতিমধ্যেই তিনি সিগারেটের দকান থেকে সাড়ে ছয় আনায় অস্ত্র বানানোর আরেকটি উপাদান কিনে এনেছেন। ইলেক্ট্রিক ষ্টোভে সব মসলা চাপিয়ে আমরা এর কেমিষ্ট্রি নিয়ে আলাপ করতে লাগলাম। হঠাৎ দেখতে পেলাম আগুন! নিমেষে ছাঁদ পর্যন্ত পৌছে গেল। ধোঁয়ায় ঘরে নিশ্ছিদ্র অন্ধকার। ভ্যাবাচ্যাকার মুহূর্ত পার হতেই প্রথমে জানালা বন্ধ করলাম। হাতড়ে হাতড়ে বালতি ও কম্বল নিয়ে বাথরুমে ছুটলাম। ভেজা কম্বল দিয়ে বহু কষ্টে আগুন নেভানোর প্রায় আধ ঘন্টা পর যখন ধোঁয়া দূর হোল, দেখতে পেলাম দুজনেরই চেহারা হাবসীদের মতো কালো হয়ে গেছে। অনেক জিনিষের মতো আমেরিকা থেকে ভাইএর পাঠানো আনোয়ার ভাইএর দামী কম্বলটা পুড়ে টুকরো টুকরো হয়ে গেলেও আমরা অক্ষত দেহে বেঁচে গেলাম।

এরই মাঝে আমরা স্লোগানের সময় শেষ হয়ে গেছে বলে ছাত্রলীগের বন্ধুদের সশস্ত্র সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করতে চেষ্টা চালাই। মার্চের দুই তারিখে সূর্যসেন স্কোয়াডে ফিজিক্সের জুলফিকার হায়দার ও হাবিবুল্লাহ খান ভাই, কেমিষ্ট্রির তারেক মঞ্জুর ও বায়োকেমিষ্ট্রির রিযাযউদ্দিন যোগ দিলেন। আনোয়ার ভাই কমান্ডার ও আমি ডেপুটি। রাত ১টার পর অস্ত্র বানানোর রসদ আমরা কেমিষ্ট্রি ডিপারটমেন্টের ষ্টোর থেকে সংগ্রহ করতে রওনা হই। এখন ভাবতে অবাক লাগে আমাদের কোন টর্চলাইটও ছিল না। টিনের ক্যান ফুটো করে তার ভেতর মোমবাতি জ্বালিয়ে টর্চের কাজ চালিয়েছিলাম। গ্রামে নানাবাড়ীতে গেলে কৃষকদের এধরনের বাতি ব্যাবহার করতে দেখেছি। বহু কষ্টে দরজার গায়ে ছোট একটি পথ তৈরী হলে, তার ভেতর দিয়ে শরীরে ছোট বলে, আমি প্রথমে ষ্টোরে প্রবেশ করি। পরিচিত স্নেহশীল একটি চিৎকার শুনতে পেলাম, লেহাফরা গুম বাদ দিয়া অত রাইতে ইহানো কি করেন? দ্যাশের অবস্তা খরাপ, বাইত মা’র কাছে যান, শান্তি ফাইবো। কার্জন হলের লিচুতলায় এই গভীর রাতে অবস্থা সুবিধার নয় বুঝতে পেরে বায়োকেমিষ্ট্রি ডিপার্টমেন্টের Animal house এর caretaker গোলাম হোসেন ভাই আমাদের এসব দুঃসাহসিক কাজের নীরব সাক্ষী হয়ে থাকলেন।

ভোর রাতে দরজার বাইরে তালা লাগিয়ে আমার ২১২ নম্বর ঘরের ভেতরে ঘুমাতে গেলাম যেন সকালে ঘুমের ব্যাঘাত না হয়। আম্মা বলছেন, রুবিকে রোকেয়া হল থেকে বাড়ীতে রেখে এসে তোমার যা করার কর। স্বপ্ন দেখে ঘুম ভাংলো। তিন তারিখ ১১টার দিকে গোসল করতে যাচ্ছি, কেমিষ্ট্রির ইকবাল এসে বললো, দুজন লোক এসেছিলেন দেশের প্রয়োজনে কিছু ‘সাহসী’ ছেলের খোঁজে। আমি তোমার কথা বলেছি, তুমি ছিলেনা তাই বিকেলে ওরা আবার আসবেন।

বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তখন প্রতিদিন বেলা ২টা পর্যন্ত হরতাল পালিত হচ্ছে। হলের গেটে আমার হাতে একটি লোহার রড। বায়োকেমিষ্ট্রির সিরাজুল হক মজুমদার ভাই বললেন, আশরাফ রড দিয়ে কি দেশ স্বাধীন হবে? বললাম তা হবে না, তবে দেশকে পরাধীনতা থেকে মুক্ত করার আমাদের যে ইচ্ছা বা সাধ, তা জন্ম দেবে সাধ্য। আর সাধ্য দিয়েই দেশ স্বাধীন হবে। আপাততঃ রডটি আমার সেই ইচ্ছারই এক প্রকাশ। হরতাল শেষ হতেই অস্ত্র বানানোর মশলা যোগাড় করতে দুটো বেবীট্যাক্সি করে আমরা সাতজন রওনা হলাম। গন্তব্য পুরনো ঢাকার একটি কেমিক্যাল সাপ্লাই ষ্টোর। আত্মরক্ষার্থে আমার লোহার রড ছাড়া আনোয়ার ভাইয়ের কাছে একটি রিভলবার আর রিয়াজের হাতে মুরগী জবাই করার একটি ছুরি – রিয়াজ তখন ডাইনিং হলের কর্মকর্তা ছিল। আমাদের ধমনীর ভেতর প্রবাহিত রক্তের গতি তখন আলোর গতিকে ছাড়িয়ে গেছে। গন্তব্যে পৌঁছে নিমেষে কাজে নামলাম। দুজন থাকলো রাস্তায় বেবীট্যাক্সি পাহারায়, দুজন একটু ভেতরে কিন্তু দোকানের বাইরে, আমি দোকানের সামনের অফিসে টেলিফোনের পাহারায়, আর আনোয়ার ভাই ও আরেকজন ভেতরে গুদাম এলাকায়। প্রাথমিক চমক কেটে যেতে দোকানীরা আমাদের মহৎ উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে নিজ থেকেই সহযোগী হয়ে উঠলেন। অবাংগালির কয়েকটি দোকান দেখিয়ে সেখানে না যেতে আমাদের পরামর্শ দিলেন। দশ মিনিটের কম স্থায়ী এই অভিযান শেষ হলে ফিরে রসদগুলো আমরা বিভিন্ন যায়গায় লুকিয়ে রাখি। ভাবনার কোন সীমানা নাই, যদি থাকতো তবে সূর্যসেনের চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের সাথে আমাদের আজকের সফল অভিযানের তুলনা করে পুলকিত হতাম না।

বিকেল ৫টার দিকে ইকবালের কথামত দুজন লোক এলেন। একজন কামাল সিদ্দিকী, নড়াইলের এসডিও বলে পরিচয় দিলেন। দীর্ঘদেহী বুদ্ধিদীপ্ত চেহারার অপরজনের পরিচয় এখন মনে নেই। তাদের মুখে দেশের পরিস্থিতিতে আমাদের মনোভাবেরই প্রতিধ্বনি শুনতে পেলাম। ঠিক লোকের সন্ধান পেয়েছেন বলে তাঁরা খুব খুশী হয়েছেন বলে মনে হোল। অস্ত্র বানানোর শিক্ষা দেয়ার জন্য আমাদের কোথাও নিয়ে যাওয়ার জনাব সিদ্দিকীর প্রস্তাবে আমি রাজী হলাম। দুজনেই মার্চের ৪ বা ৫ আবার হলে আসেন সকালে। ইতিমধ্যে আবদুর রশীদ ভাই, বায়োকেমিষ্ট্রির নুরন্নবী ভাই ও আমিনুল হক ভাই আমাদের স্কোয়াডে যোগ দিয়েছেন। পায়ে হেঁটে আমরা ৬/৭ জন রওনা হলাম ১ বা ২ জনের ছোট ছোট দলে। হাইকোর্টের পাশ দিয়ে, কাঁকড়াইল, রমনা গার্ডেন, শান্তিনগর হয়ে মগবাজার রেললাইনের পাশে আধা-তৈরী ইঁটের লাল একটি বাড়ীতে আমরা সমবেত হই……।

