গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার বিএনপি-জামাতী ষড়যন্ত্র সফল হবে না কোনভাবেই

সমরেশ বৈদ্য

         

বাংলাদেশের বহুল প্রতীক্ষিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন  চট্টগ্রামে অন্তত ৬টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনের সুযোগ হয়েছিলএসময়  সাধারণ ভোটার, প্রিসাইডিং অফিসার, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক নেতা (প্রার্থী)দের বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রদত্ত বক্তব্যও  জেনেছিসবাই বলেছেন নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হয়েছেপাকিস্তান আমলে ১৯৭০ সালে যে নির্বাচন হয়েছিল তারপরে স্বাধীন বাংলাদেশে এমন শান্তিপূর্ণ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়নি বলেও মতামত অনেকেরতবে এবার সাধারণ ভোটাররা তাদের পছন্দসই প্রার্থীকে নির্বাচন করতে পেরেছেন নির্বিঘ্নেসত্যিকার অর্থে ১৯৭৫ এ জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পরে এদেশের জনগণ তার ভোটাধিকার সুষ্ঠুভাবে নির্ভয়ে প্রয়োগ করার অধিকার পায় নিএবার সেই সুযোগটি পেয়ে তার সদ্ব্যবহার করেছে মাত্রএর বেশি কিছু তো করেনি

আর ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারার জন্যই নিউইয়র্ক টাইমসএর ভাষায় ভূমিধ্বস বিজয়হয়েছে মহাজোটেরবাংলাদেশের মিডিয়াগুলো নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে কি শিরোনাম করেছে তা পাঠকের জানা আছেআওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের এতবড় বিজয় সত্যিকার অর্থেই সবাইকে অবাক করে দিয়েছে২৯৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ একাই জয় পেয়েছে ২৩০টিতেতার জোটের অধীনে জাতীয় পার্টি ২৭টি, জাসদ ৩টি, ওয়ার্কাস পার্টি ২টি অর্থা ২৬২টি আসন ও এলডিপি ১টিঅপরদিকে ৯১-এরপর থেকে দুইবার ক্ষমতায় থাকা বিএনপি-জামাত জোটের প্রচণ্ড ভরাডুবি হলোএবার বিএনপি পেলো ২৯টি, জামাত ২টি, বিজেপি-১টিঅপরদিকে স্বতন্ত্র জয়ী হয়েছেন ৪ জন প্রার্থী

 

১. দেশি-বিদেশি নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সবাই বলছেন, নির্বাচন নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে৪টি বিদেশি নির্বাচনী পর্যবেক্ষক টীম ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), কমনওয়েলথ, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) এবং এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রী ইলেকশন (এনফ্রেল) নির্বাচন পরবর্তী সময়ে গত ৩১ ডিসেম্বর পৃথক পৃথক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রায় অভিন্ন ভাষায় বলেছেন যে, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে- যা আন্তর্জাতিক মানেরকিন্তু শুধু গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না আমাদের তথাকথিত আপোষহীননেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিএনপি-জামাত জোটের কাছেখালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করলেন নির্বাচনে নজিরবিহীন কারচুপিনীলনকশার নির্বাচনহয়েছেতিনি মিডিয়ার সামনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে তীব্র কটাক্ষ ভাষায়ও আক্রমণ করলেনএদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনৈতিক দল জামাতে ইসলামী তাদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বর্ধিত সভায় (৩১ ডিসেম্বর ২০০৮) বলেছে- সাজানো ছকে নির্বাচনের আশঙ্কাই সঠিক প্রমাণিত হয়েছে। (সূত্র: নয়াদিগন্ত ১ জানুয়ারি ২০০৯)অপরদিকে গত ৩১ ডিসেম্বর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক রিজভী আহমদ সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করেন যে, ২৯৯টি সংসদীয় আসনেই অনিয়ম ও কারচুপি হয়েছে (বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে)তাছাড়া তিনি আরো অভিযোগ করেন সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে চারদলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা নির্যাতন করা হয়েছে

 

