অনেক মুসলিম আমাকে বলেছেন (আমার ইসলাম অনুগামী বন্ধুরা এবং স্কলাররা) যে

“আপনি কুরআন পড়ুন, তাহলে দেখবেন কুরআন/ইসলাম মানবজাতিতে কোন বিভাজন সৃষ্টি করে নি; বরঞ্চ একটি সামাজিক, ভ্রাতৃত্বপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করার লক্ষে একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধান দিয়েছে।“

মুসলিম হিসেবে জন্ম নেওয়ার ঐতিহ্য হিসেবে কুরআন আমি আগেও পড়েছি; এখনও পড়ছি। নিচে বহুঈশ্বরবাদীদের ছাড়াও অন্যান্য ধর্মালম্বীদের ইসলামে অবস্হান প্রসঙ্গে কুরআনের কিছু আয়াত উল্লেখ করছি। আপনাদের সহযোগিতা কাম্য।

মুসলিম বন্ধুরা কাফের বলতে বিশেষ কোন প্রজাতি ভাববেন না। সাধারণভাবেই কাফের মানে হচ্ছে অবিশ্বাসী (disbelievers); যারা ধর্মকে ত্যাগ করলেন কিংবা জন্মসূত্রে অন্য ধর্মের অনুসারী এবং সেকারণে আল্লাহর দ্বীনকে মেনে চলেন না। [১]

১.

“মুমিনগন যেন অন্য মুমিনকে ছেড়ে কোন কাফেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যারা এরূপ করবে আল্লাহ্র সাথে তাদের কোন সম্পর্ক থাকবে না।” — সূরা: ৩ (আল-ইমরান, মদিনা); আয়াত: ২৮

ইংরেজী,

“Let not the believers take the disbelievers as Auliyâ (supporters, helpers, etc.) instead of the believers, and whoever does that will never be helped by Allâh in any way, except if you indeed fear a danger from them. And Allâh warns you against Himself (His Punishment), and to Allâh is the final return.”

২.

“হে নবী, কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করুন এবং মুনাফেকদের সাথে তাদের সাথে কঠোরতা অবলম্বন করুন। তাদের ঠিকানা হল দোযখ এবং তাহল নিকৃষ্ট ঠিকানা।” — সূরা: ৯ (আত-তাওবাহ, মদিনা); আয়াত: ৭৩

ইংরেজী,

“O Prophet (Muhammad SAW)! Strive hard against the disbelievers and the hypocrites, and be harsh against them, their abode is Hell, – and worst indeed is that destination.”

৩.

“আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করে দেব। কাজেই গর্দানের উপর আঘাত হান এবং তাদেরকে কাট জোড়ায় জোড়ায়।“ — সূরা: ৮ (আল-আনফাল, মদিনা); আয়াত: ১২; খ্রিষ্টানদের প্রতি কারণ তারা ত্রয়ীতে বিশ্বাস করেন এবং বহুঈশ্বরবাদীদের প্রতি

ইংরেজী,

“I will cast terror into the hearts of those who have disbelieved, so strike them over the necks, and smite over all their fingers and toes.”

যদিও অনেক মুসলিম শান্তিপূর্ণ তবুও উপরের আয়াত পড়লে এটা বলার অবকাশ রাখে না কেন অন্যরা চরম পন্হায় বিশ্বাস করে।

৪. একই সূরায় পরের আয়াতে বলা হয়েছে:

“যেহেতু তারা অবাধ্য হয়েছে আল্লাহ্ এবং তাঁর রসূলের, সেজন্য এই নির্দেশ। বস্তুতঃ যে লোক আল্লাহ ও রসূলের অবাধ্য হয়, নিঃসন্দেহে আল্লাহ্র শাস্তি অত্যন্ত কঠোর।“

ইংরেজী,

“This is because they defied and disobeyed Allâh and His Messenger. And whoever defies and disobeys Allâh and His Messenger, then verily, Allâh is Severe in punishment.”

৫.

