(শব্দগুচ্ছ কবিতা পুরস্কার ২০০৯-এর পাঁচ নমিনি। ১৬ ডিসেম্বর, বিজয় দিবস সন্ধ্যায়, পুরস্কার ধোষণা করা হবে।)

অনুরাধা মহাপাত্র/Anuradha Mahapatra

হাওয়ার গান

হাওয়া কি কাঁপায় পাতা? পাতাই
কাঁপায় হাওয়া—হে সুদূর, অকরুণ,
কপিশ ভেড়াটি দীর্ঘ অন্ধকার থেকে উঠে
এ-বাংলায় ঘাস খেতে এসে শোনে
ঘাস নেই—শুধু মাতলায় দাঁড়ি, চাষী
বলে ওঠে—প্যালেস্টাইনে পড়েছে যে
আফগান চিতে বাঘ—কার ঘাড়ে আছড়ায়
কার ধ্বংসের রাখ; গোলাপজামের মতো গাত্রবর্ণ
মধুর ব্যাঘ্রীরা বৈষ্ণবীর বেশে এতোদিন
গেয়েছে যে হরিকথা—গণহত্যার জাদু ধূন
অদূর ভিয়েতনাম থেকে ঘুরে ঘুরে
আরবসাগর, সিন্ধু নদ আর বঙ্পোপসাগর তীরে
ওয়াই ক্রোমোজম কিনা বলে দেবে গৌড়ের ব্যাঘ্রদেবতা।
কবিতা হারিয়ে কোনো উন্মাদ জার্নালিস্ট
কেঁপে গেছে শীত শেষ পাতার মতন।
তুমিও একাকী করো দগ্ধ পায়চারী
যেখানেই রাখে পা নভোময় হাঁস
শিয়ালের থাবা যেন শ্রান্ত রূরাই
হরিণের মতো বিদ্যুতাভ খোদিত আখিতে
দেশ-দেশান্তর, নদী বন পার হয়ে
এসেছে বুকের পাশে
সূক্ষ্ণ স্বর্ণবালি আর গর্জমান
নিরুদ্দেশ সমুদ্রের আর্ত কানে কানে
একাকী শুনিয়ে যাবে বৃষ্টির।
স্বর্ণময় শামুকটি খয়েরি চোখে শুঁড় তুলবে
হাওয়ায় আকাশে
যেভাবে বোরখা রোমাঞ্চ কম্পিত জলের রেখায়
আকাশের তীব্র বেগ উল্কাস্রোত চেনে
ঠিক কে কাকে রেখেছে চিনে উন্মাদ কাবুল ও ওয়াশিংটন?
পুরাণের অতল উৎসারিত বৃহৎ কাৎলাটি
একাকী মাতলা, নেটকো, বৈঠা, দাঁড়, অতলান্তিক
বৈঠকখানা বাজরের ম্লান আঁশবাঁটি।

ভোরবেলা শাপলা-পদ্মের আধো, পরাগমিলনে
একা একা হেসে, নীরব ভেসে ভেসে
ছায়া ক্রমে পায়ের তলায় পাহাড়িয়া রঙ হয়ে
রঙ দিয়ে, রঙ নিয়ে মেশে
সেই রঙ ককেশীয়? বাঙলা ও বিহারের সীমান্তের
ওদোলচূয়া পাহাড়ের রং হতে পারে
পাহাড় খাদানে ঝরা
পাথর-থালার কোনো প্রাচীন নিক্কনে
আমার হৃদয় শোনে ছিন্ন ঘুঘুর তান
দামোদর নদ হয়ে রূপনারায়ণে
আমার লিরিকখানি আবাদা স্টেশনে
হারিয়ে গিয়েছে কোনোদিন
হাওয়া কি কাঁপায় পাতা,
অথবা কি হাওয়া কাঁপে পাতার কাঁপনে।

ভাঙা বিন্দু

তুই ক্রমে হাওয়ায় উড়তে চাস
যে কারণে স্থির থেকে আলোপুঞ্জে
ঝাঁপ দিতে চায় সেই হাবা