মাত্র দুদিন পরেই আমাদের কাজের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি হিসাবে বজ্রকন্ঠে নির্দেশ এলোঃ ‘তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাক। শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে……’।

যুদ্ধ শেষে এই হলের গেটে দাঁড়িয়েই সিরাজভাই আবার বলেছিলেন, আশরাফ, সত্যি ইচ্ছা দিয়েই দেশটা স্বাধীন হোল। দীর্ঘ ছয় বছর কাটিয়ে ফজলুল হক হল ছেড়েছি সেই চুয়াত্তর সনে। এর আকর্ষণ এখনো ছাড়ে নাই। সুযোগ পেলেই হলের চার নম্বর রুম, ২১২ নম্বর রুম, মেইন গেট, সিগারেটের দোকান ও ডাইনিং হলের সামনে কিছুক্ষন দাঁড়াই। নির্মল চেহারার ছাত্ররা উৎসুক দৃষ্টিতে তাকায়। সময়ের ব্যাবধানে ও জীবনের প্রয়োজনে সাথীদের কেউ কাছে থাকে না। লাল দেয়ালের গা বেয়ে চুঁয়ে চুঁয়ে জল পড়ে। আমার স্মৃতি, আমার আনন্দ-অহঙ্কার-বেদনা আমারই বন্ধ অনুভুতির কুঁয়ায় ঘুরপাক খায়।

পরিশিষ্টঃ আলী যাকের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ইংরেজী সংবাদ বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন, পরে বাংলা নাট্য জগতে খ্যাতি লাভ করেন। ’৯৫ সনে তাঁর নাট্যদল নিয়ে ওয়াশিংটনে এসেছিলেন। কামাল সিদ্দিকী প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সচিব ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে আনোয়ার ভাই ১১ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেন কর্ণেল তাহেরের সহযোদ্ধা হয়ে, এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। নূরন্নবী ভাই কাদের বাহিনীর অন্যতম মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে খ্যাতিলাভ করেন, বর্তমানে নিউজার্সিতে পামোলিভ কোম্পানীর ম্যানেজার এবং নিউইয়র্কের সাপ্তাহিক প্রবাসীর প্রেসিডেন্ট ও ম্যানেজিং এডিটর। ডঃ আশরাফুল আলম নর্থ ক্যারোলাইনায় এলিযাবেথ সিটি ষ্টেট ইউনিভার্টির প্রফেসর। রশীদ ভাই, তারেক, আমিন ভাই, যুলফিকার, রিয়াজ ও হাবিবুল্লাহ ভাই দেরাদুনে সামরিক শিক্ষা নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেন। এদের শেষ তিনজন দেশে সরকারী চাকুরি করছেন। রশীদ ভাই যুদ্ধে আহত হন, পরে হলের ভিপি হয়েছিলেন। তারেক ঢাকায় ইউনিয়ন কার্বাইড এর প্রধান ও আমিন ভাই ব্যাবসায়ী। গোলাম হোসেন ভাই এখনো আগের কাজ করছেন, বার্ধক্যের কাছে মাথা নীচু করেন নাই। আম্মা ’৯৪ সনে মারা গিয়েছেন। রুবি, আমার ছোটআপা ঢাকার একটি কলেজে অধ্যাপনা করেন। ইকবাল বাংলাদেশে সরকারী কৃষিবিভাগে বিজ্ঞানী। সিরাজভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োকেমিষ্ট্রিতে অধ্যাপনাকালে হৃদরোগে মারা যান ’৮৯ সনে।