১৫ই আগষ্টের হত্যাকান্ড আমাদের জাতির জন্য একটি মহাকলংকময় ঘটনা ! এদিন ঘাতকরা চেয়েছিল জাতির জনককে স্বপরিবারে হত্যা করে দেশকে নেতৃত্ব শূন্য করে সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত বাংলাদেশকে পুনরায় পাকিস্থানের সাথে একিভ’ত করতে!

পরের ইতিহাস আরও করুন। রক্তাক্ত হলো বাংলা, বাংলার মানচিত্র! সর্বস্তরে নিষিদ্ধ হলো জাতির জনকের নাম নেয়া ! আইন করে নিষিদ্ধ করা হলো স্বঘোষিত বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদের বিচার প্রক্রিয়া ! মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস নিক্ষিপ্ত হলো আস্তাকুড়ে ! স্থান পেল বিকৃত রাজাকারী ইতিহাস ! একের পর এক হত্যা করা হলো বঙ্গবন্ধুর অনুশারীদেরকে। এখানেই ঘাতকরা থেমে থাকলো না। তারা পৃথিবীর ইতিহাসের জঘন্যতম তান্ডব চালিয়ে জেলখানার চার দেয়ালে বন্দি অবস্থায় নির্মমভাবে হত্যা করলো আমাদের দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম চার রুপকারকে ! ঘাতকরা নিজ ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে সবকিছুই করলো কিন্তু তারা জানেনা দিনদুনিয়ার মালিক একজন আছেন ! ঘাতকর জানেনা নিষ্পাপ নিরীহ জনগনের নিরব চোখের জল কোন দিন বৃথা যায়না।শুনেছি “পাপে ছাড়েনা বাপেরে”! পাপ করে সাময়িক বাহবা পাওয়া যায় স্থায়ী নয় !

খুনিরা মৃত বঙ্গবন্ধর ভয়েও অস্থির ! তাই তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকরেও স্বস্তি পেল না তারা বেছে বেছে জাতির জনকের নিকটাত্বায়ীদেরকে হত্যা করতে লাগলো আর এরই ধারা বাহিকতায় তারা বঙ্গবন্ধুর ভাগিনা তুখোর ছাত্রনেতা মুক্তিযুদ্ধের বিশিষ্ট সংগঠক যুবলীগের সভাপতি শেখ ফজলুল হক মণির বাসায় সেই কাল রাতে হানা দিয়ে শেখ মণি সহ যাকে যেখানে পেল বুলেটের আঘাতে নির্মম ভাবে হত্যা করলো ! ঘাতকরা এতই বেপরোয়া ছিল যে শত কাকুতি মিনতি করেও শেখ মণির অন্ত:সত্বা স্ত্রী মিসেস আরজু তাদের বুলেটের আঘাত থেকে রেহাই পায়নি! গুলির আঘাতে তার দেহ ঝাঁঝরা করে দেয়া হলো! পাশেই গভীর ঘুমে নিমগ্ন ছিল তার দুই বছরের অবোধ শিশু সন্তান মাষ্টার তাপশ। যিনি আজকের সাংসদ ব্যরিষ্টার শেখ ফজলে নূর তাপশ । প্রচন্ড গোলাগুলির আওয়াজে তার ঘুম ভেঙ্গে গেলে মৃত্ মাকে ঘুমন্ত ভেবে হামাগুড়ি দিয়ে স্নেহময়ী জননীর বুকের উপর সে পুনরায় ঘুমিয়ে গেল । সে জানেনা অদুরেই পরে আছে তাঁর অতি আদরের পিতা শেখ ফজলুল হক মণির রক্তাক্ত লাশ। ঘুম থেকে জেগে দেখবে সে এতিম ! অবোধ শিশু! এখনও জানেনা সে কত অসহায়! ক্ষনিকের ব্যবধানে কত ট্র্যাজেডি তার জীবনে নেমে এল ! বিশ্ব মানবতা বলে, ঘুমাও তাপশ তুমি শেষ বারের মত তোমার স্নেহময়ী জননীর বুকে ঘুমিয়ে নাও ! আর সময় পাবে না, সময় যে শেষ। তোমাকে যে যুদ্ধে যেতে হবে, তৈরী হতে হবে! মানুষ হতে হবে ! তোমার রক্ত তো হার মানা জানে না ! কিছুক্ষন পরে হয়ত তোমার কান্নায় আকাশ বাতাশ ভারী হয়ে যাবে তাতে হায়েনাদের অন্তরে একবিন্দু øেহের উদ্রেক হবে না। ওরা তো রক্ত মাংশের মানুষ না! ওরা হিংস্র জানোয়ারের চেয়েও অধম! ওরা যদি ঘুনাক্ষরেও জানতে পারতো তুমি বেঁচে আছো ! কোন ক্রমেই তোমাকে ওরা বাঁচতে দিত না। ওরা যে রক্ত পিপাসু হায়েনা ! রাস্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য ওরা সব পারে। ওরা চায় রক্ত, ওরা চায় ক্ষমতা !

একেই বলে নিয়তি । বেঁচে গেল শিশু তাপশ ! তাপশের মত এমন দূর্বিসহ করুণ জীবন যেন আর কারো না হয়! পৃথিবীর আর কোন অবোধ শিশুকে যেন মৃত্যু মায়ের রক্তাক্ত দেহের উপর ঘমিয়ে পড়তে না হয় ! আজ ভাবতে অবাক লাগে, পৃথিবীতে এমন ঘৃনিত ঘুনিদেরও কি কোন সমর্থক থাকতে পারে ? যারা এ হত্যাকান্ডের সর্মথক তারা কি মানূষ? নির্মম হলেও সত্য আজও কিছু মানুষ এ হত্যাকারীদের জন্য মায়া কান্না দেখায় ! এরা কি মানুষ ?

আজ জাতি জানতে চায় ,যারা এ হত্যাকান্ডে জড়িতদেরকে বিচারের পরিবর্তে পুরস্কৃত করলো তারা কারা ? তারা কি সমদোষী নয় ? তাদের ও কি বিচার হওয়া উচিৎ নয় ?

ইতিহাসের অমোঘ লিখন। সে সময়ের দুধের শিশু এখন পিতা মাতা হত্যার বিচার চায়! সে এখন জাতীর জনকের হত্যার বিচার চায়! আজ দেশের সকল নাগরিক ঐক্যবদ্ধ ভাবে ১৫ই আগষ্টের বিশ্বের ঘৃনিত নির্র্মম হত্যাকান্ডে জড়িতদের দ্রুত ফাঁসি চায়!!