তুই ক্রমে হাহাকার, হাহা, হিহি থেকে
উন্মাদিনীর, গভীর রাতে নাক্ষত্রিক পিঠে
খুঁজে নিতে চাস তোর নিরক্ষর নোটস্
আকাশের ফাটা মুখে নাক ঘষে
বিড়বিড় করে তুই একাই পড়িস
তুই ক্রমে চাস নাকি রক্তমাখা
বাতিল কর্কশ ওই খবরকাগজ

নিজেরই রক্তবমি নিজে চিনে নিস
কেনো যে খুঁজিস মুণ্ডুহীন ওই মৌন হাসি!
সিগারেট খোলে কেনো আঁকিস মুখোশ
জ্বলন্ত মদ জ্বলে, তাতে তোর যথেষ্ট আক্রোশ।

আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ/Abu Sayeed Obaidullah

চিহ্ন

বুকে করে নিয়ে এসেছি তোমার চিহ্ন
তুমি দাও না দাও এই অসীমের খেলা আমার
সন্তানের ঘুম আর জাগরণে পথ আর প্রার্থনায় একমাত্র ভাষা
কোনো রঙ নেই আকার নেই এমন দাগ
দিকচক্রবাল মাঠের অন্ধকারে নীল টানেলের দেশে
ধাবমান মোষের পালের মতো হা করে আছে

চিনি আবার চিনিনা কেমন ধূম্ররহস্যে সদা বাঁধা সদা দীপ্যমান
জন্মভর পলায়নপর এই চিহ্ন একে অপরের কাছাকাছি টানাটানি
আর পদার্থ অহমিকা বলে ঘুরে ঘুরে আলো-অন্ধকার
তাই আমরা পাশাপাশি থেকেও কতো একা কতো দূরে
এই দিকবিদিক ছড়ানো রেখা আমাদের ভেতর ব্যথা হয়ে
ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে গাছে পাতায় আকাশে আর হাওয়ায়

তোমার এটোমিক ডিজাইন ভূরসব্যঞ্জনা
চিনি আবার চিনিনা
আমরা আসি আমরা যাই মাঝখানে সদা প্ররোচনা
এই চিহ্ন মিশে যায় শতো দাগ কারবারির মহামেলায়
আর আমরা হারিয়ে যাই শতোপথে
পথে পথে তোমার চিহ্ন-প্রতিভা
কেবলই অন্য আরো বহু আগুনের সংগীত হয়ে যায়

মহাদেশ

একটি নদী হারনোর ব্যথা পথে পথে থাকে
দাঁড়ানো মাছের রঙ উড়ন্ত ডানা ঈষৎ মাতৃটান
ঘাসের সবুজে এইসব উঁকিমারা ছায়াচিত্র এক একটি হরিণ
বুকের মাঠে অন্তহীন ঢেউ খেলে থাকে
আমরা মাছ ধরাও শিখি সাথে কাঠে আগুন জ্বালানোর কৌশল
পোড়া মাংসে কি রকম শিশু জন্মানোর কাহিনী
এসব সৃষ্টি ভাবনা কাকতাড়ুয়ার বনপথে বাঘ হয়ে আসে

তখন বুককাটা সেয়ানা মেয়েমাছ বড়শিতে ঝুলে
ফুলে ওঠা খাদ্য দেখে নদীঠিকানায় দৌড়ে আসে
পরশ্রীকাতরতা ছিলো না কোনোদিন শীতরাতে ওম শিহরণে
উষ্ণ পোশাকের নিচে জনকলরবহীন মাঠে তোমাকে
পাওয়ার সাধ না লেখা কবিতার মতো
পৃথিবীর ভেতর জেগে থাকা জলকাতর এক মহাদেশ
তার ভাষাগুলো জেলিফিশ আর আবাবিল পাখি

