রাস্তায় হাটছি আমি, বন্ধুর সাথে দার্শনিক আলাপে মত্ত-
চোখের সামনে দেখি, এক এক-কাপুড়ে মহিলা ফুটপাতে,
গোটাসোটা হয়ে শীতে কুকড়ে মরছে, অথচ হৃদয়ে ব্যাকুল তাগিদ সত্ত্বেও
এই আমি নির্বিকার ফ্যালফ্যালানো দৃষ্টি ফেলছি তার দেহটাতে।

কি আশ্চর্য, আমি অথর্ব?….কৈ না তো;
এই একটু আগেই প্রেমালাপের জন্য ফ্লেক্সি করলাম তো।

অথচ এই আমিই ‘মুক্তমনা’য় মন্তব্য করে
শীতবস্ত্রের জন্য আহবান জানাই,
ভাব করি, যেন লোক আমায় ‘মহান’ ঠাউরে।

হাটছি আমি, দেখি আকাশে রূপালি চাঁদ-
আমার হৃদয় আর নয়নজোড়া মোহিত করে;
কি আশ্চর্য! অন্য লোকেরা নির্বিকারঃ হাটছে, সিগার ফুকছে,মত্ত ব্যবসায়িক আলাপে-
‘রূপালি স্নিগ্ধতা’ তাদের চোখে না ধরা পড়ে।

ভাবছি, সবাই যখন ভাবছে ‘বাস্তব’ কথা
‘পরাবাস্তব’ রূপালি চাঁদে তাই কেন এত মাথাব্যাথা।

“পেট পুরে খাবার সাধ্য নেই- কত্ত বড় আহম্মক!
চাঁদ কি তোমার বনে যাবে রুটি রুজির সংগ্রাহক?”

– তাইতো…. কি দরকার স্বপ্ন জগতে ঘোরার;
‘খাও-দাও-ফুর্তি কর’ – এটাই হোক মন্ত্র সবার ! !

অথচ যখন বয়স হৃদয় আবেগের;
রঙ্গিন চশমা দিয়ে জগত দেখার –
রাতের আঁধারে ঐ চাঁদই শেখালো
নির্ভয়ে পথ চলার।

যেদিন আমি চাঁদকে প্রথম ‘সোনার থালা’ ভাবি,
চলার পথে সকল সময়ে অনড় মুখচ্ছবি;
চাঁদমামা অভয় দিলঃ “যেখানেই যাবি-
একই রূপে, একই কায়ায়, আমায় সাথে পাবি”।

যদি চাঁদের আলোর অভয় বানি হয় পরম বাস্তব,
তোমরা কেন গালি পারঃ ‘রূপালি আলো- চরম পরাবাস্তব’?