সুজনসভাপতি দুর্জনের ভূমিকায়ঃ এত নৈতিকতা কোথায় রাখি?

 

সমরেশ বৈদ্য

 

অনেক ত্যাগ, সংগ্রামের পর গত ২৯ ডিসেম্বর ২০০৯ বাংলাদেশের নাগরিকরা নির্বিঘেœ নির্ভয়ে তাদের অন্যতম নাগরিক অধিকার অর্থা নিজেদের পছন্দসই প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার অধিকার ফিরে পেয়েছেসুযোগ নয়, দেশি-বিদেশি অধিকাংশ সংগঠন ও মানুষের কাছে নির্বাচনটি হয়েছে নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠুআওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট তিন চতুর্থাংশের চেয়ে বেশি আসন পেয়ে জয়ী হয়েছে এই জাতীয় সংসদ নির্বাচনেএর মধ্যে প্রধান ২ জোট নেত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা রয়েছেবর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী তারেক-কোকোর মা বেগম খালেদা জিয়ার নামেও মামলা রয়েছেমামলাগুলো উচ্চতর আদালতে বিচারাধীনবিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যে সব মামলা দায়ের করা হয়েছিল এই দুই নেত্রীর বিরুদ্ধে সেসব বাদীপক্ষ মামলা প্রত্যাহারের আবেদনও করেছেন ইতোমধ্যেরাজনীতি করলে মামলা-হামলা থাকবেই এতেই আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা অভ্যস্তকিন্তু প্রসঙ্গ অন্যত্র

 

গত বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থায় বিভিন্ন গণ্যমান্য বুদ্ধিদীপ্ত সম্মানিত ব্যক্তিদের বেশ কয়েকটি ফোরাম কাজ করছেআমরা অতি ক্ষুদ্র, সাধারণ অল্প শিক্ষিত নাগরিকরা তাদেরকে সুশীল সমাজবা সিভিল সোসাইটিবলেই জানিএই সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দের মধ্যে শিক্ষক, চিকিসক, প্রকৌশলী, সাবেক আমলা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, নারী নেত্রী, এনজিও কর্মকর্তা, পুলিশ, বিডিআর ও সাবেক সেনা কর্মকর্তাও রয়েছেনঅর্থা সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রতিনিধিত্ব রয়েছেদেশ ও জাতির বিভিন্ন সংকটে এই সুশীল সমাজনানা সেমিনার-সিম্পোজিয়াম, বিবৃতি ও উপদেশ দিয়ে থাকেনদেশ-জাতি তাতে উপকৃত কতটুকু হয়েছে তা এদেশের সাধারণ মানুষই ভালো বলতে পারবেন

 

দেশে সুশাসন কে না চায়? সবাই চায় দুর্নীতি, সন্ত্রাস, ক্ষুধা, দারিদ্র্য; অশিক্ষামুক্ত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশেরসেই সাথে অবশ্যই ধর্মনিরপেক্ষ ও রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীমুক্ত বাংলাদেশÑ অল্প কিছু জনগোষ্ঠী ছাড়াএই সুশাসনকে নিশ্চিত করার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছে সুজনঅর্থা সুশাসনের জন্য নাগরিকনামে একটি খ্যাতনামা সামাজিক সংগঠনসাংগঠনিকভাবে দেশের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই এদের কমিটি রয়েছেসচেতনমূলক কাজের জন্য সংগঠনটি বেশ কিছু কাজ করছেসমাজের বিশিষ্ট বিজ্ঞজনেরা রয়েছেন এই সুজনএর সাথেএর প্রধান নেতৃত্বে রয়েছেন খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ, পরিবেশবাদী সংগঠক, দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান সংগঠন টিআইবির (ট্রান্সপারেন্সী ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ) প্রধান শ্রদ্ধাভাজন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদএই বয়সেও তিনি সমাজের বিভিন্ন অনিয়মের ব্যাপারে সোচ্চার কণ্ঠ হয়ে আমাদের দিক নির্দেশনা দিচ্ছেনভাবতেই ভালো লাগে বিষয়টিসংসদ, রাজনীতি, দুর্নীতি, অর্থনীতি, পরিবেশ হেন কোন বিষয় নেই যে বিষয়ে ওঁনার পাণ্ডিত্ব নেই