জাহানারা পারভীন/Jahanara Perveen

সর্প, খোলস, ঘুড়ি…

সীমানার কাছাকাছি উড়ছে ঘুড়ি, ছাদের খুব কাছ দিয়ে যেমন উড়ে
যায় সামরিক প্লেন, উড়ে উড়ে একক আকাশে এক দুপুরে সুতো
ছিঁড়ে পড়ে যায় কোনো এক মগডালে, হয়ে ওঠে কাগুজে লাশ।
বেওয়ারিশ লাশের নমুনা, কাঙ্খিত নয় ডোমের কাছে, অথচ—মৃতদেহ
চিরকাল পক্ষপাতহীন। যতোটা সময়ের পর নেমে যায় স্বজনের তাজা
শোক, ততোটা দীর্ঘ নয় বিশ্বাসের আয়ু, সাপের সদ্যপাড়া ডিম একথা
বিশ্বাস করেনি নবজাতক হয়ে জন্ম নেয়া প্রসবের প্রথম প্রহরে।
সাপের খোলসে জমা বৃষ্টির পানি প্রজাপতিদের তৃষ্ণা মেটালে সেই
পূণ্যে কেটে যায় সাপের বিষের অপরাধ, ভিনভাষী এই আঞ্চলিক মিথ
পুনর্জম্মে তিল হয়ে জন্মেছে চোখের ললাটে। বহুবিধ ব্যবহারের সুযোগে
কোনো বালকের ঘুড়ির লেজ হয়ে আকাশে উড়ে যায় একটি পরিত্যক্ত খোলস,

প্রকৃত সাপের তখন মনে পড়ে সর্প ঘুড়ি ও খোলসের ইতিবৃত্ত…

নীল কেরোসিন…

অন্ধ বাতিওয়ালা পথ চিনে চিনে হেঁটে যায় চেনা গলিতে,
হাতে স্বল্পমাত্রার আগুন, ব্লাক আউটের রাত, নীল স্টোভের লাল
আগুনে একটু একটু করে আলোকিত হচ্ছে অলি-গলি। বহু প্রান্তিক হাট,
বহু বাজার ঘুরে সে কিনে এনেছে শহরের একমাত্র স্টোভ, প্রতিটি
বন্ধ জানালার আড়ালে কৌতূহলী মায়েদের প্রতীক্ষা, জানালা দিয়ে যদি
এক চিলতে আলো এসে পৌঁছে ঘরে। পৃথিবীর সর্বশেষ স্টোভ থেকে
যে আলো বেরুচ্ছে তা তাদের অন্ধ সন্ততিদের কর্নিয়া সারিয়ে তুলতে
সক্ষম। বিধবাদের গ্রাম থেকে আসা এই আগন্তুক জানেন না এ শহরের
সব শিশুরাই তার মতো জন্মান্ধ। নীল কেরোসিনের আলোর জন্য প্রতীক্ষমান।

জন্মান্ধ শিশুরা জানে এই স্টোভ অচিরেই দুঃপ্রাপ্য হয়ে যাদুঘরে ঠাঁই
পাবে। এবং একদিন রন্ধন শিল্পের নিদর্শন হিসেবে, প্রতœপ্রদর্শনীর অংশ
হিসেবে প্রবাসে যাওয়ার পথেই চুরি কিংবা পাচার হয়ে যাবে।
একদিন তার ভগ্নাংশ খুঁজে পাওয়া যাবে কোনো দূরবর্তী ডাস্টবিনে…

রহমান হেনরী/Rahman Henry

গাঢ়, ব্যক্তিগত

রূপসীর নির্ধারিত বয়স থাকে না; শুধু তার ত্বকের লাবণ্য ফুঁড়ে
ছুটে আসে হীরকদ্যুতির বিচ্ছুরণ—আমাদের ব্যক্তিগত চোখে; আর থাকে
অসম্ভব নির্লিপ্ত ভঙ্গিমা তার চোখের মণিতে—তাকে এক সহজাত
অহমিকা ভেবে, যন্ত্রণায়—নিরিবিলি বিষন্নতা—নষ্ট হলো অনেক
কবিতামগ্ন স্বপ্নপ্রহর; নষ্ট হলো কবিতার দিন। জীবিতের সাথে
বহু গল্প হলো মৃতদের নিয়ে—গামর ধানের ক্ষেতে কতো কতো
ব্যাঙডাকা ভোর—প্রাথমিক বিদ্যালয় পার হলে নিয়মিত আখবন,
তারপাশে সারিসারি অই তো কবর! কবরে কবরে জাগে ঘাস—
কবরে কবরে জাগে জীবনের স্মৃতি…এইসব মিহিকথা, কোনও দিনও
রূপসীর কানে কানে বলাই হলো না—শুধু তার ত্বকের লাবণ্য থেকে