২. জামাত-বিএনপি জোটের যে অভিযোগ নজিরবিহীন কারাচুপি, সাজানো ও নীলনকশার নির্বাচন তার ব্যাপারে অন্য কেউ নয়, এদেশের সাধারণ জনগণই উল্টো ধিক্কার জানাচ্ছে আপনাদেরযারা ভোট দিয়েছেন তাদের জিজ্ঞেস করুনভোটের দিনের ও পরের দিন বিভিন্ন পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলগুলো আবারও দেখার জন্য অনুরোধ করি তাদের সবিনয়েকারণ প্রিন্ট ও টিভি চ্যনেলগুলোর বেশ কয়েকটির মালিকানাতো আপনাদের দলের নেতাদেরসেসব দেখলেই তো পারেননির্বাচনে কি হয়েছে তা সঠিকভাবেই বুঝতে পারবেনগত ৩১ ডিসেম্বর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক টীমতো সরাসরি আপনাদের অভিযোগ খণ্ডন করে বলেছবিএনপি নেত্রীর অভিযোগের কোন সত্যতা পাওয়া যায় নিবিএনপির অভিযোগের সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেলে তদন্ত করে দেখা হবেবাস্তবে ছোট-খাটো কিছু প্রয়োগিক ত্রটি ছাড়া পেশাদারিত্ব, স্বচ্ছতা আর বিশ্বাসযোগ্যতা ছিল এই নির্বাচনের বড় বৈশিষ্ট্যফল মেনে নিয়ে সব দল মিলে জয়-পরাজয় ভুলে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় এখন। (সূত্র: ইত্তেফাক, ১ জানুয়ারি ২০০৯)তাই সবিনয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তার অন্ধ অনুসারিদের বলি, বাস্তবতা ও সত্যকে মেনে নিননা হলে আপনাদের রাজনীতিই ক্ষতিগ্রস্ত হবেআর তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশ ও জনগণচৌকষ বক্তা বিএনপি নেতা রিজভী আহমদ ২৯৯টি আসনেই কারচুপি আর অনিয়মের যে হাস্যকর অভিযোগ করলেন তাতে কিন্তু নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারলেনভুলে গেলেন কেন রিজভী আহমেদ যে, তাদের নেত্রী একাই ৩টি আসনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেনসাথে আরও ২৬ জন বিএনপি নেতা জয়ী হয়েছেনতাহলে কি বললেন আপনারা যে ২৯টি আসনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন, সেখানে আপনারাও আপনাদের ভাষায়Ñ ‘নজিরবিহীন কারচুপিনীলনকশায় নির্বাচনএর মাধ্যমেই জয়ী হয়েছেন? ৪ দলের এ ধরনের কার্যকলাপ কোনভাবেই গণতান্ত্রিক ধারাকে সহায়তা করবে না, উল্টো বাধাগ্রস্ত করে অনিশ্চয়তার জন্ম দেবে মাত্রএবার নির্বাচনোত্তর সহিংসতার ন্যাক্কারজনক ঘটনার ব্যাপারে আমিদৈনিক ইত্তেফাক ১ জানুয়ারি বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে শিরোনাম করেছেনির্বাচনোত্তর সহিংসতায় ১ জন নিহত, মহিলাসহ আহত ১২১একই দিন আমার দেশ লিখেছে- দেশব্যাপী ৪ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগের হামলা অব্যাহত, বাড়ি ঘর দোকানপাটে আগুন, হল ও অফিস দখল করছেএছাড়া গত ৩১ ডিসেম্বর বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেলেও ৪ দলীয় জোটের বরাত দিয়ে এ ধরনের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছেএ ধরনের প্রতিশোধ প্রতিহিংসামূলক ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই নিন্দনীয় ও কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়কাম্যও নয়তবে সহিংসতা শুধু যে ৪ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের প্রতি হয়েছে তা কিন্তু নয়দয়া করে চোখ কান খোলা রাখুনমিডিয়ার প্রতি নজর রাখুনযেখানে মহাজোটের সমর্থিত নেতাকর্মীও খুন হয়েছেন, হামলার শিকার হয়েছেনচট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে নানুপুরে একটি বৌদ্ধ বিহারে বিএনপি নেতা সাকা চৌধুরীর ক্যাডাররা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে চন্দনাইশ একটি হিন্দু পরিবারের ১১ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার জন্য তাদের ঘরে দাহ্যপদার্থ ছিটিয়ে বাহির থেকে দরজা বন্ধ করে আগুন দেয়া হয়েছিলফটিকছড়ি রাঙ্গুনিয়া, চন্দনাইশসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদেরকে ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছিল ৪ দলীয় জোটের ক্যাডাররা এবার নির্বাচনের আগে

 