“কিছুতেই আল্লাহ্ কাফেরদেরকে মুসলমানদের উপর বিজয় দান করবেন না।“ — সূরা: ৩ (আল-নিসা, মদিনা); আয়াত: ১৪১

ইংরেজী,

“Never will Allâh grant to the disbelievers a way (to triumph) over the believers. ”

পরোক্ষভাবে বলা হতে পারত, সত্যের জয় হোক। কিন্তু স্বয়ং আল্লাহ তাআলাই যেন একটি সম্প্রদায়ের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করেছেন। যারা বিশ্বাস করেন সব ধর্মই পরাক্রমশালী আল্লাহর সৃষ্টি তাদের সন্দেহময় নৈরাশ্যে পড়া উচিত।

৬.

“সুতরাং তোমরা তাদেরকে হত্যা করনি, বরং আল্লাহ্ই তাদেরকে হত্যা করেছেন। আর তুমি মাটির মুষ্ঠি নিক্ষেপ করনি, যখন তা নিক্ষেপ করেছিলে, বরং তা নিক্ষেপ করেছিলেন আল্লাহ স্বয়ং যেন ঈমানদারদের প্রতি এহসান করতে পারেন যথার্থভাবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ শ্রবণকারী; পরিজ্ঞাত।“ — সূরা: ৮ (আল-আনফাল, মদিনা); আয়াত: ১৭

ইংরেজী,

“You killed them not, but Allâh killed them. And you (Muhammad SAW) threw not when you did throw but Allâh threw, that He might test the believers by a fair trial from Him. Verily, Allâh is All-Hearer, All-Knower.”

৭.

“যুদ্ধ কর ওদের সাথে, আল্লাহ্ তোমাদের হস্তে তাদের শাস্তি দেবেন। তাদের লাঞ্ছিত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের জয়ী করবেন এবং মুসলমানদের অন্তরসমূহ শান্ত করবেন।” — সূরা: ৯ (আত-তাওবাহ, মদিনা); আয়াত: ১৪

ইংরেজী,

“Fight against them so that Allâh will punish them by your hands and disgrace them and give you victory over them and heal the breasts of a believing people”

৮.

“হে ঈমানদারগণ, তোমাদের নিকটবর্তী কাফেরদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাও এবং তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা অনুভব করুক্‌ আর জেনে রাখ, আল্লাহ্‌ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন।” — সূরা: ৯ (আত-তাওবাহ, মদিনা); আয়াত: ১২৩

ইংরেজী,

“O you who believe! Fight those of the disbelievers who are close to you, and let them find harshness in you, and know that Allâh is with those who are the Al-Muttaqûn (the pious – see V.2:2).”

যারা আল্লাহ সম্পর্কে বিতর্ক করে তাদের উদ্দেশ্যে

৯.

“সে পার্শ্ব পরিবর্তন করে বিতর্ক করে, যাতে আল্লাহ্র পথ থেকে বিভ্রান্ত করে দেয়। তার জন্যে দুনিয়াতে লাঞ্ছনা আছে এবং কেয়ামতের দিন আমি তাকে দহন-যন্ত্রণা আস্বাদন করাব।” — সূরা: ২২ (হাজ্জ্ব, মদিনা); আয়াত: ৯

ইংরেজী,

“Bending his neck in pride (far astray from the Path of Allâh), and leading (others) too (far) astray from the Path of Allâh. For him there is disgrace in this worldly life, and on the Day of Resurrection We shall make him taste the torment of burning (Fire).”

১০.

“এই দুই বাদী বিবাদী, তারা তাদের পালনকর্তা সম্পর্কে বিতর্ক করে। অতএব যারা কাফের, তাদের জন্যে আগুনের পোশাক তৈরী করা হয়েছে। তাদের মাথার উপর ফুটন্ত পানি ঢেলে দেয়া হবে। ফলে তাদের পেটে যা আছে, তা এবং চর্ম গলে বের হয়ে যাবে। তাদের জন্যে আছে লোহার হাতুড়ি।”– সূরা: ২২ (হাজ্জ্ব, মদিনা); আয়াত: ১৯-২২

ইংরেজী,

“These two opponents (believers and disbelievers) dispute with each other about their Lord; then as for those who disbelieve, garments of fire will be cut out for them, boiling water will be poured down over their heads. With it will melt or vanish away what is within their bellies, as well as (their) skins. And for them are hooked rods of iron (to punish them)”

১১.