ঠিকরে বাহিরে এলো বিদ্যুতের লোভ বিচ্ছুরণ; আর আমাদের
শহরে স্থাপিত এই গ্রামময় চোখগুলো—হারালো সাবেক মসৃণতা—

রূপসীর বাস্তবিকই বয়স থাকে না; ফলে, বয়স ও গঠনশৈলিভেদ
নির্লিপ্ত মার্বেল চোখে হেঁটে গেল সারিবদ্ধ, কবরের পাশ দিয়ে
মুখর সন্ধ্যায়; জীবনের গল্প তাতে দীর্ঘ হলো, সমগ্রতা পেল—

শুধু এক ব্যক্তিগত কবরের পাশে আজও শ্বেতকাঞ্চনের গাছ;
ফুটে থাকা নৈঃশব্দ্যে—গাঢ় হলো অন্তর্গত অশ্র“র আওয়াজ—

বখতিয়ারের ঘোড়ার খুরের শব্দে

দীর্ঘ ঘুমের পর—ঘোড়ার খুরের শব্দে কেঁপে উঠছে
চল্লিশেই পরাজিত পুরনো কবর; কেঁপে উঠছে ঘুমন্ত শিশুরা—
সকালে, দুপুরে, রাত্রিকালে—ভেঙে যাচ্ছে পাখিদের
নিভৃত সংসার…ঘুঘুদের, বুলবুলির, ডাহুকের গ্রামে
লেপ্টে যাচ্ছে খাখা শূন্যতার মোম—ঘোড়ার খুরের শব্দে স্বপ্নবনে
অজন্মার গ্রাস; শব্দশাসিত ঢেউয়ে, রেশন-বাতাসে, এহেন শরতে—
শাপলা-ফোটার দিন নিখোঁজ সংবাদে সমাহিত; অথচ
আশ্চর্য কথা! দাপানো ঘোটকদৃশ্য শিশুদের প্রিয় অভিলাষ—
তারা অই বহুবর্ণ ঘোড়ার কেশর ছুঁয়ে বড় হতে চায়;
একদিন নিজেরাও বর্ণিল ঘোড়া হতে চায়Ñফুটন্ত যৌবনে—

ঘোড়া এলো—পঞ্চম বারের মতো; আস্তাবল ফেলে—
এতো ঘোড়া কোথা থেকে আসে? ঘোড়ার খুরের শব্দে
মৃতদের নিদ্রাভঙ্গ হলে—অনিচ্ছায়, আড়মোড়া ভেঙে—
চল্লিশের পুরনো কবর ভাবে—এই কথা; পাখিরাও ভাবে—

রাজাদের এতো এতো ঘোড়া? নাকি অই ঘোড়ারাই রাজা?

শম্ভু রক্ষিত/Sambhu Rakshit

গাঁয়ের চাষাভুষোরা আবার

প্রত্যেকটি পৃথ্বীর নিচে একটি করে পাহাড় গড় রয়েছে
এবং কবিতা কি? গাঁয়ের চাষাভুষোরা জানে না,
তাদের যে যা বোঝায় আর কি!

তাদের সকল স্পর্ধার শক্তি এবং গুটিয়ে থাকা ফুসফুস
তাদের ছোট ধাইমার দূরবীন দিয়ে দেখা সৌজন্য
যা বলা যায় তাই করে।

মহার্হ ঝুনঝুনি নাড়া বৃক্ষের উপবাসী চোখ, শহরের সম্মুখভাগ
অতোটা বড়ো নয়
প্রকৃতির আঁচলাপাতা-কুশল
মিথুনজননীর স্পর্ধা
তাদের বাহুর উপর দৌড়ে এসে উঠতে পারে—
ভিলাই সংগীত, খেলনাপাতি করাত, চোঙা রেকর্ড, ফোনোগ্রাফ
এবার কি এদের সহায়তা করা যেতে পারে?
ঘুটগেড়িয়ার ওই-ধাতু তৈরী হতে যে-উপকরণ লাগে
সে-সমস্তই এদের আত্মীয়বর্গের জানা হয়েছে
বাস্তবিক কাছেই বারুদ ফাঁপা লোহার গোলার মধ্যে
এদের আত্মীয়বর্গ ব্রক্ষা গৃধ্র ছুরি নিয়ে মহাযজ্ঞ সারছে।