৩. যদি বিগত ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ের কথা বলি তাহলে অনেক লেখা যাবে২০০১ এর ১ অক্টোবর নির্বাচনের পূর্বাপর যে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস চালিয়েছিলেন বিএনপি-জামাত জোটের নেতাদের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে তাতো সারা বিশ্ব জানেসে সময়কার ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাস নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকাতে যে হাজার হাজার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল তার কিছু অংশের সংকলন করেছিল একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি২০০৫ সালের ১০ অক্টোবর শেতপত্র : বাংলাদেশের সংখ্যালুঘ নির্যাতনের ১৫০০ দিননামে ৩ খণ্ডের বই বের হয়েছিলতাতে একটু চোখ বুলালেই নিজেদের মহান কুকীর্তিদেখতে পাবেন মাননীয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তাদের অন্ধ অনুসারিরা

 

আপনারা তখন তার স্বরে চিকার করে গলা ফাটিয়ে ফেলেছিলেন যে কিছুই হয়নিবরিশালের আগৈলঝাড়ায় তকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন তার পক্ষে বলতে গিয়ে সেখানকারই নির্যাতিত এক হিন্দু মহিলাকে মঞ্চে তুলেছিলেনকিন্তু আপনাদের কপাল খারাপসেই নির্যাতিত কোন ভয়ভীতি আর প্রলোভন অস্বীকার করে তার উপর এবং অন্যদের উপর কি বিভ্যস নির্যাতন চালিয়েছিল বিএনপি-জামাত সমর্থিত ক্যাডাররা তার বর্ণনা দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেনতার অর্থ এই নয় সহিংস্রতা সমর্থন করছি আমিকোনভাবেই নয়যে সহিংসতা ঘটেছে তা অবশ্যই কঠোর হস্তে দমন করা উচিত বর্তমান  সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরপাশাপাশি যারা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন তাদের নেতাকর্মীদেরও অত্যন্ত দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবেআমি আশা করি এ ব্যাপারে দলমত নির্বিশেষে দেশের সচেতন জনগণ এগিয়ে আসবেন

 

৪. বিশাল নির্বাচনী বিজয়ের পর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা গত ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে যা বললেন তাতে তো সত্যিকার অর্থেই তিনি জননেত্রী হিসেবে ও গণতান্ত্রিক ধারাকেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দেশনায়কোচিত প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছেনÑ এমন মন্তব্যই শুনেছি আমি বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নাগরিকদের কাছ থেকেযারা শুনেছেন তারাই সঠিক করে বলতে পারবেন শেখ হাসিনার মনোভাব২৯ ডিসেম্বর রাতে যখন চারিদিক থেকে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের বিজয়ের খবর আসছিল নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে তখনই শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মী সমর্থকদের কোন প্রকার মিছিল, সভা-সমাবেশ না করার কঠোর নির্দেশ দিয়েছিলেনএমন সময়োচিত সিদ্ধান্ত যে সত্যিকার অর্থেই প্রয়োজন ছিল তা তিনি বুঝতে ভুল করেননি

 

গত ৩১ ডিসেম্বর নির্বাচনোত্তর প্রথম বক্তৃতাও আমার শোনার সৌভাগ্য হয়েছেঅন্য অনেকের ন্যায় আমারও মনে হয়েছে তিনি যা বলেছেন তা বাস্তবায়নে অত্যন্ত সচেষ্ট থাকবেনতার বক্তব্যে যা ছিল তাহলো- এ বিজয় সমগ্র জাতির, এ বিজয় গণতন্ত্রের, এ বিজয় দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সুশাসনের বিজয়, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শান্তির বিজয়, ডেপুটি স্পিকার নেয়া হবে বিরোধী দল থেকেএমনকি তিনি মন্ত্রীও করতে চান বিরোধী দল থেকে যদি তারা রাজি থাকেনসত্যি, এত উদারতা দেখে বড় ভয় হয় আমার ব্যক্তিগতভাবেতিনি পাশাপাশি অতীতের কষ্ট ও সকল ভেদাভেদ ভুলে সকলকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেনএমনকি সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, প্রয়োজনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কাছ থেকেও দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে পরামর্শ নেবেন, কারণ তিনিওতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ পরিচালনা করেছেনÑ এমন গণতান্ত্রিক প্রকাশ্য উদারতা- আর কে দেখিয়েছে কবে এই বাংলাদেশে?