 

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বাধীন সুজনদুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসের দায়ে অভিযুক্ত, ঋণখেলাপী, বিলখেলাপী, যুদ্ধাপরাধীদের ব্যাপারে এদেশের সাধারণ নাগরিকদের সোচ্চার ও সজাগ করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেএখনও করে যাচ্ছেন নিরলসভাবেনির্বাচনের পরেও সুজননেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের কাছে বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন যাতে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের কার কার বিরুদ্ধে মামলা আছে, যুদ্ধাপরাধী কয়জন আছে ইত্যাদিসম্ভবত: নির্বাচনের ২/৩ দিন পরেই অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ একটি বেসরকারি টেলিভিশনের এক টক শোতে বললেন… যিনি আসামী তিনি কিভাবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন?….. সর্বোচ্চ আদালত থেকে মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি নিয়ে শপথ নিন…ইত্যাদিতিনি যে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে এসব মন্তব্য করেছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে নাযদিও এতে আইনের কোন বাধা নেই,  অধ্যাপক মোজাফফর এক্ষেত্রে নৈতিকতার প্রশ্ন তুলেছেনআমার শ্রবণেন্দ্রীয় যদি বিশ্বাসঘাতকতা না করে তাহলে বোধ হয় এ ধরনের তীর্যক মন্তব্য শুনেছিলাম আমিসম্ভবত আমার মত আরো অনেক দর্শক শ্রোতাই এর সাক্ষী

 

অপরদিকে সুজনগত ১১ জানুয়ারি ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স রুমে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় করণীয়শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেছিলএ ব্যাপারে সেদিন বেশ সুন্দর ও মূল্যবান বক্তব্য দিয়েছেন সেদিনের বৈঠকে উপস্থিত সজ্জন বিজ্ঞ নাগরিকবৃন্দসেই বৈঠকেই সুজনর সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বললেন, “একটি দল তিন-চতুর্থাংশ মেজরিটি পেলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য ঝুঁকির সৃষ্টি হয়তাই গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার জন্য এবং মানুষের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আমাদেরকে নতুন ক্ষেত্র হিসেবে জনতার সংসদগড়ে তুলতে হবে” (ভোরের কাগজ, ১২ জানু: ২০০৯)গত ১২ জানুয়ারিতে বাংলাদেশের অধিকাংশ পত্রিকাতেই বা মিডিয়াতে প্রফেসর মোজাফফর আহমদের বক্তব্যটি প্রচারিত হয়েছে

 

বেসরকারি চ্যানেলটিতে প্রথম যেদিন আমাদের শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের বক্তব্য শুনছিলাম তখন ঠিক বুঝিনি যে আমি কি শুনেছিআর গত ১২ জানুয়ারি পত্রিকাতে তাঁর বক্তব্য পড়েও বিষয়টি বোঝার ক্ষমতা হয়নি আমার মত নগণ্য  সাধারণ শ্রমজীবী মানুষেরশেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন কি পারবেন না বা তাতে সত্যিকার অর্থে আইনগত  বাধা আছে কিনা তার জবাব সেদিনই একজন খ্যাতনামা আইনজীবী আনিসুল হক ঐ বেসরকারি টেলিভিশনকে জানিয়েছেনপরবর্তীতে দৈনিক সমকাল পত্রিকায় বিচারপতি গোলাম রব্বানী অত্যন্ত যৌক্তিকভাবে আমাদের পবিত্র সংবিধানের বাখ্যা দিয়ে একটি সুলিখিত অভিমত দিয়েছেনতবে তিনি অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তিকোন সংগঠনের প্রধানের নামোল্লেখ করেননি তাতেএমনকি যেদিন টিভি টকশোতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শক শ্রোতারা তাদের কঠিন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন সুজনসভাপতির মন্তব্যের ব্যাপারে

 