“তারা আল্লাহ্র বান্দাদের মধ্য থেকে আল্লাহ্র অংশ স্থির করেছে। বাস্তবিক মানুষ সপষ্ট অকৃতজ্ঞ।” — সূরা: ৪৩ (যুখরুফ, মক্কা); আয়াত: ১৫

ইংরেজী,

“Yet they assign to some of His slaves a share with Him (by pretending that He has children, and considering them as equals or co-partners in worship with Him). Verily, man is indeed a manifest ingrate!”

১২.

“তদ্দ্বারা মৃত ভূভাগকে সঞ্জীবিত করার জন্যে এবং আমার সৃষ্ট জীবজন্তু ও অনেক মানুষের তৃষ্ণা নিবারণের জন্যে। এবং আমি তা তাদের মধ্যে বিভিন্নভাবে বিতরণ করি, যাতে তারা স্মরণ করে। কিন্তু অধিকাংশ লোক অকৃতজ্ঞতা ছাড়া কিছুই করে না।”– সূরা: ২৫ (আল-ফুরকান, মক্কা); আয়াত: ৪৯-৫০

ইংরেজী,

“That We may give life thereby to a dead land, and We give to drink thereof many of the cattle and men that We had created. And indeed We have distributed it (rain or water) amongst them in order that they may remember the Grace of Allâh, but most men refuse (or deny the Truth or Faith) and accept nothing but disbelief or ingratitude”

অনুসারীদের সবসময় কুরআনে বুঝানো হয় একটি পক্ষপাতিত্বপূর্ণ দৃষ্টিকোণ থেকে। যারা আল্লাহ-তে বিশ্বাস করে না বা একাধিক প্রভুতে বিশ্বাস করে তাদেরকে অকৃতজ্ঞ বলা হচ্ছে এই বলে যে আল্লাহ সব সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সেভাবে স্মরণ করা হচ্ছে না বলে অকৃতজ্ঞতা করা হচ্ছে।

সাধারণ জ্ঞান বলে, সে হিসেবে যারা বহুঈশ্বরবাদে বিশ্বাসী তারা পূজা করে নানা রকম আয়োজন করে; তাদের ধারণা অনুযায়ী তারা ঈশ্বরদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছেন। স্মরণ করাই হয় যদি কৃতজ্ঞতা তবে তারা অকৃতজ্ঞ নয়।

আমি বহুঈশ্বরবাদের পক্ষপাতি নই; কিন্তু তাদের প্রসঙ্গ এ কারণে টানি যেন কুরআনে সবচেয়ে বেশী নির্যাতিত এই সম্প্রদায়ের প্রতি কিছুটা সুবিচার করা হয়। সবার নিজেদের আলাদা রীতিনীতি আছে যেমনি আছে ইসলামী আল্লাহ কর্তৃক। ইসলামী আল্লাহ বললাম এ কারণে যে যতই পড়ছি দেখছি কুরআনে প্রভুর বা আল্লাহর যে ধারণা বা রুপ দেয়া হয়েছে তা যেন অনেকটা ভিন্ন। অন্য ধর্মের প্রভুদের সাথে যায় না। এবং একটু পরপর বিভিন্ন আয়াতে তিনি সেটা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন।

১৩.

“অতএব আপনি কাফেরদের আনুগত্য করবেন না এবং তাদের সাথে এর সাহায্যে কঠোর সংগ্রাম করুন।” — সূরা: ২৫ (আল-ফুরকান, মক্কা); আয়াত: ৫২

ইংরেজী,

“So obey not the disbelievers, but strive against them (by preaching) with the utmost endeavour, with it (the Qur’ân)”

১৪.

““যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলে বিশ্বাস করে না, আমি সেসব কাফেরের জন্যে জ্বলন্ত অগ্নি প্রস্তুত রেখেছি।“ — সূরা: ৪৮ (আল-ফাতহ, মদীনা); আয়াত: ১৩

ইংরেজী,

“And whosoever does not believe in Allâh and His Messenger (Muhammad SAW), then verily, We have prepared for the disbelievers a blazing Fire.”

১৫.

