[ ২০৬ টি প্রবন্ধের সংকলন যা ২০০৫ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে লিখে ছিলাম-এই লিংকে প্রকাশ করলাম]

চোখের সামনে প্রকাশনার বিবর্তন যত দ্রুত ঘটছে- আমি মাঝে মাঝে নিজেই ভাবি দশ বছর বাদে ভবিষ্যত কি? মনে মনে লিখতে হবে না ত?

২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাসে একটা ছোট গল্প লিখে মুক্তমনা তথা বাংলা ওয়েবে খাতা খুলেছিলাম। তখন ব্লগ ছিল না। পিডিএফ করে সার্ভারে পুরে অভিজিত মুক্তমনায় আর কুদ্দুস খান ভিন্নমতে প্রকাশ করতেন। অভিজিতের উৎসাহেই বাংলায় লেখার চেষ্টা শুরু করি। ‘৯৫ সালে শেষ বাংলা লিখেছিলাম-তারপর ২০০৫ সালে এসে বাংলায় দুটো বাক্য ঠিক ঠাক লিখতে পারব-সেটাই ভাবতে পারতাম না। অভিজিত সেই সব অজস্র বাংলা বানান ভুলে ভরা লেখা ছাপিয়ে আমাকে ক্রমাগত উৎসাহ দিয়ে গেছে। অভিজিত মুক্তমনা প্রকাশনাটা না চালিয়ে গেলে, আমার বাংলায় লেখা লেখি কোন কালেই সম্ভব হত না। আমার মতন আরো অনেক বাঙালী লেখকই অভিজিতের কাছে এই ব্যাপারে চিরকৃতজ্ঞ থাকবে, সে ব্যাপারে আমি নিঃসন্দেহ।

মৌলবাদের বিরুদ্ধেই মূলত লিখে গেছি এই সময়। আসলে এই সময়টা বাংলাদেশে বি এন পির সময়কাল এবং ইসলামিক মৌলবাদ তার সহস্রফণায় আমাদের ভীত করে তুলেছিল। পাশাপাশি গুজরাটের দাঙ্গার টাটকা ঘা তখনও দগদগে। ফলে ধর্মীয় মৌলবাদ বিরোধি লেখাই এই সময়টাতে অনেক বেশী লিখেছি। সেটাই ছিল সময়ের দাবী। তবে আমি বরাবরই সমাজ এবং নৃতত্ব বিজ্ঞান দিয়েই ধর্মকে বোঝার চেষ্টা করে আসছি। এছারাও এই সংকলনে অনেক নারীবাদি প্রবন্ধ আছে। আসলে আমার কাছে ধর্মটা মূলত পুরুষতন্ত্রের ম্যালাডিস হিসাবেই প্রতিভাত। তাই এতগুলি নারীবাদি লেখা বাইপ্রোডাক্ট হিসাবে এসে গেছে। তবে যাদের যৌনতা নিয়ে শুচিবাই আছে, তারা নারীবাদি লেখাগুলো না পড়লেই ভাল করবেন কেন না তা আপনাদের রক্ষনশীল মনোভাবে ভীষন ভাবেই আঘাত করতে পারে।

