– বেমালুম ভুলে যেতে লজ্জা করেনি এতোটুকু?

ঝাঁঝালো কন্ঠ কানে ভাসলে রক্ত গরম হয়। কিন্তু করা হয়না তেমন কিছুই।
দীপ্তির তো এখনও জানার বাকি যে
চাকরি ‘নট’ হয়েছে।
আর খুকীর দুধ আনবার কথাতো বারকয়েক মনে করিয়েছে ও।

-বিস্কিটও শেষ প্রায়, চায়ে ভিজিয়ে খুকীকেও খাইয়ে দিও।

চা আর খুকীকে রেখে যে ঘরকন্নায় ব্যস্ত হল,
তার দিশেহারা ভাব কি করে কাটবে –
সে ভাবনা চাকরি খোঁজার ভাবনার চাইতেও বড়।
বিস্কিটের প্যাকেটটা হা করে তাকিয়ে,
চারটি মাত্র বিস্কিটসহ।

‘শ্রমিক ছাটাই’ শিরোনাম হয়,
‘সাংবাদিক ছাটাই’ শিরোনাম চোখে পড়েনা তেমন।
তবু একটা থেকে ছিটকে পড়ে
আরেক পত্রিকাতেই।
এখন কোথায়?
কোনটায়?
নিলয় যেন কোনটার চিফ এডিটর ?
অবশ্য সুরেনকেও বলা চলে, একটু বাঁধবে বৈকি।
কি করা যায়?

মাথা গিজগিজ করে,
কপালের ভাঁজ জটিল থেকে জটিলতর ক্রমশ।
বিস্কিটে কামড়, চায়ে চুমুক।
আবার ভাবা-
জমানো টাকায় সপ্তাহখানেক চলবেতো ?
নিদেনপক্ষে খুকীর দুধ আর খাবারটুকু।

আধো-বোলে ছোট্ট হাতের ছোঁয়ায় এতোকিছুর
পরও অবশিষ্ট মিষ্টি হাসি দেখা দেয় ঠোঁটের ফাঁকে……

হাত বাড়াতেই চমকে ওঠার পালা,
হিম শীতল রক্ত নামে মেরুদন্ড বেয়ে।
চরম ফাঁকি দিয়ে শূন্য প্যাকেট তাকিয়ে-
রক্তশূন্য মুখের দিকে।
পাশে বসে ক্ষুধার্ত খুকী
আধো বোলে কথা বলে চলছে এখনও….

৩০/১২/২০০৯