“অতঃপর যখন তোমরা কাফেরদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হও, তখন তাদের গর্দানে মার, অবশেষে যখন তাদেরকে পূর্ণরূপে পরাভূত কর তখন তাদেরকে শক্ত করে বেঁধে ফেল। অতঃপর হয় তাদের প্রতি অনুগ্রহ কর, না হয় তাদের নিকট হতে মুক্তিপণ লও। তোমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে যে পর্যন্ত না শত্রুপক্ষ অস্ত্র সমর্পণ করবে! একথা শুনলে। আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তোমাদের কতককে কতকের দ্বারা পরীক্ষা করতে চান। যারা আল্লাহ্র পথে শহীদ হয়, আল্লাহ্ কখনই তাদের কর্ম বিনষ্ট করবেন না।” — সূরা: ৪৭ (মুহাম্মদ, মদীনা); আয়াত: ৪

ইংরেজী,

“So, when you meet (in fight Jihâd in Allâh’s Cause), those who disbelieve smite at their necks till when you have killed and wounded many of them, then bind a bond firmly (on them, i.e. take them as captives). Thereafter (is the time) either for generosity (i.e. free them without ransom), or ransom (according to what benefits Islâm), until the war lays down its burden. Thus [you are ordered by Allâh to continue in carrying out Jihâd against the disbelievers till they embrace Islâm (i.e. are saved from the punishment in the Hell-fire) or at least come under your protection], but if it had been Allâh’s Will, He Himself could certainly have punished them (without you). But (He lets you fight), in order to test you, some with others. But those who are killed in the Way of Allâh, He will never let their deeds be lost,”

আল্লাহ তাআলা অপরাধ করে নিজ হাতে ময়লা লাগাতে চান না। অপরাধটা তিনি অনুসারীদের দিয়েই করাতে চান। এতই যদি ক্ষোভ এই অপরাধীদের তিনি জন্ম না দিলেই পারতেন। নইলে মনুষ্যতুল্য জিঘাংসাপূর্ণ অনৈশ্বরিক নির্দেশ দেয়ার জন্য তিনি পাপী; হাত ময়লা না করা ‘Smooth criminal’

১৬.

“যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলে বিশ্বাস করে না, আমি সেসব কাফেরের জন্যে জ্বলন্ত অগ্নি প্রস্তুত রেখেছি।“ — সূরা: ৪৮ (আল-ফাতহ, মদীনা); আয়াত: ১৩

ইংরেজী,

“And whosoever does not believe in Allâh and His Messenger (Muhammad SAW), then verily, We have prepared for the disbelievers a blazing Fire .”

এই ভাবে আয়াত উল্লেখ করতে গেলে কুরআনের বেশীরভাগ অংশই উঠে আসবে। তাই আপাতত এখানেই ক্ষান্তি দেয়া সমিচীন। পরবর্তীতে সময় পেলে আরো অনেক বৈচিত্র্যময় আয়াত উল্লেখ করা হবে। এতে বাঙালী কুরআন গবেষকদের সুবিধেই হবে।

অবিশ্বাসীদের কুরআনে সবসময় নেতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে উল্লেখ করা হয়। তাদের কোন দিকই ইতিবাচক নয়? বিধর্মী মানবসেবী, সভ্যতার উন্নয়নকামী বিজ্ঞানী এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞের তো অভাব নেই। তারা সব নেতিবাচক হলে অনুরূপ নেতিবাচকতার দোষ দেখি না।

কোন কোন মুসলিম বলবেন শুধু মাত্র তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বলা হয়েছে যারা ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সূচনা করে। কয়েকটা আয়াতের ক্ষেত্রে এটা সেভাবে মেনে নেয়া যেতে পারে অন্যগুলোতে নয়। কুরআন যিনি পড়েছেন তিনি জানেন, অবিশ্বাসীদের প্রতি কোমলতা নয়, কাঠিন্যই প্রদর্শন করা হয়েছে। তাদেরকে পাপের কারখানা হিসেবেই প্রদর্শন করা হয়েছে। যিনি কুরআন রচনা করেছেন তিনি যে সত্যিই তাদের গর্দান নিতে চান সেটা বুঝতে তৃতীয় নয়নের দরকার নেই।

বহুঈশ্বরবাদী এবং অন্য বিশ্বাসে বিশ্বাসীদের জন্য কুরআনে রয়েছে কঠিন শাস্তির উল্লেখ। শুধু গুটি কয়েক সূরায় বা আয়াতে নয়। প্রায় প্রতিটি সূরায় এ ব্যপারে স্পষ্ট উল্লেখ বা ইঙ্গিত আছে। অবাক হতে হয়। এত ঘৃণা কেন ছড়ানো হল অন্যদের প্রতি?