আমি ব্যক্তিগতভাবে নিজেকে  ক্ষুদ্র নাগরিক হিসেবেই বিবেচনা করিঅন্য অনেকের মত কথায়ও কাজে কৌশলীহতে পারি নিযা বলি সরাসরি বলতে আর লেখার চেষ্টা করি নগণ্য সামর্থেতাতে অনেক বিপদও আছেথাকিতো চট্টগ্রামেযার নামের সাথে গ্রাম আছেঅর্থা গ্রাম্যগ্রামের সাধারণ মানুষ যেভাবে সরাসরি কথা বলে থাকেন কথিত শহুরেদের মত না ভেবেচিন্তে ঠিক তেমনিএজন্য যদি বেয়াদপিবা অসভ্য আচরণ হয়ে থাকে সেজন্য ক্ষমাপ্রার্থীসম্ভবত ৪ দলীয় জোটনেত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নবম জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় নেত্রী হচ্ছেন (লেখাটি যখন প্রকাশিত হবে তখন হয়ত তিনি তাই হয়ে যাবেন)অর্থা পূর্ণ মন্ত্রীর মর্যাদাতো বটেই সংসদীয় রীতি-নীতি অনুযায়ী আরও অনেক মর্যাদার অধিকারী হবেনতিনি গত ২ বার প্রধানমন্ত্রী ছিলেনশ্রদ্ধেয় সুজনসভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের যুক্তিগত ও নৈতিক কারণে যদি মামলা থাকার জন্যে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য যোগ্যনা হন তাহলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কি সংসদে বিরোধী দলীয় নেত্রী হওয়ার নৈতিক’ (অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ এর ভাষায়) অধিকার রাখেন?

 

 যতটুকু শুনেছি বন্দুকের নলের মুখে সামরিক উর্দি পরা জিয়াউর রহমান সরকারের সামরিক সরকারের আমলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)এর প্রধান কর্তাব্যক্তি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছিলেনসম্ভবত: অর্থ উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেনরাতের অন্ধকারে অস্ত্রের জোরে সামরিক পোষাক গায়ে দিয়ে যিনি ক্ষমতা দখল করেন অবৈধভাবে সেই জিয়াউর রহমানের ক্ষমতার অংশীদার হওয়া অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ সেদিন কি নৈতিককাজটি সম্পন্ন করার জন্যই সামরিক সরকারের উপদেষ্টার পদটি অলংকৃত করেছিলেন? সত্যিই জানতে বড় ইচ্ছে হয়এদেশের জনগণ নিশ্চয়ই ভুলে যাননি যে, ২০০৫ সালের ২৯ আগস্ট বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে যুগান্তকারি রায় দিয়েছেনরায়ে ১৯৭৫ সালের ২০ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সামরিক শাসনকালে জারিকৃত সকল সামরিক ফরমান অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থি বলে ঘোষণা করা হয়মহামান্য হাইকোর্টের রায়ে যে সরকার ব্যবস্থাকে সরকারি শাসককে অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থি হিসেবে রায় দেয়া হয়েছে সেই সরকারের প্রধান ব্যক্তি লেঃ জেনারেল জিয়াউর রহমানের সরকারের উপদেষ্টার পদ অলংকৃতকরা বর্তমান বাংলাদেশের সুশীল সমাজএর অন্যতম প্রতিনিধি সুশাসনের জন্য নাগরিকতথা সুজনর সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ কোন অবস্থানে রয়েছেন তা আমার মত ক্ষুদ্র ব্যক্তির মস্তিস্কে না ঢুকলেও সাধারণ জনগণ বুঝবেন নিশ্চয়

 

ভাবতেই কষ্ট হয় প্রবীণ এই অভিজ্ঞ শ্রদ্ধেয় প্রফেসর অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের বক্তব্য ও অবস্থান অনুধাবন ও নির্ণয় করতেনৈতিকতার মানদণ্ড কি তাও জানতে খুব ইচ্ছে হয়বাংলাদেশের কোটি কোটি ভোটার সহ সাধারণ জনগণ জানেন যে নির্বাচন কমিশনের বেধে দেয়া নির্বাচনী ব্যয়সীমা অধিকাংশ প্রার্থীই মানেননিঅনেক যোগ্য প্রার্থী নির্বাচিত হননি, আবার যারা নির্বাচিত হয়েছেন তাদের অনেকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছেকিন্তু তারাতো জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেননিশ্চয়ই জনগণ সেসবের মূল্যায়ন করবেন

 