আন্তর্জাতিক রাজনীতি, বিশেষ করে, মার্কিন সম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে একটা সিরিজ লিখছিলাম। ১১টা কিস্তি লিখে আর শেষ করি নি। আমি ইরান, ইস্রায়েল, আমেরিকা-আসলে এদের কাওকেই পছন্দ করি না। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বিশ্লেষনের ক্ষেত্রে, বেশ কিছু ভুল করেছি আগে। মুম্বাই এর ২০০৬ সালের বিষ্ফোরনের পরে আমার মনে হয়েছিল যেহেতু বি এন পি সন্ত্রাসবাদি পুষছে ( যা এখন খুব ভাল ভাবেই প্রমাণিত) , সেহেতু ভারত সরকারের উচিত সন্ত্রাসবাদি ক্যাম্পগুলোতে ইস্রায়েলের স্টাইলে বোমা বর্ষন করা । এই নিয়ে ফরিদ ভাই এর সাথে বাদ-বিতন্ডাও হয়েছে। আমার এই বিশ্লেষনে ভুল ছিল। এই জন্যে নয়, যে আমি কোন দেশের সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করি। কারন আমার ধারনা রাষ্ট্রের অস্তিত্ব অতি দ্রুতই বিলুপ্ত হবে । তাই উত্তর আধুনিকতার প্রতিনিধি হিসাবে জাতিয়তাবাদ পরিহার করে চলার পথপ্রদর্শক আমাদেরই হওয়া উচিত। আমার আসলে ভুলটা হয়েছিল এই জন্যে যে গণতান্ত্রিক সরকারের নেপথ্যের কুশীলবদের চিনতাম না তখন। পরবর্তীকালে আমি সখের সাংবাদিকতা শুরু করি ( আমি লস এঞ্জেলেস প্রেসক্লাবে কার্ডধারী জার্নালিস্টও হয়েছি) । সরকার, মিডীয়া এবং ব্যাবসায়ীদের মধ্যে নেক্সাস, যা আমাদের সব কিছু নিয়ন্ত্রন করে, সেটা বেশ ভাল ভাবে টের পেতেই অনেক ভুল ভেঙে গেছে। ফলে দিল্লী এবং ওয়াশিংটনে আসল খিলাড়িদের জানার পরে, এই ব্যাপারে আমি নিশ্চিত হই যে মেইন স্ট্রীম মিডিয়া সবদেশেই যেভাবে ঘটনাটা খাওয়ানোর চেষ্টা করে-তা একধরনের আই ওয়াশ। সব রাজনীতিই আসলে পুতুল নাচের ইতিকথা। পুতুলই আমরা দেখি-সুতো আর খেলোয়াড় আমাদের চোখে পড়ে না। তাই বি এন পির কিছু নেতার জন্যে আমার উগ্র জাতিয়তাবাদি অবস্থান নেওয়া বেশ ভুল ছিল। ভুলের মধ্যে দিয়েই আমরা শিখি-এবং এই শেখাটাই উত্তোরনের একমাত্র পথ। তবে ভুল ঠিক-সব লেখাই দিলাম।

এখন বাংলা লেখা আরো সহজ হয়ে গেছে, অভ্র ফন্ট আসার পর। নিজের ব্লগে লিখে সোস্যাল নেট ওয়ার্কিং ফোরাম গুলোতে ছেড়ে দিলেই কাজ শেষ। ইনফর্মেটিভ লেখা আমি লিখি না-কারন আমার ধারনা লোকে গুগুল করে সব ইনফর্মেশন জোগার করতে পারে। এবং সেটাই হবে ভবিষ্যতে তথ্য সংগ্রহের মডেল। তাই তথ্য শুধু বিশ্লেষনের জন্যেই ব্যাবহার করা উচিত। ব্যাক্তিগত উপলদ্ধি এবং অনুভুতির জগতটাকে আমরা আজ সোস্যাল মিডিয়ার জন্যে যত ভাল ভাবে জানছি-তা আগে সম্ভব ছিল না। স্যোশাল মিডিয়া থেকে যে সামাজিক উপলদ্ধি তৈরী হচ্ছে-আইডিয়া গুলোর একটা ডারুইনিয়ান প্রসেসে ছড়িয়ে যাচ্ছে-এটা ভবিষ্যতের প্রকাশনা এবং জ্ঞান বৃদ্ধির মডেল। তাই আমার ধারনা স্যোশাল মিডিয়াতে সম্পাদকরা মেম্বারদের ব্যাক্তিগত উপলদ্ধির জগতটা নিয়ে বলতে বাধা সৃষ্টি না করলেই ভাল হয়। তথ্য আমরা অনেক ওয়েব সোর্স থেকেই জানতে পারব-কিন্ত ব্যাক্তিগত উপলদ্ধি জানার জন্যে স্যোশাল মিডিয়ার বিকল্প নেই। আমার লেখাগুলো মূলত সেই উপলদ্ধির জগৎ থেকেই উঠে আসা। এটা ঠিক না বেঠিক স্টাইল আমি জানি না-তবে তথ্যভারাক্লান্ত লেখাতে আমার বেশ অনীহা। যাইহোক মোটামুটি ৮০% লেখা আমি উদ্ধার করতে পেরেছি ওই তিন বছরের। বানান ঠিক করতে পারলাম না-কারন প্রায় সবটাই বর্নসফটে লেখা, আর বর্নসফটের লাইসেন্স আমার কবে হারিয়ে গেছে! ফলে সেই পিডিফ যা ছিল তাই ভরসা!

পাঠক আমার পল্লবগ্রাহীতা নিজগুনে ক্ষমা করবেন আশা করি। লিংকের পেজটির বাম দিকের নীচে নানান টপিকে ভাগ করে লেখাগুলি ফেলা আছে। সেখান থেকে আপনারা বিষয় অনুসারে লেখা ব্রাউজ করতে পারবেন।
***********Link************
[ ২০৬ টি প্রবন্ধের সংকলন যা ২০০৫ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে লিখে ছিলাম-এই লিংকে প্রকাশ করলাম]
*****************************************