 

কতবার বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে তা কি  ভুলে গেছি আমরা বাঙালিরা? ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম গণহত্যা দিনে তাকে বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে সরাসরি গুলির প্রত্যক্ষদর্শী তো চট্টগ্রামের অনেকেসেই গণআন্দোলনের মিছিলের অংশগ্রহণকারী প্রত্যক্ষদর্শী আমি তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের টগবগে যুবকতারপর কোটালিপাড়ায় তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থাতেই বিএনপি-জামাতের আশ্রয়ে মদদপুষ্ট হরকাতুল জেহাদ নেতা মুফতি হান্নানের বোমা পুতে রেখে হত্যা চেষ্টাসর্বশেষ বিএনপি-জামাত আমলে ২১ আগস্ট ২০০৪ সালে ঢাকায় তাকে বহনকারী ট্রাকে উপর্যুপরি গ্রেনেড হামলা ও গুলিবর্ষণ কি ভুলে গেছে দেশবাসী?

 

আর তখন বিএনপি-জামাত মন্ত্রী নেতারা বলেছেন- আওয়ামী লীগ নিজেই এই গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে!! গোয়েবলসীয় কায়দায় এ মিথ্যাচার নিজেই চরম লজ্জায় অপমানে মুখ লুকোনোর জায়গা খুঁজে পায় নিতাই অনুরোধ জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ছোটখাটো ত্রটি ভোলার জন্যে, ক্ষমাসুন্দরভাবে দেখতে রাজি এদেশের জনগণকিন্তু উদীচী বোমা হামলা, রমনা বটমূলের হামলা, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এস এম কিবরিয়া হত্যা, আহসান উল্লাহ মাস্টারের মত হৃদয়বান স নেতাকে হত্যা, ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত আনোয়ার চৌধুরীর উপর গ্রেনেড হামলাসহ অসংখ্য হত্যা আর নৃশংস হামলার ঘটনার কুচক্রীদেরকে ক্ষমা করবে না জাতিদেশবাসী গণতান্ত্রিক, শান্তিপ্রিয় ঠিকই, কিন্তু হত্যার বিচার চায়দাবি তাদের দীর্ঘদিনের বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় কার্যকর করা, মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধাপরাধীদের কঠোর বিচারএসব দাবির কোনটিই কিন্তু প্রতিহিংসা আর প্রতিশোধের নয়এগুলো দেশবাসীর প্রাণের দাবিÑ গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধে দেশের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য, মানবতা আর শান্তির জন্য

 

৫. সাবেক প্রধানমন্ত্রী ৪ দলীয় জোটের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কাছে অনুরোধ আপনাদের তথাকথিত নজিরবিহীন কারচুপি’, ‘নীলনকশার নির্বাচনঅভিযোগকে আর হাস্যকর করে তুলবেন না দেশবাসী ও বিশ্বের কাছেআপনাদেরকেও এদেশের জনগণ ভোট দিয়েছেশুধু লাখ লাখ নয়কোটি কোটিআপনারা সংসদীয় আসন হয়ত কম পেয়েছেনকিন্তু ভোটার সংখ্যা অনেকতাদেরকে অসম্মানিত করবেন না দয়া করেনিজেদের ভরাডুবি, ব্যর্থতা মূল্যায়নের চেষ্টা করুনবেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিন পল্টনের বিশাল জনসমুদ্রে তরুণ ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলেছেনআমি মা হিসেবে বলছি …সত্যিই তো তিনি মাতবে তা শুধুই তারেক ও কোকোর মত দুই সন্তানেরযারা ৫ বছর দেশে লুটতরাজ আর দেশের অর্থ পাচারের মত অভিযোগে সারা বিশ্বের কাছে চিহ্নিত

 

তাই সম্ভবত: এদেশের তরুণ নাগরিকরা কখনোই তাদেরকে তারেক-কোকোর মত ভাই মেনে নিতে পারেনি এবং তাদের মাকে মা হিসেবে মানতে পারেনিতা না হলে মাহিসেবে আপনার আবেদন অনেক বেশি আবেগপ্রবণ ছিল যা আপনাদের বিজয়ে সহায়ক ভূমিকা পালন করতো এদেশের তরুণ সমাজ যারা দুর্নীতি, দুঃশাসন, মিথ্যাচার, সন্ত্রাসকে ঘৃণা করেযুদ্ধাপরাধীদের ঘৃণা করে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে নতুন শান্তিকামী, গণতান্ত্রিক, মানবিক, দারিদ্র্যমুক্ত, আধুনিক, জঙ্গিবাদমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেতাই এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে অনুরোধ রাজনীতিবিদদের প্রতি শুধু প্রতিশ্রতি আর অসত্য কাল্পনিক অভিযোগ তুলে দেশ, গণতন্ত্র, মানবতা রক্ষা হবে নাআপনারা বুদ্ধিমানসেই কাজটিই করুনতারিখ-০২/০১/২০০৯, Email- [email protected]