গত ১১ জানুয়ারিতে অধ্যাপক আহমদ এর বক্তব্য একটি দল তিন-চতুর্থাংশ মেজরিটি পেলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য ঝুঁকির সৃষ্টি হয়মন্তব্যটির তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করার বুদ্ধি-ক্ষমতা আমার নেইশুধু বলতে চাই ভোট দিয়েছে জনগণ তথা দেশের সচেতন ভোটারএসব নাগরিক ও ভোটারদের সচেতন করার জন্যই তো অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বে সুজনও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেননিশ্চয়ই সেই প্রচারণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে একটি দলকে তিন-চতুর্থাংশ সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেনতাহলে ভোটাররা কি ভুল করলেন তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে গত ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে? তাহলে তো বলতে হয় সুজনযে প্রচারণা চালিয়েছিল নির্বাচনের আগে ভোটারদের উদ্দেশ্যে তা ভোটাররা বোঝেননিআর না বোঝার কারণেই একটি দলকে তিন-চতুর্থাংশ আসনে জিতিয়ে দিলোআহ্ অবুঝ ভোটাররা কেন যে এমন একটি কাজ করলো তার জন্য আমাদের সমাজের চিন্তাপতিদের ঘুম হারাম হয়ে গেলোখুবই দুঃখজনক! সত্যিই তো যত দোষ ঐসব নাদান ভোটারদেরতারা এমন করে দাবার দানটি উল্টে দেবেন তা হয়তো স্বপ্নেও কল্পনা করেননি জিয়াউর রহমানের সাবেক উপদেষ্টা মহোদয়

 

বিগত ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামাত জোট ও দুই তৃতয়াংশ ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলআর সে নির্বাচনের আগেও পরে সেই জোটও তাদের সরকার সারা দেশে ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘু ও নির্বাচনে পরাজিত আওয়ামী লীগের উপর কি অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছিল তাতো এদেশবাসী ভুলে যায়নিদুই-তৃতীয়াংশ মেজরিটি পেলে গণতন্ত্রের জন্য ঝুঁকি হয় না, ঝুঁকি হয় যদি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনে কোন দল তিন-চতুর্থাংশ মেজরিটি পেলে? হ্যাঁ অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে এদেশের জনগণ, বর্তমান সরকার, বিরোধী দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদেরকে যাতে সরকার জনগণের স্বার্থেই পরিচালিত হয়কিন্তু সন্দেহ জাগে যখন গণতন্ত্রের জন্য ঝুঁকি শব্দগুলো শুনি অবৈধ সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের উপদেষ্টা টিআইবি, সুজন, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা বিজ্ঞ অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের কাছ থেকে

 

 দুর্মুখেরা বলেন, এই প্রবীণ-বিজ্ঞ অধ্যাপক হয়তো মনে খুব কষ্ট পেয়েছেন আওয়ামী লীগ তিন-চতুর্থাংশ আসন পাওয়াতেআরো বেশি কষ্ট হয়তো আছে তাঁর যে, তিনি যেই অবৈধ সামরিক সরকারের  উপদেষ্টা ছিলেন (জিয়াউর রহমানের ) তার সুযোগ্য পুত্র তারেক-কোকোর গর্বিত মা বেগম জিয়াউর রহমান অর্থা বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন ৪ দলীয় জোট গো-হারাতে আমরা দুখী বাংলাদেশের ব্রাত্যজনেরা কায়মনোবাক্যে কামনা করি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা যাতে ঝুঁকিপূর্ণ না হয়পাশাপাশি অত্যন্ত বিনীতভাবে আশা করি সুজনএর শ্রদ্ধাভাজন সভাপতির কাছ থেকে দুর্জনসুলভ বক্তব্য শুনবো নাআমার দুর্বিনীত লেখায় হয়তো বাংলাদেশের সুশীল সমাজের অনেকেই অখুশী হবেনকরজোড় মিনতি,  অভিনন্দন ভোটারদের —– যারা গনতন্ত্রকে রক্ষার জন্যে  তিন-চতুর্থাংশ আসনে জয়ী করেছেন  একটি দলকে #

 

১৪ জানুয়ারি ২০০৯, চট্টগ্রাম

 সমরেশ বৈদ্য, সংবাদকর্মী 

 

Email- [email protected]