আর যাদের উদাসীনতা আজ দু’হাজার বর্গমাইলের খাদ্যসম্ভারের উপর
যাদের দাদা মহাশয় কিংবা বড়োদাদা তাদের টিপ্পনীকার ও প্রযোজক
বা যারা ক্ষেপনাস্ত্রর পাথর তারামণ্ডলের কাছ থেকে এখানে এনেছে
বলে দাবি করছে,
মজা, তাদের যৌবন পড়ে গেছে।
মজা, গাঁয়ের চাষাভুষারা আবার কবিতার মধ্যে
একটা প্রাকৃত জানোয়ার কুড়িয়ে পেয়েছে
মজা, তারা শহরের মঞ্জিলে এসে পড়লো।

বুদোআর

কাগজের তৈরি এক পতঙ্গের দূত তাকে পরীক্ষা করতে টাট্টু ঘোড়ার মত
ছুটে এসেছে এক পরীক্ষক টুপি। ভ্রমণ করতে এসেছে এক শয়তানী তরুণীকে
নিয়ে কোটপরা এক অ্যালসেশিয়ান কুকুর। এবং বধ্যভূমি সংঘের এক দজ্জাল
মোরগকে নিয়ে নিচের তলায় শুয়ে আছে শিকার দেশের এক কয়েদি।
সবুজ শস্যের রোমাঞ্চকর ফুটপাতে পড়ে আছে এক জাহাজবাদক ছুতোর
মিস্ত্রী। চিরকুমারদের পোশাকের এক দোকানকে আদেশ করছে এক
লটারী-বিজ্ঞান গবেষক। এবং কর্তব্যপরায়ণ এক ট্রাফিকের ঘাড় সেঁটে
ধরেছে এক শিকারী জাহাজের শেয়ারের মালিক। আর উড়ন্ত এক আস্তাবলে
এক চিতাবাঘকে দেখে কাঠ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দঙ্গল গাঁয়ের এক পাদ্রী সাহেব।
এক পিটপিটে ভাল্লুকের সন্ধিহাড় কেটে এর অদ্ভুত শিস তৈরি করছে
এক রহস্য চমৎকারিতা ও শিরচ্ছেদ-এর পরিচালক। এক খালাস পাওয়া
ভবঘুরের পকেটে গিয়ে পড়েছে ক্রুশনাট্য আন্দোলনের পুরোহিত। পূজো
সংখ্যার এক ম্যাজিক লেখককে কবরখানায় দিয়ে এল এক অ্যালুমিনিয়ামের
সসপেন। এক শোকাতুরা মাতার পুণ্য নোটবুক দেখছে এক রাস্তার তোরণ।
এক কলোনিনির্মাণ ইতিহাসকে কান ধরে হিড়হিড় করে
টেনে নিয়ে যাচ্ছে পোস্ট অ্যান্ড টেলিগ্রাফের এক অদৃশ্য থিসিস।
এবং জোব্বা পরা এক হিব্র“ পাশ পণ্ডিতকে দেখে চিৎকার
করছে এক রুশ দ্বীপের গোবৎস। আর এক কালো মানুষ খেকো পাথরসিংহ
ধরেছে প্লাস্টারের আবক্ষমূর্তির গান। আর সেই ব্যান্ডেজ মোড়া সরু গলির
গ্রহগুলো থেকে উঠে আসছে বঙ্গদেশীয় আর্য-সভাপতি।
এক সরু এঁড়ে গলি যার এক্কেবারে শেষে এরোপ্লেন জাহাজ ঝোলানো
পাশাপাশি দুটো রেডিমেট বাড়ি একটা নকশার একটা মানচিত্রের।

(কবিদের নামের বাংলা বানান অনুসারে সাজানো)