মানবজাতির নৈতিক সংশোধনের জন্য যদি ইসলাম ধর্ম (অন্য ধর্মকে সমর্থন করছি না, যে ধর্ম সম্পর্কে ভাল জানি সে ধর্ম সম্পর্কে মতামদ দেয়াই উত্তম) এসেছে বলা হয় তবে বোধ হয় বাড়াবাড়ি হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে বলা যেতে পারে নীতি ঠিক করতে গিয়ে বরঞ্চ আরো নষ্টই করে ফেলা হয়েছে। ‘Stephen Weinberg’-এর সেই বিখ্যাত উক্তির কথা মনে পড়ে যায়:

“Religion is an insult to human dignity. Without it, you’d have good people doing good things and evil people doing evil things, but for good people to do evil things, it takes religion.”

চিন্তা করুন মায়ানমার জান্তা বা অনুরূপ সেনাশাসিত দেশ এবং সেখানকার হৃত মানবাধিকারের কথা। সবাই চান যে অং সান সুকি মুক্তি পান কিন্তু তিনি মুক্তি পাবেন না কারণ প্রশাসন চায় না। কিন্তু কারো মত সঠিক নয়, প্রশাসনের নিজের ছাড়া। কেউ কোন দ্বিমত পোষণ করবে? কার আছে স্পর্ধা? তাদের জন্য আছে জেল এবং নরকতুল্য শাস্তি। সুতরাং দ্বিমত পোষণকারীদের জন্য স্বৈরশাসিত প্রশাসন রেখেছে কঠোর শাস্তির ব্যবস্হা। তেমনিভাবে ইসলাম যেন কারো মতামতের তোয়াক্কা না করে অবিশ্বাসী সবাইকে নরকে পাঠাতে চায়। জেলের পরিবর্তে আছে নরক। ইসলামের সঙ্গে এই রকম স্বৈরশাসিত প্রশাসনিক ব্যবস্হার আছে গভীর মিল। ব্যপারটা কতোটা যৌক্তিক সেটা আপনারা বিবেচনা করুন।

কল্পিত নরক নিয়ে সমস্যা নেই যেখানে অনেকেই তাদের কল্পনাকে নরক পর্যন্ত বিস্তৃত করেন না। সমস্যা হচ্ছে অন্য বিশ্বাসীদের প্রতি ঘৃণা এবং নেতিবাচক সব ধ্যানধারণা নিয়ে। এতটা ঘৃণা, হিংসা-বিদ্বেষ এবং বিভাজন সৃষ্টির পর পরিপূর্ণভাবে ইসলামের কোন সমর্থক অন্য ধর্মালম্বীদের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ এবং শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারেন না।

ইসলাম/কুরআন মানবজাতিকে বিভাজিত করে। বিভাজন মানে শান্তিপূর্ণ কোন বিভাজন নয়। এই বিভাজন মানে ধ্বংসাত্মক, তুমুল সংঘর্ষপূর্ণ বিভাজন। বর্তমান বাস্তবতার দিকে নজর রাখুন। ইতিহাস দেখুন। দৈনিক সংবাদপত্রিকায় প্রতিদিন কিছু সংবাদ পাবেন র‌্যাডিক্যাল ইসলাম এবং তার অনুসারীদের। এমনিতেই পোস্ট বড় হয়ে গেছে। সম্মিলিতভাবে ধর্ম সমর্থিত কিছু অপরাধের তালিকা তুলে ধরব আরেকদিন।

** ইউসুফ আলির অনুবাদ অনুসরণ করা হয়েছে।
১. http://en.wikipedia.org/wiki/Kafir